• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ধুনটে যমজ তিন ভাইয়ের কপালে চিন্তার ভাজ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২০  

পৃথিবীতে এসেছে একসঙ্গে, বেড়ে উঠাও একসঙ্গে। পড়াশোনাও একসঙ্গে। মেধায়ও তিন জন শেয়ানে শেয়ানে। চেহারায় তিন জনের যেমন মিল, তেমনি শৈশব থেকে সব শ্রেণীতে সাফল্যেও রয়েছে অন্যরকম এক মিল। তারা হলো বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি গ্রামের গোলাম মোস্তফা ও আরজিনা বেগম দম্পতির যমজ তিন সন্তান শাফিউল হাসান, মাফিউল হাসান ও রাফিউল হাসান। 

 

এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে একসঙ্গে বেড়ে উঠা যমজ এই তিন ভাই। লেখাপড়া শেষ করে ভবিষ্যতে তারা মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে চায়। কিন্তু সেই স্বপ্নে একমাত্র বাধা হয়ে দাড়িয়েছে আগামী দিনের পড়াশোনার খরচ। তাই বর্তমানে সাফল্যে এলেও ভবিষ্যতের স্বপ্ন পুরণে তাদের শংকা কাটছে না।  

 

জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১০ জানুয়ারি আরজিনা বেগম একই সঙ্গে জন্ম দেন তিন যমজ পুত্রসন্তান। এর আগে তার গর্ভে জন্ম নেয় এক ছেলে ও এক মেয়ে। পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। ২০০৯ সালের ১২ অক্টোবর আরজিনার স্বামী স্কুলশিক্ষক গোলাম মোস্তফা হমারা যান। তখন যমজ ওই তিন সন্তান শিশু শ্রেণির ছাত্র।

 

বাবার অবর্তমানে সন্তানেরা হারিয়ে ফেলে তাদের চলার পথ। কিন্তু স্বশিক্ষিত মা আরজিনা বেগম মনোবল হারাননি। অভাবের সংসারে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। পাঁচ সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে স্বামীর সব সম্পদ অন্যের কাছে বন্ধক রাখেন আরজিনা। এরই মধ্যে তার কেটে যায় স্বামীহারা জীবনের প্রায় ১১টি বছর। 

 

একপর্যায়ে পরিবারের বড় ছেলে মাহমুদ হাসান এইচএসসি পাস করে অভাবের সংসারের হাল ধরতে ধারদেনা করে পাড়ি জমান বিদেশে। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। ফিরে আসেন দেশে। জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে এখন তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। আর মেয়ে মৌসুমী খাতুন কাহালুর একটি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এমন টানাপোড়েনের মধ্যে যমজ তিন ভাই আঁধার মাড়িয়ে আলো ছড়িয়েছে। তারা একসঙ্গে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

 

যমজ তিন সন্তানের এমন সাফল্যে আরজিনা বেগম বলেন, স্বামীকে হারিয়ে সংসার ও পাঁচ সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে অনেক দুঃখ–কষ্ট সইতে হয়েছে। অভাবের তাড়নায় স্বামীর রেখে যাওয়া সব সম্পদ বন্ধক রাখতে হয়েছে। সংসারের চাপে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে বড় ছেলে। মেয়েটার পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারছি না। এর মধ্যে আবার যমজ তিন সন্তানের কলেজে ভর্তি ও লেখাপড়ার খরচ। কোনো ক‚লকিনারা খুঁজে পাচ্ছি না।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল