• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির সুবর্ণ জয়ন্তী আজ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির সুবর্ণ জয়ন্তী আজ

‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির সুবর্ণ জয়ন্তী আজ

বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান আমলের শুরু থেকেই ছিলেন তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে। তাকে দমাতে বার বার কারাগারে পাঠায় পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী। জীবনের ৪ হাজার ৬৮২ দিন পাকিস্তানের কারাগারে অতিবাহিত করেছেন জন মানুষের প্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনে অনেক উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন তিনি। যার মধ্যে স্বমহিমায় যে উপাধিটি জ্বলজ্বল করছে সেটি হলো ‘বঙ্গবন্ধু’। আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর আগের আজকের এই দিনে ‘বঙ্গবন্ধু’ নামে ভূষিত হন শেখ মুজিব।

১৯৬৮ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার অভিযোগ আনে, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন রাজনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং গুটিকয়েক সাধারণ সৈনিক সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ববাংলাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। দায়ের করা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। এই মিথ্যে মামলায় শেখ মুজিবুর রহমানসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করে পাকিস্তানী সরকার। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে এমন মিথ্যে মামলায় সাজা দেয়ার পরিকল্পনা টের পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি। স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলে।

১৯৬৯ সালের ১৭ জানুয়ারি সারাদেশের রাজপথ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে। ২০ জানুয়ারি প্রাণ দেন শহীদ আসাদ। তার রক্তাক্ত জামা হাতে নিয়ে শেখ মুজিবকে ‍মুক্ত করার শপথ নেয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। ২৪ জানুয়ারি মতিউর-মকবুল-রুস্তম-আলমগীরের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি পল্টন ময়দানের জনসভা থেকে শপথ নেয়া হয় শেখ মুজিব ও বাংলাদেশকে মুক্ত করার। ১৫ ফেব্রুয়ারি সার্জেন্ট জহুরুল হক এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি নিরাপত্তা বাহিনীর বুলেটে প্রাণ দেন ড. শামসুজ্জোহা। কিন্তু তাতে দমেনি ছাত্ররা। বরং সেটা অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সান্ধ্য আইন জারী করে আইয়ুব সরকার। কিন্তু সে আইন ভেঙে রাস্তায় নেমে পড়ে আপামর জনগণ। ঢাকাকে মিছিল আর মশালের নগরে পরিণত করে তারা। সারাদেশ গণবিস্ফোরণে প্রকম্পিত হয়। কেঁপে ওঠে আইয়ুব খানের মসনদ।

শেষ পর্যন্ত গণআন্দোলনের মুখে নতিস্বীকার করেন আইয়ুব খান। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবসহ অভিযুক্ত সব আসামিকে মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান শেখ মুজিবসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ৩৫ আসামী। পরেরদিন, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৯ তারিখে রাজধানীর রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল জনসভায় শেখ মুজিবর রহমানসহ মামলায় অভিযুক্তদের এক গণসংবর্ধনা দেয়া হয়। দশ লাখেরও বেশি মানুষের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হয় রেসকোর্স ময়দান। গণসংবর্ধনায় তৎকালীন ডাকসু ভিপি এবং সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মাত্র ২৫ বছর বয়সের তরুণ তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’উপাধিতে ভূষিত করেন। এরপর থেকে আপামর জনগণের কাছে সবচেয়ে প্রিয় নাম হয়ে ওঠে ‘বঙ্গবন্ধু’।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল