আজকের টাঙ্গাইল
  • সোমবার ১৭ জুন ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ৩ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

সখীপুরে পিডিবির ভুলে কারাগারে যাওয়া দিনমজুর সুনীল জামিন পেলেন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিদ্যুৎ বিভা‌গের ভুল মামলায় কারা‌ভোগ করা দিনমজুর সুনীল কোচ (৪০) জা‌মিন পে‌য়ে‌ছেন। 

মঙ্গলবার টাঙ্গাইলের বিদ্যুৎ আদাল‌তের ম্যা‌জি‌স্ট্রেট বেগম রি‌জোয়ানা র‌শিদ দিনমজুর সুনী‌ল কো‌চের জা‌মিন মঞ্জুর ক‌রেন। সুনী‌ল কো‌চের জা‌মিন আবেদন করেন আইনজীবী মাহমুদা আক্তার মু‌ন্নি। ওই আইনজীবী সুনী‌ল কোচের জা‌মি‌নের বিষয়‌টি নি‌শ্চিত ক‌রেন।
 
বিষয়টি জানার পর টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক সুনী‌লের বিরু‌দ্ধে বিদ্যুৎ বিভা‌গের করা মামলা ও তাঁর বারবার গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়‌টি তদ‌ন্তের জন্য অতি‌রি‌ক্ত জেলা ম্যা‌জি‌স্ট্রেট সৈয়দ মাহমুদ হাসান‌কে প্রধান ক‌রে তিন সদ‌স্যের ক‌মি‌টি গঠন ক‌রে‌ছেন।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গ‌নি সাংবাদিকদের ব‌লেন, ‘দিনমজুর সুনী‌লের বিরু‌দ্ধে করা মামলায় তাঁর মানবা‌ধিকার ক্ষুণ্ন হ‌য়ে‌ছে কি না, তা খ‌তি‌য়ে দেখ‌তে তিন সদ‌স্যের ক‌মি‌টি গঠন করা হ‌য়ে‌ছে। তি‌নি ব‌লেন, বিষয়‌টি আমা‌দের নজ‌রে আসার পর থে‌কেই জেলা প্রশাসন দ্রুত সুনী‌লের জা‌মি‌ন দেওয়ার উদ্যোগ নেয়।’

পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ও সখীপুর থানা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জুন মাসে অবৈধ বিদ্যুৎ-সংযোগ নেওয়ার অভিযোগে উপজেলার কালমেঘা নাগেরচালা গ্রামের মোহন কোচের বড় ছেলে অনীল কোচের বাড়ির বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ওই অভিযোগে বিদ্যুৎ গ্রাহক অনিলের নামে মামলা করতে গিয়ে ভুলক্রমে তাঁর ছোট ভাই সুনীলের নাম উল্লেখ করে বিদ্যুৎ বিভাগ। অথচ সুনীলের বাড়িতে ওই সময় কোনো বিদ্যুৎ-সংযোগই ছিল না। এ মামলায় আদালত সুনীলের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

পুলিশ ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রথমে সুনীলকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর ছাপা সংস্করণে ‘সখীপুরে বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ভুলে অন্যজন চার দিন ধরে কারাগারে’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে সহযোগিতা করায় পাঁচ দিন হাজতবাস করার পর সুনীল জামিনে ছাড়া পান। এর চার বছর পর সেই একই মামলায় সুনীলকে গত রোববার রাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
 
সুনীলের বড় ভাই অনীল বলেন, ‘২০১৩ সালে বাড়িতে তিনি পিডিবির বিদ্যুৎ-সংযোগ নেন। মিটারে আসা নিয়মিত বিল পরিশোধ করলেও ২০১৮ সালের জুন মাসে পিডিবি বিল বকেয়ার অভিযোগে তাঁর বাড়ির সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে। শুনেছি ওই সময় বিদ্যুৎ বিভাগ আমার নামের জায়গায় ভুলবশত সুনীল লিখে ফেলে। সুনীল আমার ছোট ভাই। সে আমার বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বসবাস করে। সুনীলের বাড়িতে তখন বিদ্যুৎ-সংযোগ ছিল না। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আমার ভাই গ্রেপ্তার হলে আমি বিদ্যুৎ বিভাগের ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে আমার ভাইকে জামিনে মুক্ত করে আনি। আমার ও আমার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে এখন পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে।’

পিডিবির সখীপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান ভুঞা বলেন, ‘মামলার বাদী সহকারী প্রকৌশলী জামাত আলী আকন্দ কাল বুধবার বিদ্যুৎ আদালতে মামলাটি খারিজের জন্য আবেদন করবেন। শিগগিরই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করছি।’

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল