• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ধুনটে যমুনার চরে নিরাপদ জুয়ার আসর

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০১৯  

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর দূর্গম চরে নিরাপদে তিন তাসের জুয়া খেলার আসর বসেছে। এখানে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। নদীবেষ্টিত এলাকা হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়াড়িরা সেখানে যায়। এসব খেলয়াড়রা যেকোন ভাবে টাকা যোগাড় করে জুয়ার আসরে ঢালছে। আর সেই অর্থ যোগাড় করতে গিয়ে তারা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। মাঝে মাঝে লোক দেখানো দু’একটি পুলিশি অভিযানে জুয়াড়ি আটক করা হলেও আয়োজকরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্বপাশ দিয়ে বহমান যমুনা নদীর। এ নদীর বুকে জেগে উঠেছে চর। সেখানে গড়ে উঠেছে বসতি। এই চরের কাঠ গাছের বাগানের ভেতর সামিয়ানা টাঙ্গিয়ে তার নীচে বসে জুয়া খেলা হয়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দ্বীপের ন্যায় বৈশাখী চরটিকে তারা নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে। প্রতিদিন নৌকাযোগে পার হয়ে চরে গিয়ে জুয়ার আসরে যোগ দেয় খেলোয়াড়রা। 

 

বৈশাখী চরে জুয়া খেলার উদ্যোক্তা স্থানীয় সোনারগাঁ-চিকাশি গ্রামের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম। তিনি বিভিন্ন এলাকার জুয়াড়িদের সাথে যোগাযোগ করে চরের নির্ধারিত স্থানে হাজির করেন। এরপর সেখানে অবাধে চলে জুয়া খেলা। এ ভাবে তিন মাস ধরে জুয়ার আসর বসলেও সেখানে প্রশাসনের নজরদারি নেই।  এ জুয়াকে ঘিরে এলাকার সুদখোরদের রয়েছে রমরমা ব্যবসা। তারা সুযোগ বুঝে চড়া সুদে টাকা ধার দিয়ে থাকেন। এসব সুদখোরের চড়া সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ভিটেমাটি পর্যন্ত হারিয়েছেন অনেকে। 

 

বানিয়াজান গ্রামের কেরামত আলী জানান, জুয়া খেলায় তিনি এখন নিঃস্ব। এই এলাকায় তার মতো অনেকেই সুদে টাকা এনে জুয়া খেলায় মত্ত ছিল। সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাছাড়া সর্বস্ব খুইয়ে দিশেহারা হয়ে কেউ কেউ নেশার জগতেও ঝুঁকে পড়ছেন। 

 

মানিকপোটল গ্রামের মুনসুর আলী জানান, পৈতৃক স‚ত্রে তার বেশ ৫বিঘা জমিও ছিল। সব জুয়ায় নিয়েছে। এখন বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। প্রায় দেড় বছর ধরে জুয়ার নেশায় তিনি বুঁদ হয়ে আছেন। সেলিম হোসেন নামের আরেকজন জানান, কোনো দিন সব টাকা হেরে তিনি বাড়িতে যান। কখনো জেতেনও। তবে বেশির ভাগ দিনই হারেন। কিন্তু নেশার টানে আরো অনেকের মতো তিনিও ছুটে আসেন। 

 

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, যমুনা নদীর চরে জুয়া খেলার বিষয়টি আমার জান নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে সেখানে অভিযান চালানো হবে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল