• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

চামড়ায় অরাজকতা ঠেকাতে এবার তদারক টিম

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২০  

কোরবানির কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন নিশ্চিত করতে বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে তিন স্তরের তদারক কমিটি বা টিম করা হয়েছে। গত বুধবার থেকে টিমগুলো কাজ শুরু করেছে। প্রথমটি হলো বিভাগভিত্তিক মনিটরিং টিম। প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদাভাবে গঠিত এই টিম মাঠপর্যায়ে কাজ করবে। তারা প্রান্তিক পর্যায়ে, অর্থাৎ মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা যাতে চামড়াগুলো লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেন, সেটি নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহনের সমস্যাগুলোও সমাধানের উদ্যোগ নেবে। এ জন্য তারা স্থানীয় প্রশাসনকেও কাজে লাগাবে।

দ্বিতীয় স্তরের কমিটি বিভাগীয় টিমগুলোকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মনিটর করবে ও তথ্য সংগ্রহ করবে। আট বিভাগের জন্য মোট ১০ জনের এই মনিটরিং কমিটিকে আটটি ভাগ করে বিভাগভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকায় তিনজন ও রাজশাহীতে দুজন ছাড়া প্রতিটি বিভাগে একজন করে দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া ঈদুল আজহার পুরো সময় কোরবানির চামড়ার সাপ্লাই চেইন, সংরক্ষণব্যবস্থা এবং বেঁধে দেওয়া দাম সার্বক্ষণিক তদারকিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামানকে প্রধান করে একটি ‘কন্ট্রোল সেল’ খোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে এবার চামড়ার বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এ জন্য এবার চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণ জরুরি। এ ছাড়া চামড়ার সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকলে প্রান্তিক পর্যায়ে আর চামড়া পড়ে থাকবে না। এতে সব পর্যায়ের ক্রেতা-বিক্রেতাই লাভবান হবেন।

জানা যায়, প্রতিবছরই চামড়ার বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা সঠিক দাম দেন না কোরবানিদাতাকে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যথাযথভাবে চামড়া সংরক্ষণ করেন না। আবার পাইকারদের মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ঠকানোর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আড়তদারদের অনীহায় কাঁচা চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েন পাইকাররাও। শেষে ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের টানাটানিতে চামড়ার বাজারে তৈরি হয় আরো বিশৃঙ্খলা। বছরের পর বছর এমন অবস্থা তৈরি হওয়ায় গত বছর দেখা দেয় নজিরবিহীন নৈরাজ্য। কাঁচা চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মাটিতে পুঁতে ফেলার খবর আসে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে। তাই গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ কমিয়ে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে মূল্য কম হলেও এবার যাতে চামড়া বিক্রিতে সমস্যা না হয় সে জন্য গঠিত টিম ও কমিটিগুলো কাজ করবে। কমিটিকে প্রধান ছয়টি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো লবণযুক্ত চামড়ার ক্রয়-বিক্রয় মনিটর করা, সংশ্লিষ্ট বিভাগে কাঁচা চামড়ার সংরক্ষণ ও মজুদ পরিস্থিতি মনিটর করা—এসংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান করা, প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়া, সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় কমিটিকে সার্বক্ষণিক অবহিত করা, চামড়া অবিক্রীত থাকলে তার বিস্তারিত তথ্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ও সেলে রিপোর্ট দেওয়া। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এসব কাজ করতে প্রয়োজনে তাঁরা সম্ভাব্য ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করবেন। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় বিক্রি করতে না পারলেও যাতে চামড়া নষ্ট না হয়, সে জন্য কমিটিগুলো লবণ দিয়ে সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

কার্যপত্র অনুসারে ময়মনসিংহ বিভাগের টিমে রয়েছেন মোট পাঁচজন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচজনের টিমের দলনেতা করা হয়েছে বাংলাদেশ চা বোর্ডের সচিব কুলদীপ চাকমাকে, সিলেট বিভাগের চারজনের দলনেতা করা হয়েছে টিসিবির ঊর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী ইসমাইল মজুমদারকে, রাজশাহীর চারজনের টিম লিডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজশাহীর আমদানি ও রপ্তানি যুগ্ম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের উপনিয়ন্ত্রক গোলাম মোরশেদকে, রংপুর বিভাগে চারজনের টিমের দলনেতা করা হয়েছে টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপকার্যনির্বাহী কর্মকর্তা সুজাউদ্দিন সরকারকে, খুলনা বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চারজনকে, দলনেতা টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপকার্যনির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল মোর্শেদ এবং বরিশাল বিভাগে রয়েছেন তিনজনের টিম, দলনেতা টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-ঊর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী মো. আনিসুর রহমান।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল