• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ঘাটাইলে শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে বইবাণিজ্যের অভিযোগ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২২  

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে বইবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা অখ্যাত একটি প্রকাশনী সংস্থার সঙ্গে যোগসাজশে নিম্নমানের ইংরেজি গ্রামার ও বাংলা ব্যাকরণ বই পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে এ বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।  

অভিযোগে জানা গেছে, স্ট্যামফোর্ড প্রকাশনী নামে একটি সংস্থার বই পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ওই সংস্থার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নেন ঘাটাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। আর কথিত কল্যাণ ফান্ডের সদস্যদের কাছে প্রকাশ করেছেন ১৫ লাখ টাকার কথা। 

এদিকে সরকার সর্বস্তরে শতভাগ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীর মাঝে প্রয়োজনীয় সব বই বিনামূল্যে সরবরাহ করে থাকেন। এর পরও যদি কেউ সহায়ক কোনো বই কিনেন তা হলে সেটি মানসম্মত হওয়ার কথা। 

কিন্তু ঘাটাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি তাদের কল্যাণ ফান্ডের নামে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে এ বাণিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষক সমিতি সব শিক্ষার্থীকে এ বই কিনতে বাধ্য করছে। আমি সমিতির সদস্য কিন্তু অবৈধ কোনো অর্থ খাব না বলে আমি কল্যাণ ফান্ডের সদস্য হই নাই। আর আমি শিক্ষক সমিতি কর্তৃক জোর করে চাপিয়ে দেওয়া বই আমার স্কুলে পড়াই না। শুধু তাই নয়, বইগুলো মানসম্মত নয়। 

এ বিষয়ে স্ট্যামফোর্ড প্রকাশনী সংস্থার প্রতিনিধি ময়েন উদ্দিন বলেন, পার্শ্ববর্তী কালিহাতী, ভুয়াপুর ও মধুপুরে যে বইগুলো পাঠ্যভুক্ত করা হয়েছে তাদের চাইতে আমাদের বইয়ের মান ভাল। 

পাঠ্য তালিকায় আনতে শিক্ষক সমিতিকে ডোনেশন দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। মালিক বলতে পারবে। 

জুবাইর আহমেদ নামে এক অভিভাবক জানান, ২০০ থেকে আড়াইশ টাকার বই কিনতে হচ্ছে ৯৫০ টাকায়। বই কোম্পানির কাছ থেকে টাকা খেয়ে শিক্ষকরা এ কাজগুলো করছেন। এতে ছাত্রছাত্রীদের মেধার বিকাশ ঘটবে না। 

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি তাহাজ্জত হোসেন বলেন, এ বই কিনতে-তো বাধ্য করা হচ্ছে না। আমার স্কুলেও তো অনেকে অ্যাডভান্স কিনছে। 

তাহলে এডভান্সের বই পাঠ্যভুক্ত করলেন না কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমিতির ব্যাপারস্যাপার আছে তো। সব কিছু মোবাইলে বলা যায় না।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা গেছে, ঘাটাইল উপজেলায় ৫৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ২৭ হাজার ৯০০ জন। এ শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে এ বই কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আর আমি অনেক সময় স্কুলে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মূল বই পড়ার পরামর্শ দিই। তার পরও যদি সহায়ক কোনো বই কিনতে হয় তা হলে তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। 

জানতে চাইলে স্থানিয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনিয়া চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি শিক্ষক সমিতির কাছে এ বিষয়ে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল