• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ডিমেনশিয়া রোগের ফিজিওথেরাপি

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

ভুলো মনের মানুষদের নিয়ে হাসিঠাট্টা করেন অনেকেই। আপাত তুচ্ছ এই ভুলে যাওয়ার অসুখ কিন্তু মোটেই তাচ্ছিল্যের বিষয় নয়। স্মৃতিভ্রংশের সমস্যার সূচনা হয় এ ভাবেই। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ডিমেনশিয়া’। 


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বর্তমানে গোটা বিশ্বে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি। প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিতে এখনও ডিমেনশিয়া নিরাময় করা দুঃসাধ্য। তাই এক বার এই রোগ দেখা দিলে সুস্থ হওয়া খুবই কঠিন।

এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাল ব্রিটেনের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা। কেমব্রিজের সাইকিয়াট্রি বিভাগের গবেষক ডক্টর শানকোয়ান চেনের নেতৃত্বে হওয়া এই গবেষণা বলছে, লিথিয়াম নামক একটি মৌল অনেকটাই কমাতে পারে এই রোগের আশঙ্কা। ২০০৫ থেকে ১৪ বছর ধরে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের উপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। 


সেই গবেষণার ফলাফলই সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা ‘সাইকিয়াট্রিক টাইমস’-এ। গবেষকদের দাবি, যাঁরা জীবনে কোনও না কোনও সময় লিথিয়াম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে এই রোগের আশঙ্কা অনেকটাই কম।


ক্যামব্রিজের গবেষণাটিতে অংশ নিয়েছিলেন ২৯৬১৮ জন। সকলেরই বয়স ছিল ৫০-এর বেশি। এর মধ্যে কোনও না কোনও লিথিয়াম-যুক্ত ওষুধ ব্যবহার করা মানুষের সংখ্যা ছিল ৫৪৮ জন। গবেষণার ফল বলছে, যাঁরা লিথিয়ামযুক্ত ওষুধ খেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন শতকরা ৯.৭ জন। 

অপর দিকে, যাঁরা কখনও লিথিয়াম ব্যবহার করেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে এই হার অনেকটাই বেশি। ফলে গবেষণায় ইঙ্গিত মিলছে, লিথিয়াম ডিমেনশিয়ার উপশম হিসাবে কাজে আসতে পারে। তবে ঠিক কেন এমন হয়, তা নিয়ে নিশ্চিত নন গবেষকরা। তাই বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলেই মত তাঁদের।

গবেষকগণ বলছেন, প্রতিদিন এক্সারসাইজ করলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রতিদিন হাঁটুন , দেখা গিয়েছে প্রতিদিন মাত্র ১৩ মিনিট এক্সারসাইজ করলেও পরবর্তী জীবনে ডিমেনশিয়া হওয়ার আশঙ্কা কমে। এমনকী ডিমেনশিয়া দেখা দেওয়ার পরেও প্রতিদিন এক্সারসাইজ করলেও রোগের অগ্রগতি অনেকটাই ধীর করে দেওয়া সম্ভব। আবার, প্রতিদিন ৩৫মি.   ঘাম ঝরিয়ে হাঁটলেও ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন বহু ডিমেনশিয়ার রোগীই জিঙ্ক-এর ঘাটতিজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তাই জিঙ্কযুক্ত খাদ্য প্রতিদিন খাওয়া দরকার। জিঙ্ক থাকে কুমড়োর বীজ, কালো চকোলেট, রাজমা, ছোলা, মটরশুঁটি, চিকেন। 

দৈনিক ৮ ঘণ্টা ঘুমালে ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। কারণ ঘুমের সঙ্গে স্মৃতির একটা বড় যোগযোগ রয়েছে। ঘুমানোর সময়েই আমাদের কোন স্মৃতি জমা হয়ে থাকবে তা ঠিক করা হয়। ফলে প্রথম থেকে সঠিক মাত্রায় ঘুমের অভ্যাস ঠেকাতে পারে ডিমেনশিয়ার সমস্যা।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল