• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

আশির দশকের স্মরণিকা ‘ফাগুনে স্ফুলিঙ্গ’র কারিগর আব্দুর রাজ্জাক

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২১  

সাহিত্য, শিল্প সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশের ছবি  বুকের মাঝে লালন করে তা অর্জন এবং পরবর্তীতে রক্ষার জন্যে বুকের তাজা রক্তর তপ্ত স্রোতে বার বারই রঞ্জিত হয়েছে রাজপথ। স্বাধীকার চেতা বাঙালির তাজা রক্তের স্বাদ বহুবার আস্বাদন করেছে বিরুদ্ধ শক্তির লু হাওয়া।

 

পলাশী থেকে সেই চেতনার পথে পথে কাঁটা ছড়ানো হয়েছে অনেক বুদ্ধি করে। তাদের সেই শঠতার পথে অনেক ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, সালাম, রফিক ,শফিক, বরকত, জব্বারদের রক্ত ফুটিয়েছে নানা ফুল। 

 

ওরা  ভেবেছিলো রক্তের লালে স্লান হয়ে যাবে স্বাধীকার ও স্বাধীনতার লালিত স্বপ্ন। কিন্তু  পদ্মা-ভাগীরথীর সেই রক্তের স্রোত, এনফিল্ড রাইফেল, বাঙালির ভাষায় আঘাত, বাংলার জমিনে  আগুনের লেলিহান শিখা কিছুই আটকাতে পারেনি চেতনার চেনা পথে চলা ফাগুনের স্ফূলিঙ্গ কিংবা স্বাধীনতার স্বপ্নকে। তাইতো বাংলা ভাষার উপর পাকিদের বর্বর বেয়নেট , রাইফেলে সালাম, জব্বারদের জব্বর পরীক্ষা নিলেও বার বারই বাঙালি  শতভাগ নম্বর পেয়েছে। আর সেই বায়ান্নর স্বাধীকার চেতনাই পরবর্তীতে বাঙালিকে স্বাধীনতার লাল সূর্য্যটিাকে নিজের করে নিতে পথ দেখিয়েছে। নয় মাসের সেই পরীক্ষায়ও বাঙালীই বিজয়ী হয়েছে।  মহাপ্রাণ বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আর প্রখর প্রজ্ঞা সেই যুগেও বাঙালীকে সঠিক পথ দেখিয়েছে।  

 

 স্বাধীনতা পরবর্তী সেই পথেও মিলেছে এদেশীয় পাকি প্রেতাত্মাদের লম্ফঝম্ফ। ১৭৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট তাদের নীতিহীন কর্মকান্ডে এদেশ আবারো স্তব্ধ, হতবাক। কিন্তু থেমে যায়নি সৃজনশীল চিন্তা চেতনার পতাকাবহীদের পথচলা। ওরা যত আঘাত করেছে ততটাই সফলতা একের পর এক এসে ধরা দিয়েছে এদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে। দেশ আজ সব হতাশা কেটে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। 

 বিশ্বের উন্নয়নশীল ৮ দেশের নেতাও হয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একের পর এক সফলতার শৈল্পিক পথে সাতরং ছড়িয়ে যাচ্ছে এদেশের অর্থনীতি, সাহিত্য, শিল্প আর সংস্কৃতি। সেই সাতরঙে রাঙিয়ে স্বীয় ব্যক্তিত্বের অন্তরালে নিজেকে প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃজনশীল মানুষেরা লুফে নেবে এটাই স্বাভাবিক। সে পথেই আশির দশকে ‘ফাগুনে স্ফুলিঙ্গ’ ছড়িয়েছিলেন কাজিপুর মনসুর আলী কলেজের তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক। বর্তমানে তিনি মিনিস্ট্র অব পাওয়ার. এনার্জি এন্ড মিনারেল রিসোর্সেস, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড এর ডেপুটি ডিরেক্টর।  

১৯৮১ সালের অমর একুশে স্মরণে কাজিপুর থানা আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের  সৌজন্যে সংকলিত হয়েছিলো ‘ ফাগুনে স্ফুলিঙ্গ।’ তখনকার যুবলীগ নেতা  পরেশ শর্মা  ও ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক এই সংকলনটি  প্রকাশ করেন। সেই সময়ে তাদের যোগ্য সহযোগিতা দিয়েছেন স্বপন, লেবু, নান্নু, গোলাম, আশরাফ, আমজাদ, লাল, জয়ন্ত, আতাহার, মতি, বাবলু, কায়ছার, দীলিপ, গোলাম রব্বানী, আমির ,মনসুর ও সাইফুল। 

 

 সেই সময়ে যখন  বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারীরাই দেশ চালাচ্ছে, সেই বিরুদ্ধ পরিবেশে ছাত্রলীগ করা এবং সেই ব্যানারে এরকম একটি সংকলন প্রকাশ করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং স্পর্ধিত প্রয়াস ছিলো, এখনো যারা সেই সময়ের নেতা কর্মিরা আছেন তারা বুঝবেন। তাদের মার্জিত সাহিত্যিক রুচি নিঃসন্দেহে ছিলো আদর্শস্থানীয়। 

স্মরণিকাটির ‘দু’টি কথা’য় আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘ ব্যক্তির পূর্ণ মননশীলতার তখনই সম্যক বু্যূৎপত্তি ঘটে, যখন সে নিজেই বুঝতে পারে নিজের মহাত্মা।’ আব্দুর রাজ্জাকের সৃজনশীলতার পরিচয় এখানেই। 

 

 প্রেক্ষাপট বর্ণনায় তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘ ১৯৫২ সালে ব্যক্তিত্বের এমনি একটা প্রশ্ন জেগেছিলো বাঙালীর জাতীয় জীবনে। তারা তাদের ঐতিহ্যের উপর ছিল দৃঢ় প্রত্যয়ী। তারা স্পষ্টতই বুঝতে পেরেছিলো ‘ মাতৃভাষার মাধ্যম ব্যতিরেকে তাদের জাতীয় সংহতির উন্নতি সম্ভব নয়।’ তাই তারা প্রতিবাদ করেছিলো বাংলা ভাষার জন্য। কিন্তু আজকে ১৯৮১ ’র একুশেতে আমরা ঠিক বাংলা ভাষাতেই কথা বলছি। অথচ বলতে পারল না শুধু ওরা, ঝরে গিয়ে যারা ফুটাল আমাদের মুখের ভাষা।’

 

 স্মরণিকাটিতে লিখিয়ে ছিলেন মোট ১৫ জন।  আব্দুর রাজ্জাক লিখেছেন একটি কবিতা নাম ‘ আটই ফাল্গুন।’ এছাড়া কবিতা রয়েছে পরেশ শর্মার ‘স্মৃতির সুরভী’, আশরাফুল আলমের ‘একুশেতে’, সাইফুল ইসলাম পলাশীর ‘উপহার’, এসএম আব্দুল মতিনের ‘অমর একুশ’, আব্দুল লতিফের ‘রক্তাভিলাষ’, আনোয়ার হোসেন নান্নুর ‘স্মৃতির বেদনা’, মনসুর রহমানের ‘স্মৃতির মিনার’, মোছাঃ হোসনে আরার ‘একুশে স্মরণে’, স.ম আহসান হাবিবের ‘ প্রতিবাদ, এসএম জয়নুল আবেদীনের ‘ একুশ আবার এল দ্বারে, ’ নাসির জাহানের ‘ লাল সালাম’, আমজাদ হোসেন চিশতির ‘কবরের কান্না’ দেবেন্দ্রনাথ শর্মার ‘ রক্তিম বাংলা’ এবং এসএম মোস্তফার ‘ শহিদী মাগফেরাত’। 

 মোট ১৫ টি কবিতার ক্ষুদ্র এই স্মরণিকাটির সম্পাদকীয় লিখেছিলেন স. ম হাবিব। তিনি উল্লেখ করেছেন ১৯৪৭ থেকে আশির দশকের  ইতিবৃত্ত। লিখেছেন, ‘ ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান সৃষ্টির পর পরই পাকিস্তানী শাসক-চক্রের মনে দ্বি-জাতিত্ববোধ সৃষ্টি হয়েছিলো।... ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের জাতির জনক কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পল্টন ময়দানে স্বদর্পে ঘোষণা করলেন যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। জিন্নাহর এই উক্তির মাধ্যমে দ্বি জাতিত্ববোধের গুমুরটা ফাঁস হয়ে যায়। যার বিস্ফোরণ ঘটলো ১৯৫২ সালে ২১ শে ফেব্রæয়ারিতে।’  এরপর দেশ স্বাধীনের কথা, সে সময়কার প্রেক্ষাপটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সম্পাদকীয়তে। 

 

 স্মরণিকাটি ছাপা হয়েছিলো সিরাজগঞ্জের মোহাম্মদীয়া আর্ট প্রিন্টিং প্রেস এ।  হাতে অক্ষর সাজিয়ে ফর্মা তৈরি করে তারপর ছাপানোর সেই প্রেসে করা এই স্মরণিকাটি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কাজিপুর উপজেলা শাখা তথা কাজিপুর মনসুর আলী মহাবিদ্যালয়ের (যার বর্তমান নাম- কাজিপুর সরকারি মনসুর আলী কলেজ)  প্রথম ছাপানো কোনো স্মরনিকা।  

 

‘ফাগুনে স্ফুলিঙ্গ’ সম্পর্কে কথা হয় এর সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে। তিনি জানিয়েছেন এর পূর্বাপর ইতিহাস।  তখনকার সময়গুলোতে কাজিপুরের অন্যতম বিদ্যাপীঠ কাজিপুর মনসুর আলী মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রিক ছিলো ছাত্র রাজনীতি।  যারা ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, জাসদসহ অন্যান্য দল করতেন সেসব ছাত্রনেতারা এই কলেজেই রাজনীতির ছবক নিয়েছেন। এ সময়ের আ.লীগ নেতা কাজিপুর উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক  বর্তমান গান্ধাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম, কাাজিপুর উপজেলা আ.লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও মাইজবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তালুকদার জাহাঙ্গীর আলম, বর্তমান উপজেলা আ.লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ছাইদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান কাজিপুর পৌর মেয়র আব্দুল হান্নান, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও কাজিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজীসহ অনেকেই রাজনীতির পাঠ শিখেছেন এই মহাবিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে। 

 ১৮৮১ সালে কাজিপুরের আওয়ামলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ছিলেন দলের জন্যে নিবেদিতপ্রাণ। এখনকার মতো নানা বরাদ্দ আর নানা প্রাপ্তির আশায় তারা দলের নেতৃত্ব দেননি।

 তখনকার সময়ের ছাত্ররাজনীতির নেতৃত্ব দেয়া নেতা এবং সাহিত্যপ্রেমী আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন স্মরণিকার  নানা দিক নিয়ে। তিনি বলেন, আমরা যারা সেই সময়ে কলেজের ছাত্রলীগের রাজনীতি করি তারা মিলে বসে সিদ্ধান্ত নিলাম একুশে ফেব্রæয়ারিতে স্মরণিকা বের করবো। শুধু বললেই তো হবে না। এজন্যে লেখার দরকার। আর দরকার অর্থকড়ির। শেষমেশ অনেক কষ্টে লেখা এবং টাকা কিছু জোগাড় করে স্মরণিকা প্রকাশের দায়টা নিজের কাঁধে নিয়ে  পান্ডুলিপি নিজের হাতে তৈরি করলাম। এরপর সিরাজগঞ্জ মোহাম্মাদিয়া আর্ট প্রিন্টিং প্রেসে রওনা দিলাম। কমপক্ষে দশবার ওই প্রেসে যেতে হয়েছে। কোনোদিন লঞ্চে, কোনদিন সাইকেলে চড়ে, আবার পয়সা বাঁচানোর জন্যে কোনদিন ওয়াপদা বাধ ধরে পায়ে হেঁটে সিরাজগঞ্জে গেছি। 

 আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মনে পড়ে সিরাজগঞ্জ থেকে ফিরতে  ওয়াপদা বাধের গরম বালুতে পায়ে ফোস্কা পড়ে গিয়েছিলো। 

 তিনি বলেন, ওই সময়ে যারা কবিতা লেখেন তাদের সেই কবিতা ছাপার অক্ষরে  দেখার ভাগ্য অনেকেরই হতো না।  মফস্বল এক থানা থেকে সেই সুযোগ  খুবই সংকীর্ণ ছিলো।

 ঠিক একুশের আগের দিন রাতে যখন ছাপানো কপিগুলো হাতে পেলাম তখন যে কি আনন্দ হচ্ছিলো তার তুলনা দেবার মতো এখন তেমন আনন্দের কিছু সামনে নেই। যাদের লেখা ছিলো তারা সবাই স্মরণিকাটি হাতে নিয়ে বুকের উপর রেখে ঘুমোতে গেছে। নিজেদের লেখাগুলোই অনেকবার করে পড়েছি। যারা বোঝেন এসব তাদেরকে দেখিয়েছি। 

 পরদিন একুশের ফেব্রæয়ারিতে শহিদ মিনারে ফুল দেই।  সকালে প্রভাত ফেরিতে অংশ নেই। এরপর এর কপি কয়েকটি স্কুলে এবং কলেজে বিলি করি।  

 সেদিনের প্রভাতফেরির ফুল দেয়া হয়েছিলো কাজিপুর থানার কাছে অবস্থিত রাণী দিনমনি স্কুলে তৈরিকৃত শহিদ মিনারে। এই শহিদ মিনার তৈরিরও আছে একটি ইতিহাস।  তখন সব স্কুলে শহিদ মিনার ছিলো না। তো আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম  আরডি স্কুলের শহিদ মিনারের সংস্কার করার। কিন্তু ইট, সিমেন্ট কোথায় পাওয়া যাবে। পরে সেই সময়ের একজন ঠিকাদারকে অনুরোধ করলাম আমাদের এসব দিতে। কিন্তু তিনি আমাদের কথা রাখলেন না। পরে আমি, প্রয়াত সাধু ও শাহিন নামের একজন  গরুর গাড়িতে আনা ওই ঠিকাদারের ইট সিমেন্ট রড নামিয়ে নিয়ে শহিদ মিনারের কাজ করি। পরে এজন্য থানায় গিয়ে শাস্তি হিসেবে দুই হাতে দুই ইট নিয়ে পুরো থানা কম্পাউন্ড একবার ঘুরতে হয়েছে । 

 

এই স্মরণিকায়  কবিতা ছাপা হয়েছিলো বর্তমান কাজিপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ও সমাজকর্মি সাইফুল ইসলাম পলাশীর। কবিতার নাম ‘উপহার’। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ আজ চার দশকের স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। ‘ফাগুনে স্ফুলিঙ্গ’ যখন বের হয় তার আগে লেখা চেয়ে হাতে লেখা পোস্টার দেয়ালে সেঁটেছিলেন খোকা ( আব্দুর রাজ্জাক। ডাক নাম খোকা)  ও কলম নিলেই সুন্দর লেখা বের হয়ে আসতো। অসম্ভব প্রতিভা আর সাহিত্য প্রেমী খোকার বলাতেই আমি ‘উপহার’ নামের কবিতাটি লিখে ওকে দেই। আজ নতুন করে স্মরণিকাটির বিষয়ে আদ্যোপান্ত জেনে আরও ভালো লাগছে। এক মুহূর্তের জন্যে যেন ফিরে  পেলাম সেই চিরচেনা মেঘাই কলেজ ( এটি ডাক নাম ছিলো কলেজের)।  তিনি জানান, ওই সময়ের অধ্যক্ষ রেফাজ উদ্দিন স্যার, উপাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম মন্টু স্যার, রুহুল আমিন স্যার, আব্দুল বাকী স্যার, আব্দুর ্রউফ তরফদার স্যার ও স্যানায় উল্লাহ স্যার ছিলেন সাহিত্য শিল্পের  অনুরাগী এবং উপাসক। তাদের সহযোগিতায় আমরা নাটক করেছি, স্মরণিকা করেছি, বিচিত্রানুষ্ঠান করেছি। এখন সেসব শুধুই স্মৃতি। তবে নতুন করে সেদিনের ইতিহাসকে  চোখের সামনে আনার জন্যে খোকাকে ধন্যবাদ। আর নতুন প্রজন্মকে সেসব দিনের খন্ড চিত্র উপস্থাপন করার জন্যে ¯েœহাষ্পদ কলামিষ্ট, কবি, উপস্থাপক ও শিল্পী  সাংবাদিক আবদুল জলিলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 

 ফাগুনে স্ফুলিঙ্গ’র আরেক কারিগর সেই সময়ের কাজিপুর উপজেলা যুবলীগের নেতা পরেশ শর্মা বলেন, আজ অনেক কথাই মনে পড়ছে। স্মৃতির ভারে মন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে। কি অদম্য সাহস আর মনোবল ও প্রত্যয় নিয়েই না আমি আর খোকা মিলে এই স্মরণিকাটি প্রকাশের কাজ করি। তবে পান্ডুলিপি তৈরি, লেখা সংগ্রহ, সিরাজগঞ্জ যাতায়াতের মতো কাজগুলোর বেশির ভাগই করেছে খোকা। ওর ছিলো সাহিত্যের  প্রতি প্রচন্ড নেশা। দলের জন্যে, সাহিত্যের জন্যে খোকা সব সময়ই দিলখোলা ছিলো। আজ অনেক অনেক বছর পরে সেই স্মৃতির পাতা হাতড়াতে গিয়ে কত নামের কত মুখ ভেসে উঠছে। নতুন করে লেখার ও আলোচনার সুযোগ করে দেয়ায় খোকাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 

 আশির দশকের ‘ফাগুনে স্ফুলিঙ্গ’ কাজিপুরের বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে যদি এতটুকু সাড়া জাগাতে পারে, বর্তমান রাজনীতি করা ছাত্রলীগ, যুবলীগ যদি সেদিনের কর্মকান্ডগুলোকে মনে রেখে সাহিত্য শিল্প আর সংস্কৃতিকে বুকে ধরে ¯েœহ-ভালোবাসাময় রাজনীতির মাঠ সৃষ্টি করতে পারেন তবেই এই প্রচেষ্টা সার্থক বলে জানান আব্দুর রাজ্জাক খোকা।  তিনি বিশ্বাস করেন, অতীতের অদেখা অজানা পথে জানার চেষ্টা এবং সে পথের অগ্রজদের মূল্যায়ণ ও তাদের দেখানো পথেই গড়ে উঠতে পরে পারে নবীন-প্রবীনের  সম্মীলন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল