• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ধনবাড়ির ঐতিহ্যবাহী জমিদারি পুরাকীর্তি নবাব মঞ্জিল

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২  

বংশাই ও বৈরান নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এই জমিদারবাড়ির রয়েছে একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস। ধারণা করা হয়, মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে ধনপতি সিংহকে পরাজিত করে মোগল সেনাপতি ইস্পিঞ্জর খাঁ ও মনোয়ার খাঁ ধনবাড়ীতে জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। চুন-সুরকির নওয়াব প্যালেস ঐশ্বর্যে ও ঐতিহ্যে ঠিকই আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। অপূর্ব স্থাপত্যকর্মের কারণে ক্রমে জমিদারবাড়িটি পরিণত হতে থাকে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানে। তাই নবাবের উত্তরাধিকারীরা জমিদারবাড়িতে গড়ে তোলেন পিকনিক স্পট, যা নবাব সৈয়দ হাসান আলী রয়্যাল রিসোর্ট হিসেবে বেশ খ্যাতি লাভ করেছে। রিসোর্টটি দেখাশোনার দায়িত্বে আছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লাইট হাউস গ্রুপ।

টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ি উপজেলায় অবস্থিত অসাধারণ এক জমিদারি পুরাকীর্তি হল নবাব মঞ্জিল,  যা স্থানীয়ভাবে নবাববাড়ি নামেই অধিক পরিচিত। এটি তৈরি নবাব আলী চৌধুরীর হাতে এবং বর্তমানে নবাব আলী চৌধুরীর উত্তরসূরিরা এই রাজবাড়ির দেখভাল করছেন এবং পর্যটকদের অবস্থানের জন্য তারা এখানে বেশ কয়েকটি কটেজও নির্মাণ করেছেন। নবাব আলী চৌধুরীর পরিবারের উত্তরসূরী নবাব হাসান আলী চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তানের শিল্প মন্ত্রী ছিলেন এবং স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ছিলেন। নবাব হাসান আলী চৌধুরীর কন্যা সৈয়দা আশেক আকবর ১৯৮১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মুসলিম জমিদারি প্রথা হওয়ার সুবিধার্থে যুদ্ধে এই জমিদার বংশকে দেশত্যাগ করতে হয়নি। তাঁরা তাঁদের শাসনকালে যেমন ক্ষমতাধর ছিল তেমনই এখনও স্থানীয় অঞ্চলে তাঁদের প্রভাব বেশ বিদ্যমান। ১৯১৯ সালে তৎকালীন ইংরেজ লর্ড রোনাল্ডশ্যকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য নবাব আলী চৌধুরী এই জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ৩০ টি সুসজ্জিত হাতি বহরের মাধ্যমে নবাব রোনাল্ডশ্যকে স্বাগত জানান। বর্তমানে তাদের উত্তরসুরি বসবাসের কারণেই জমিদারবাড়িগুলোর অবস্থা এখনও বেশ ভাল এবং যথাযথ যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে।

কিভাবে যাবেন?
ঢাকার মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে টাঙ্গাইলগামী বিনিময় পরিবহন বাস ধনবাড়িতে ঠিক রাজবাড়ির সামনেই থামে। তবে লোকাল সার্ভিস হওয়ার কারণে ধনবাড়ি পৌছাঁতে প্রায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় লাগে। এছাড়া মহাখালি থেকে নিরালা পরিবহণের বাসে ১৬০ টাকা ভাড়ায় টাঙ্গাইলে গিয়ে সিএনজি বা অটোরিকশা করে রাজবাড়িতে যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন?
চাইলে থাকতে পারবেন এই রিসোর্টেই বিভিন্ন ধরণের প্যাকেজে। এছাড়া টাঙ্গাইলে রাত্রি যাপনের জন্য বেশকিছু হোটেল ও গেস্ট হাউজ রয়েছে। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল: পলাশ হাউজ/ নাইট গন্ধা রেসিডেনসিয়াল হোটেল, আল ফয়সাল হোটেল রেসিডেনসিয়াল, হোটেল সাগর রেসিডেনসিয়াল, আফরিন হোটেল, এস এস রেস্ট হাউজ, পল্লী বিদ্যুৎ রেস্ট হাউজ, এলজিইডি রেস্ট হাউজ(সরকারি), সুগন্ধা হোটেল, নিরালা হোটেল ইত্যাদি।

কি খাবেন?
টাঙ্গাইল খাওয়ার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে শহরের নিরালা মোড়ে অবস্থিত হোটেল নিরালা বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। নিরালা মোড়ের কাছাকাছি দূরত্বে কয়েকটি খাবার হোটেল রয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইলের বিখ্যাত পোড়াবাড়ির চমচম খেতে ভুলে যাবেন না।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল