• বৃহস্পতিবার ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১৮ ১৪৩১

  • || ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বন্যায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ৮ লাখ গ্রাহক

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৪  

উজানের ঢলে এই আকষ্মিক বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও বেশ কয়েকটি জায়গায় এখনো বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেটের কয়েকটি জায়গা এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে প্রায় ৮ লাখ গ্রাহক। তবে, দ্রুততম সময়ে এসব এলাকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। রবিবার বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) জানায়, এই বিতরণ সংস্থার অধীনে এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৪৫ জন গ্রাহক। এর ১৬০টি উপকেন্দ্রের মধ্যে বন্ধ রয়েছে ১৪ টি উপকেন্দ্র। মোট ৮৮৪ টি ১১ কেভি ফিডারের মধ্যে বন্ধ রয়েছে ১৩১টি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আর কিছু সময় সময় প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তারা। একই দিন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানায়, প্রায় তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো এর আওতাধীন ২৩ হাজার ৪০০ জন গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন অবস্থায় রয়েছে। এর ৩৩ কেভি লাইনের মধ্যে ৩ কিলোমিটার লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১১ কেভি লাইনের ১৫ কিলোমিটার, ১১/০.৪ কেভি লাইনের ১৮ কিলোমিটার এবং ০.৪ কেভি লাইনের ১৭ কিলোমিটার লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও, পিডিবি’র আওতায় বিতরণ ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৯টি, ১৫ মিটার পোল ভেঙ্গেছে ৪টি, ১২ মিটার পোল ভেঙ্গেছে ১৪ টি এবং ৯ মিটার পোল ভেঙ্গেছে ২৬ টি। তবে পরিস্থিতি খুব দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়েছে জানিয়ে পিডিবি’র পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শামীম হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, বন্যার পানি যথাযথ পরিমাণ কমে গেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে আমাদের কর্মীরা ২৪ ঘন্টা কাজ করছে। প্রতিটি দপ্তরে ক্ষতিগ্রস্থ লাই মেরামত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ মালামাল (তার, পোল, ট্রান্সফরমার ও অন্যান্য আনুষাংগিক মালামাল) মজুদ করা হয়েছে। এছাড়া, প্রতিটি দপ্তরে বন্যাপ্লাবিত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ মটিরিং কমিটি গঠন করা হয়েছৈ। প্রতিটি দপ্তরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য স্পেশাল কারিগরি টিম গঠন করা হয়েছে। দপ্তরগুলোতে পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়ছে। চালু করা হয়েছে হটলাইন। এছাড়া সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি মনিটরিং করা রজন্য জোনাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। একই দিন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নোয়াখালীতে বন্যাপ্লাবিত জেলাগুলোর ১ হাজার ১৫১টি টাওয়ারের মধ্যে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সময়ে অচল ছিলো ১২৭টি টাওয়ার। একই রকমভাবে লক্ষ্মীপুরের ৭০১ টি টাওয়ারের মধ্যে ৭৩টি, ফেনীর ৬৫৩টি টাওয়ারের মধ্যে ৫৮৮টি, কুমিল্লার ২ হাজার ৫২৯টি টাওয়ারের মধ্যে ১১৯টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১০৬৫টি টাওয়ারের মধ্যে ৫টি, চট্টগ্রামের ৪ হাজার ২৫৮টি টাওয়ারের মধ্যে ৫৮টি, খাগড়াছড়ির ২৩০টি টাওয়ারের মধ্যে ৩৯ টি, হবিগঞ্জের ৭৩৬টি টাওয়ারের মধ্যে ৬টি, মৌলভীবাজারের ৬৪৮টি টাওয়ারের মধ্যে ৮টি এবং সিলেটের ১ হাজার ৫২০টি টাওয়ারের মধ্যে ৩টি, কক্সবাজারের ১ হাজার ৬০টি টাওয়ারের মধ্যে ৪ টি টাওয়ার অচল রয়েছে। সব মিলিয়ে বন্যা কবলিত ১১ জেলার মোট ১৪ হাজার ৫৫১টি টাওয়ারের মধ্যে এখনো অচল রয়েছে ১ হাজার ৩০টি টাওয়ার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম-ফেনী অংশের সড়কের উপর তীব্র পানির চাপের কারণে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তাই কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছানো এবং নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপনের কার্যক্রম ভালো করে শুরু করা যাচ্ছে না জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, বন্যার কারণে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেশি উপরে থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপন কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। শুধু তাই নয় বন্যাকবলিত এলাকায় অবকাঠামোগত ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মোবাইল অপারেটর ও টাওয়ারকে অপারেটরদের জন্য প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল জনবল, নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম, জেনারেটর ও জ্বালানি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নৌযান ও স্পিডবোট দিয়ে সহযোগীতা করা হলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানানো হয়।