• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

গাজীপুরে নদীর তীরে লাল-সবুজের মেলা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

দূর থেকে যদি দেখেন, তবে আপনার কাছে মনে হবে সবুজের বুকে লুকিয়ে আছে টুকটুকে লাল। কিন্তু কাছে যেতেই দেখতে পাবেন স্ট্রবেরির বাগান। বাগানজুড়ে থরে থরে স্ট্রবেরি।

 

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউপির কুড়িয়াদী গ্রামে শীতলক্ষ্যার পাড়ে এ দৃশ্য কৃষকদের বুকে নতুন করে আশা জাগাচ্ছে। শীতপ্রধান দেশের ফল হিসেবে স্ট্রবেরির প্রচলন থাকলেও প্রান্তিক কৃষকের কল্যাণে বাংলাদেশেও ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে এ ফল।

 

এ বছর শ্রীপুর ও কাপাসিয়া উপজেলার শীতলক্ষ্যার তীরে স্ট্রবেরির ব্যাপক ফলন হয়েছে। ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু করেছেন কয়েকজন কৃষক।

 

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, স্ট্রবেরি ফলের রস, জ্যাম, আইসক্রিম, মিল্ক শেকসহ শিল্পায়িত খাদ্য তৈরিতে এর সুগন্ধ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ১৭৪০ সালে ফ্রান্সে প্রথম স্ট্রবেরির চাষ শুরু হয়। পরবর্তীতে চিলি, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে এ চাষ।

 

কাপাসিয়ার সিংহশ্রী ইউপির কুড়িয়াদী গ্রাম শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে শীতকালীন ফসলের চাষ করেন কয়েকজন কৃষক। কিন্তু বছরের বাকি সময় পতিত থাকে ওই জমি। কৃষিকাজে ভিন্নতা আনতে চলতি মৌসুমে শ্রীপুর উপজেলার মৌমিতা ফ্লাওয়ার্সের মালিক দেলোয়ার হোসেনের পরামর্শে কয়েকজন কৃষক স্ট্রবেরির চাষ করেন।

 

শ্রীপুর উপজেলার স্ট্রবেরি চাষি তোফায়েল আহমেদ বিদ্যুৎ জানান, বর্ষায় জমিগুলো পানিতে ডুবে যায়। পরে পানি নামলে পলিমাটি জমে কৃষিজমিগুলো বেশ উর্বর হয়ে থাকে। এতে যেকোনো ফসলের চাষ করলেই সফলতা আসে।

 

তিনি আরো জানান, দেলোয়ারের মালিকানাধীন মৌমিতা ফ্লাওয়ারস থেকে এক হাজার স্ট্রবেরির চারা কেনেন তিনি। প্রতিটি চারার দাম ছিল ৩০ টাকা। কয়েক মাস পরিচর্যার পর এখন ফল পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি স্ট্রবেরি সাতশ-আটশ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন তিনি।

 

আব্দুর রাজ্জাক প্রধান কাজি নামে আরেকজন চাষি জানান, তিনি সাত হাজার স্ট্রবেরির চারা রোপণ করেছেন। এছাড়া হুমায়ুন কবির জাপানি নামে এক যুবক রোপণ করেছেন ১৩ হাজার চারা।

 

কাপাসিয়ার কুড়িয়াদী গ্রামের স্ট্রবেরি চাষি হুমায়ুন কবির জাপানি বলেন, অনেকেই অনেকভাবে টাকা-পয়সা নষ্ট করেন। গত মৌসুমে শিলাবৃষ্টিতে পেঁপের বাগান নষ্ট হওয়ায় অনেক লোকসানের মুখোমুখি হয়েছি। তাই এবার কয়েকজন মিলে স্ট্রবেরি চাষে ঝুঁকি নিয়েও ভালো ফলন পেয়েছি। আমাদের দেখাদেখি অনেকেই স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মাহবুব আলম বলেন, স্ট্রবেরিতে অনেক পুষ্টি রয়েছে। এ ফল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রোগমুক্তিতেও সহায়তা করে। গাজীপুরে বিক্ষিপ্তভাবে স্ট্রবেরির চাষ হওয়ায় এর পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারিনি। শখে অনেকে বাসা-বাড়িতে স্ট্রবেরির চাষ করলেও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। এ চাষ লাভজনক বিধায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল