• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

"মে দিবসে সুরক্ষিত হোক শ্রমিকের অধিকার"

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১ মে ২০১৯  

মালিক (ধনিকশ্রেণী) তুমি সদয় হও, শ্রমিক তুমি কর্মঠ হও। মালিক তুমি শোষন করোনা, শ্রমিক তুমি কাজে ফাঁকি দিয়োনা। যাদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে আপনার জন্য সুন্দর ইমারত তৈরি হয়েছে তাদের কেন অবহেলা করো? কেন তাদেরকে ন্যায্য মজুরি দিতে ফেরাউনি কায়দা অবলম্বন করো? ঘাম শুকানোর আগে যেখানে শ্রমিকের বেতন দেওয়ার কথা ইসলাম কতৃক স্বীকৃত সেখানে কেন তাদের বেতন বকেয়া রাখা হয়? কেন কাজের বিনিময় মুল্য যথাযথ পায়না আমাদের শ্রমিকগণ। কেন আজো ধনিক শ্রেনীর লোকেরা তাদের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমের মুল্য দিতে কার্পন্য করে? কেন শ্রমিকেরা ন্যায্য দাবীর জন্য আজো সংগ্রম করে যাচ্ছে? ইট পাথরের দালান কোটার বাবু সাহেবেরা কেন শ্রমিককে দধীচি হিসেবে দেখে? তারাও মানুষ, মানব সমাজের। তাদের অধিকার নিশ্চিৎ করা সরকারের দায়িত্বে ও কর্তব্যে পড়ে।

 

১লা মে আসে চক্রাকারে আবার চলে যায় কিন্তু শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার ফিরে আসেনা। শিল্পপতিরা শ্রমিকে ঘামের মুল্য বুঝেনা! মালিক-শ্রমিক অসমতা, অসংগতি, বৈষম্য সুন্দর সভ্য সমাজের জন্য মোঠেও কাম্য নয়। সভ্যতার চালিকা শক্তি শ্রমিকের জয় হোক।সাম্যের কবি কাজী নজরুল শ্রমিকের জয়োগান গেয়েছেন। আজ বিদ্রোহী কবি, সাম্যের কবি নজরুল নাই কিন্তু তার শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে প্রতিবাদী কবিতা আজো শ্রমিকের পক্ষে কথা বলে। "হাতুড়ি শাবল গাঁইতি চালায়ে ভাঙিল যারা পাহাড়/পাহাড়-কাটা সে পথের দু’পাশে পড়িয়া যাদের হাড়/

তোমারে সেবিতে হইল যাহারা মজুর, মুটে ও কুলি/ তোমারে বহিতে যারা পবিত্র অঙ্গে লাগাল ধূলি/ তারাই মানুষ, তারাই দেবতা, গাহি তাহাদেরি গান/

তাদেরি ব্যথিত বক্ষে পা ফেলে আসে নব উত্থান!/"

 

আজ মহান মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিনটি পালনের ১৩৩তম বার্ষিকী আজ। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাঁদের আত্মদানের মধ্য দিয়েই শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এ দিনটিকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী সরকারি ছুটি থাকে এ দিন। বাংলাদেশেও আজ সরকারি ছুটি। 

 

শ্রমিকদেরকে যারা দধীচি বলে হেয়প্রতিপন্ন করি, অবহেলা আর ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করি তারা কি জানেনা? আমাদের আরাম আয়েশের সব ব্যবস্থা শ্রমিকেরাই করে। ওদের নরম হাতের স্পর্শে সুন্দর সুন্দর ইমারত গড়ে উঠেছে। গাইতি, শাবাল দিয়ে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও তারা সঠিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ভেবেছেন কী? শ্রমিক! ওরা এদেশের, ওরা সভ্যতার রুপকার, ওরা সুন্দর পৃথিবীর নির্মাতা, ওরা আপনার বাড়ির প্রতিটি ইটের সাথে উথ্প্রতোভাবে জড়িত স্মৃতি, বাসার প্রতিটি এসি(রেফ্রিজারেটর) এদের স্পর্শে বুলানো স্মৃতি। আপনার বস্ বস্ ভাব, স্যুট-টাই, কোট-প্যান্ট সব তো এদের হাতের কারুকাজে। সুতরাং কাদেরকে অবহেলা করেন? কাদের ন্যায্য মজুরির বিপরীতে কাঁদুনে গ্যাস, টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেন? আপনি মালিক, শ্রমিকের মুল্য বুঝেন? তাদের পারিশ্রমিক শরীরের ঘাম শুকানোর আগেই পরিশোধ করুন। জয় হোক শ্রমিকের। জয় হোক মানবাধিকারের, জয় হোক সভ্যতার রুপকার শ্রমিকের।

 

লেখক, শিক্ষক ও সাংবাদিক

শিব্বির আহমদ রানা

বাঁশখালি, চট্টগ্রাম

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল