• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

উল্লাপাড়ায় গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক সবুজ ঘাস চাষে আগ্রহী

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২২  

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে গরু চাষি ও খামারিরা। গো-খাদ্য ছোলা, ভুট্রা, ভূষি, ফিড ও খরের দাম বেশি হওয়ায় এ সমস্ত খাবারের পরিমান কমিয়ে দিয়ে কৃষক ঘাস চাষে বর্তমানে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কৃষক ও খামারিরা গবাদি পশুর গো- খাদ্য হিসেবে ঘাসের পরিমান বাড়িয়ে দিয়ে গরু লালন পালন শুরু করেছে। এ জন্য ফসল কম হয় এমন অনাবাদি জমি, বাড়ির আঙ্গিনা, পতিত জায়গা ও সড়কের দুই ধারে ব্যাপকভাবে  ঘাস চাষ শুরু করেছেন এলাকার অধিকাংশ কৃষক। অনেক চাষিই নিজের খামারের চাহিদা পূরণ করে প্রতি আটি ঘাস বাজারে ২০ টাকা দরে বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। অনেকেই গবাদিপশুর জন্য বাড়তি খাবার হিসাবে কাঁচা ঘাস কিনে খাওয়াচ্ছেন। এতে দুধ দেওয়া গরুর দুধের পরিমাণ বেঁড়ে গেছে। 

জানা যায়, অনেক কৃষক ফসল ভালো হয় না এমন জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় খামারিরা বাজারের গো-খাদ্যের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দিয়ে তাই ঘাসের ওপর ঝুঁকে পড়ছে। ধানের জমিতে ধান বেশি উৎপাদনের লক্ষ্যে নিয়মিত সেচ দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষক। ধান ও খড় দুটো বেশি উৎপাদন হলে কৃষক অধিক লাভবান হবে।  

উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামের মৃত ময়েন মন্ডলের ছেলে টিপু বিশ্বাস জানান, আমরা দরিদ্র কৃষক। কৃষি কাজের পাশাপাশি ৩টি গাভীন ও ৩টি ষাড় গরু পালন করছি। গাভীনের দুধ বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করি এবং কোরবানির ঈদে সাঁড় গরুগুলি বিক্রি করে লাভবান হবো এই লক্ষ্য নিয়ে ৩ টি ষাড় গরু পালন করছি। কিন্তু দ্রব্য মুল্যের সাথে তাল মিলিয়ে গো-খাদ্য ও খড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরু পালন করতে হাপিয়ে উঠেছি। বাধ্য হয়ে এ বছর ১ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করেছি। এতে কিটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না বলে লাভের পরিমাণ বেশি হয়। নিজের পালিত গরুর চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ঘাষ বাজারে বিক্রি করে পোষাতে পারব বলে আশা করছি।

উল্লাপাড়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ৪ টি গাভীন ও ৩ টি ষাড় গরু পালন করেছি। গো-খাদ্য ও খড়ের দাম বৃদ্ধির কারনে ঘাষ চাষ করেছি। এতে বিগত বছরের মতো গো- খাদ্য ও খড়ের উপর নির্ভর করতে হবে না। বড় সুবিধা হলো ধান চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে যে ভাবে সহযোগিতা পাচ্ছি ঘাস চাষেও একই রকম সুবিধা পাচ্ছি।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ  কর্মকর্তা মোঃ আজমল হোসেন বলেন, গো-খাদ্যের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকের পতিত জায়গা, অনাবাদি জমি ও বাড়ির আঙিনায় ও সড়কের ধারে উন্নত জাতের ঘাস চাষের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। এতে কৃষক ঘাস চাষে উৎসাহিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোর্শেদ উদ্দিন জানান, উপজেলার প্রায় খামারী দুধ দহন ও বিক্রির জন্য এসমস্ত গরু পালন করে। যে পরিমান গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে খামারিদের লোকসান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিকল্প হিসাবে খামারিদের অনাবাদি জমি, পতিত জায়গায় উন্নত জাতের ঘাস চাষ করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। কাঁচা ঘাস খেলে গরু দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। অল্প দিনে গরু সুঠাম দেহের অধিকারী হয়। উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে কৃষক সফলতা পেলে গো-খাদ্যের উপর নির্ভরশীলতা কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ওই কর্মকর্তা।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল