• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল টাঙ্গাইলের ২০ একর শালবন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২৪  

প্রতিবছর চৈত্র-বৈশাখ মাস এলেই যেন টাঙ্গাইলের সখীপুরের শাল-গজারির বনের ওপর দুর্বৃত্তের কুদৃষ্টি পড়ে। যার জেরে আগুনে পোড়ে বনটি। বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া যেখানে প্রবেশ নিষেধ, সেখানে প্রতিবছর ঘটছে আগুন লাগার ঘটনা। এ মৌসুমে বনে আগুন দেওয়ার কারণে পুড়ে গেছে ছোট গজারিগাছ, ঝোপঝাড়, পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ। বিনষ্ট হয়েছে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। বন পোড়ানোর কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশও। বিলুপ্ত হচ্ছে বন্যপ্রাণী, কীটপতঙ্গ ও পাখি। এসব কারণে প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। সরকারি মুজিব কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুনির্মল চন্দ্র বসু বলেন, বনে আগুন দেওয়ার ফলে যেভাবে বন্য পশু-পাখি ও কীটপতঙ্গ ধ্বংস হচ্ছে তাতে পরিবেশগত বিপর্যয় অনিবার্য। গত এক মাসে সখীপুরের বনাঞ্চলে অন্তত ১৫টি জায়গায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ বুধবার বিকেলে উপজেলার বহেড়াতৈল বিটের আওতায় ছাতিয়াচালা সাইনবোর্ড এলাকায় একটি গজারি বনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় পাঁচ একর গজারির বন আগুনে পুড়ে যায়। গজারিয়া বিট কার্যালয়ের আওতাধীন অন্তত ৪টি স্থানে শালবনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। কালিয়ানপাড়া, গজারিয়া, কীর্ত্তনখোলা ও বংকী এলাকায় শাল-গজারির বনে আগুনের ঘটনায় প্রায় ৮ থেকে ১০ একর বন পুড়ে যায়। নলুয়া বিটের আওতাধীন দেওদিঘি বাজারের পশ্চিম পাশে দুটি গজারির বন, নলুয়া বিট কার্যালয়ের দক্ষিণ দিকে ৩০০ গজ দূরে একটি, ঘেচুয়া এলাকায় দুটি ও আমের চারা এলাকায় একটি বনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। গজারিয়া বিটে সখীপুর-সিডস্টোর সড়কের কীর্ত্তনখোলা এলাকায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একটি বনে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে অন্তত ৪টি শাল-গজারির বন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়রা জানান, বনের কাছাকাছি নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস বেশি। তারা লাকড়ি সংগ্রহের উদ্দেশে অনেক সময় গজারি বনে আগুন দিয়ে থাকেন। কেউ বনের জমি দখলের উদ্দেশে বনে আগুন দেয়। বনের ভেতরের সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরাও অনেক সময় বনে আগুন দেয়। স্থানীয় বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সখীপুরে ৪টি রেঞ্জের আওতায় ১৩টি বিট কার্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার একর জমিতে শাল-গজারির বন রয়েছে। ফাল্গুন-চৈত্র ও বৈশাখ মাসে প্রকৃতির নিয়মে শাল-গজারির পাতা ঝরে পড়ে। বনাঞ্চলের আশপাশের বাসিন্দারা জমি দখল ও লাকড়ি সংগ্রহের উদ্দেশে রাতে আবার কখনো দিনে বনে আগুন দেন। ঝরাপাতাগুলো শুকনো থাকায় মুহূর্তেই বনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চলতি বছর বনে দেওয়া আগুনে এরই মধ্যে অন্তত ২০ একর বন পুড়ে গেছে বলেও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে নলুয়া বিট কর্মকর্তা সাফেরুজ্জামান বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে কয়েকটি গজারির বনে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আমরা খুবই সতর্ক অবস্থায় আছি। এতে গতবারের থেকে এবার বনে আগুনের ঘটনা কমেছে। আমার কার্যালয়ে তিনজন স্টাফ রয়েছেন। চার-পাঁচ হাজার একর জমির বন দেখভাল করতে গিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল