• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

দেশকে আরও এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২৪  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। ১৯৮১ সালের ১৭ মে জননেত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশে ফিরে এসে যেমন আওয়ামী লীগকে পুনরায় সংগঠিত করেছেন, তেমনি দেশকে বিস্ময়কর-ভাবে এগিয়ে নিয়ে বিশ্বের দরবারে অনন্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে '১৭ মে ১৯৮১ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন' আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। 

ড. হাছান বলেন, 'জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রায় ১৯ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসেও তিনি বিচলিত হননি। তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন, জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে পথ চলেছেন কিন্তু জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কাফেলা থেকে কখনো বিচ্যুত হননি।'

ইতিহাসের দিকে দৃকপাত করে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আহত হাছান মাহমুদ বলেন, 'চট্টগ্রামে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, সেদিন সেই মিছিলের সম্মুখভাগে আমি ছিলাম। কোটালীপাড়ায় ৮১ কেজি বোমা পুঁতে রেখে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুঁড়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসে জননেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা কখনো বিচলিত হননি।'

এ সময় বিএনপির রাজনীতি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের পর বিএনপির নেতারাদের মাথা আরো খারাপ হয়ে গেছে। তারা অনেক চেষ্টাও করেছিল দেখা-সাক্ষাৎ করার।  কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বার্তা দিয়ে গেছে তারা সম্পর্ককে আরো গভীর করতে চায় এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এজন্য মাথা খারাপ বিএনপি এখন খেই হারিয়ে ফেলেছে। 

তিনি বলেন, 'আগে দেখতাম দুই একজন নেতা খেই হারিয়ে ফেলে আবোল-তাবোল কথা বলেন। এখন সিনিয়র নেতারাও খেই হারিয়ে ফেলছেন। তাদের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র  করে কোন লাভ হয়নি বরং তারা ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন থেকে বাইরে থাকার যে পথ অনুসরণ করছেন এতে বিএনপির জন্যই আকাশটা হয়ে আসছে। তার যদি সেই পথেই থাকে এক সময় হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।' 

স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি'র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার, স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েল প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে সাক্ষাত করেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধি সাম্বল রিজভি (Sumbul Rizvi) এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিনশেত্রু (Gabriel  Chinchetru)। 

ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধির সাথে বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

সাম্বল রিজভি মন্ত্রীকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তাদের সেনাবাহিনী ও বিবদমান গোষ্ঠিগুলোর চলমান সশস্ত্র সংঘাত, মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশ সীমান্তে পালিয়ে আসা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জীবনযাত্রার ওপর আলোকপাত করেন। 

ড. হাছান বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত প্রায় শত বছরের পুরনো। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির বিকল্প নেই। ভারত ও চীনকে এ বিষয়ে আরও তৎপর করতে  ইউএনএইচসিআর কাজ করতে পারে। 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইউনিটে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আশ্রিতদের দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা যেতে পারে যা নিজদেশে ফিরে গিয়ে তাদের পেশাগত জীবন গড়তে সহায়ক হবে। 

ভাসানচরে আরও রোহিঙ্গা স্থানান্তর ও সেখানকার স্থাপনা নিয়মিত মেরামতের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন হাছান।

এরপরই বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিনশেত্রুর সাথে দ্বিপাক্ষিক বিষয়াবলী নিয়ে আন্তরিক আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। 

বাংলাদেশের রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দেশ স্পেনকে দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও আইটি ভিলেজগুলোতে বিনিয়োগের আহবান জানান মন্ত্রী।

পাশাপাশি স্পেনের সাথে 'মাইগ্রেশন মোবিলিটি এগ্রিমেন্ট' করার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হন মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত। উল্লেখ্য, বর্তমানে গ্রিসের সাথে এই চুক্তি রয়েছে এবং ইটালি, অস্ট্রিয়া ও মাল্টার সাথে চুক্তির বিষয়ে আলাপ চলছে। 

রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল জানান, সেখানে প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছে, যারা স্পেনের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সুবিধাজনক সময়ে স্পেন সফরের আমন্ত্রণ জানান।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল