• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

রৌমারীতে দূর্ভোগের শিকার অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২৪  

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় ঢাকা মহাসড়ক হতে উপজেলার নটানপাড়া হয়ে বড়াইবাড়ি সীমান্ত চুলিয়ারচর রাস্তায় হাসপাতাল সংলগ্ন বিজিবি ক্যাম্পের পূর্ব পাশে পুকুরের ওপর ১৬৮ মিটার চেইনেজে ৩৬.০৬ দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও শেষ হয়নি কাজ। 

দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ব্রীজের কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদিকে যথাসময়ে ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের লক্ষাধীক মানুষ। 
যাতায়াতের উন্নয়নে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও সংশিষ্টদের উদাসীনতায় সমালোচনায় ফেলছে সরকারের উন্নয়ন। উপজেলার হাসপাতাল সংলগ্ন বিজিবি ক্যাম্পের পূর্ব পাশে পুকুরের ওপর ব্রীজের নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে উপজেলার রৌমারী হতে চুলিয়ারচর, ইছাকুড়ি, নচানপাড়া, গেয়ালগ্রাম, ইজলামারী, পর্বইজলামারী, চরফুলবাড়িসহ ৬টি ব্রীজের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০ টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ উপজেলা শহরের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে এলাকার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরি জীবিসহ সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার (০৪ জুন ) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, রৌমারী হাসপাতাল সংলগ্ন পুকুরের ওপর ব্রীজ, বকবান্দা নামাপাড়া খালের উপর, বড়াইকান্দি হতে বোয়ায়মারী গ্রামের উত্তর মাথায় সড়কের ভাঙ্গায়, বেহুলারচর জিঞ্জিরাম নদীর উপর, কাশিয়াবাড়ি গ্রামের সামনে পুর্বদিকে ও বাওয়ার গ্রামের পিছনে পশ্চিমে এই মোট ৬টি ব্রীজ দীর্ঘদিন যাবত নির্মাণ কাজ অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে এলাকার মানুষের বর্তমানে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি। অভিযোগ উঠে ডাইভেরশন ব্রীজগুলি নি¤œমানের হওয়ায় দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছেন কমলমতি স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ। এলজিইডির বাস্তবায়নে প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রীজ নির্মাণের জন্য ৬টি ব্রীজের জন্য প্রায় ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা টেন্ডাারের মাধমে কাজ শুরু করেন। হাসপাতাল সংলগ্ন ব্রীজটি ভেঙ্গে নতুন ব্রীজের জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়। তবে স্থানীয় জনগণের ভাষ্যমতে এই ব্রীজগুলি জনগুরুত্বপূর্ণ অথচ ঠিকাদারের অবহেলায় ও কাজের ধীরগতি হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাচ্ছে সাধারন মানুষকে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রৌমারী হাসপাতাল ও বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন পূর্ব পার্শ্বে পুকুরের ওপর ব্রীজসহ ৬টি ব্রীজ নির্মাণে এলজিইডির প্রায় ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে হাসপাতাল পুকুরের ওপর ব্রীজটি মের্সাস দুর্গা এন্টারপ্রাইজ শ্যামল বাবু টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায়। বাকি ৫টি একই ভাবে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজগুলি পায়। এরমধ্যে হাসপাতাল পুকুরের ওপর ব্রীজটি রৌমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রবিনের কাছে সাব-ঠিকাদার হিসাবে কাজটি বিক্রি করে দেন। পরে তার কাছ থেকে ব্রীজের কাজেল সকল দায়িত্ব ভার বুঝে নিয়ে বর্তমান কাজ করছেন রাশেদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। সাব-ঠিকাদার গত বছর মে ও জুন মাসে ব্রীজটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে ব্রীজ নির্মাণের পদক্ষেপ নিলেও বিভিন্ন অজু হাতে বর্তমানে ব্রীজ নির্মাণের কাজ ধীরগতিতে চলছে।
সূত্রে আরও জানা যায়, একইস্থানে এলজিইডির বরাদ্দে ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ডাইভেরশন ব্রীজ নির্মাণ করে দেয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে হালকাভাবে কাঠের ব্রীজ নির্মাণ করেন। অপরদিকে দায় এড়াতে নড়বড়ে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দেন ঠিকাদার। বর্তমানে কোনো উপায় না পেয়ে ঠিকাদারের নির্মিত নড়বড়ে কাঠের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন স্কুল কলেজ শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। এদিকে ডাইভেরশন ব্রীজের জোড়া তালির ব্রীজ দিয়ে পারাপার হচ্ছে সাধারন মানুষ ভয় পাচ্ছে।
এ বিষয়ে রৌমারী সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম সাদা জানান, ব্রীজের কোনো কাজই হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে অনেক সময় লাগবে। এদিকে কাঠের ব্রীজ দিয়ে পাড় হতে ভয় লাগে বড় বড় তারকাটা বেড় হয়ে আছে। যেকোনো সময় মানুষ দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে অনেকেই। আমি সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হউক।
স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিবর রহমান অভিযোগ করে বলেন, এই ব্রীজের কাজের কোনো গতি নাই। রৌমারী বাজারে যাইতে একমাত্র ভরসা ছিলো ব্রীজটি। কাঠের একটা ব্রীজ নির্মাণ করেছে তার উপর দিয়ে পাড় হতে গা কাপে। 
রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, সাধারন মানুষের পক্ষ থেকে দাবি করছি দুর্ভোগ লাঘবে দ্রæত ব্রীজের কাজ সম্পন্ন করা হউক।
হাসপাতাল সংলগ্ন পুকুরের ওপর ব্রীজের সাব ঠিকাদার রাশেদুল ইসলাম এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নানা সমস্যার কারনে কাজের সমস্যা হয়েছে তবে কাজ চলমান রয়েছে।
তবে ঠিকাদার শ্যামল বাবুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী মনছুরুল ইসলাম জানান, এই কাজ গুলো জেলা থেকে মনিটরিং করা হয় আমরা সহযোগীতা করি মাত্র। বিস্তারিত জানার জন্য জেলা নির্বাহী স্যারের সাথে যোগাযোগ করুন।
এব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী কুড়িগ্রাম মাসুদুজ্জামানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল