• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

শিশু সামিয়া অপহরণ-হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন সাব্বির

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

টাঙ্গাইলের সখীপুরে চাঞ্চল্যকর শিশু সামিয়া হত্যাকাণ্ডের ২১ দিন পর মূল আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।

গ্রেফতারকৃত সাব্বির হাসান উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন ওরফে ছুট্টো মিয়ার ছেলে। সাব্বির নিহত সামিয়ার স্কুলের পাশে মুদির দোকান করতেন।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সাব্বির জানিয়েছেন, ঋণ পরিশোধের জন্য তার টাকার খুব প্রয়োজন। এজন্য দেড় মাস আগে সিদ্ধান্ত নেয় অপহরণ করে মুক্তিপণ নেবেন। সেই টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করবেন। অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিজ্ঞতার জন্য ইউটিউবে তিনি বিভিন্ন অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা দেখতেন। সেগুলো দেখে বুঝতে পারেন এমন কারো সন্তানকে অপহরণ করতে হবে, যাদের চাওয়া মাত্রই টাকা দেওয়ার সামর্থ আছে। এছাড়া নিজ এলাকার কাউকে অপহরণের পর মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দিলে পরে বিপদে পড়তে হবে। তাই ইউটিউবে দেখা অভিজ্ঞতা থেকে সিদ্ধান্ত নেন, অপহরণ করে হত্যা করবেন। পরে মুক্তিপণ নেবেন।

জিজ্ঞাসাবাদে সামিয়াকে অপহরণ ও হত্যার বর্ণনা দিয়ে পুলিশকে সাব্বির জানিয়েছেন, সামিয়ার স্কুলের রাস্তায় সাব্বিরের দোকান। তার দোকানের সামনে দিয়েই সামিয়া প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া আসা করতো। ঘটনার আগে সিদ্ধান্ত নেন সামিয়াকেই অপহরণ করবেন। ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার পর প্রাইভেট পড়ে নির্জন পথে একা বাড়ি ফিরছিল সামিয়া। পথে সাব্বির তাকে অপহরণ করে একটি বাঁশঝাড়ের ভেতর নিয়ে যান। সেখানে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করেন। প্রায় ১০ মিনিট গলা চেপে রাখার পরও সামিয়ার মৃত্যু হয় না। তখন একটি দড়ি গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর বাঁশের ঝড়া পাতা দিয়ে সামিয়ার মরদেহ ঢেকে দেন। পরে সাব্বির বাড়ি ফিরে যান। এরপর তার মোবাইলে একটি ইমু একাউন্ট খুলেন। সেই একাউন্ট থেকে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে সামিয়ার বাবার মোবাইলে ভয়েস ক্ষুদেবার্তা পাঠান। ওইদিন রাতে সাব্বির বাঁশঝার থেকে সামিয়ার মরদেহ নিয়ে ধানক্ষেতে কাঁদা মাটি দিয়ে চাপা দিয়ে রাখেন।

ইউটিউব দেখে সাব্বির নিজের কণ্ঠসর পরিবর্তন করার অ্যাপের কথা জানতে পেরেছিলেন। সে অনুযায়ী তিনি মুক্তিপণ চাওয়ার জন্য একটি অ্যাপ ব্যবহার করে নিজের কণ্ঠ পরিবর্তন করে রেকর্ড করেন। এছাড়া এলাকা ছেড়ে গেলে পুলিশ বা স্থানীয় লোকজন সন্দেহ করতে পারেন এটাও জেনে ছিলেন ইউটিউব থেকে। তাই তিনি এলাকা ছেড়ে যাননি। মুঠোফোনের সকল রেকর্ড মুছে ফেলেছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সখীপুর থানার এসআই মাসুদ রানা বলেন, সাব্বির তাদের জানায় অপহরণের পর খুনের পরিকল্পনাকারী সে নিজেই। তারপরও পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে শুক্রবার সাব্বিরকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হবে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল