• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

সখীপুরে আলো ছড়াচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা পাবলিক লাইব্রেরি

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১  

কলেজ পড়ুয়া কয়েকজন বন্ধুর নিয়মিত আড্ডায় একদিন সিদ্ধান্ত হয়, গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়াতে হবে। কিছুদিন পর তারা ভাবলেন, এমন কিছু করতে হবে, যাতে এলাকায় জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে কুসংস্কার থেকে বেড় করে সুন্দর সমাজ গড়া যায়। স্কুল এবং কলেজ পড়ুয়া শিক্ষাার্থীরা পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বই পড়ে বাড়তি জ্ঞান চর্চার সুযোগ পায়।

এমন ভাবনা  থেকে একটি লাইব্রেরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০২০ সালে শেষের দিকে শুরু হয় স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ। মুক্তিযোদ্ধদের স্বরণীয় করে রাখতে লাইব্রেরির নামকরণ করা হয় ‘বোয়ালী মুক্তিযোদ্ধা পাবলিক লাইব্রেরি ‘।

বর্তমানে লাইব্রেরিটিতে প্রতিদিন এলাকার শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইসহ সহায়ক বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে এখানে ছুটে আসে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পাঠকের পদচারণায় মুখরিত থাকে লাইব্রেরি চত্বর। শুধু শিক্ষার্থী নয়, চাকরিজীবী, গৃহিণী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বই নিতে পারেন এখান থেকে। সাধরণ ও বিশেষ সদস্যরা বই ফেরত দেওয়ার শর্তে বাড়িতে নিয়েও পড়তে পারেন বই।
 
বলছিলাম, টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বোয়ালী গ্রামে স্থাপিত লাইব্রেরির গল্প। শুধু বই নয়; বিভিন্ন ধরনের সচেতনতা মূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে ছাত্র এবং যুবসমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে এই লাইব্রেরির সদস্যরা।
 
কথা হয় লাইব্রেরির দায়ীত্বে থাকা আশিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নত আছেন। তিনি বলেন, লাইব্রেরিতে প্রথমে সামান্য কিছু বই ও পত্রিকা দিয়ে শুরু করলেও এখন অনেক ধরণের বই সংগ্রহে। বইয়ের মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর আত্বজীবনী, সাহিত্যিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, গল্প, নাটক, ইতিহাস, উপন্যাস, সাধারণ জ্ঞানসহ নানান ধরণের বই। নেওয়া হয় প্রতিদিন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা। গ্রামের সব বয়সের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের বই ও পত্রিকা পড়ে যেমন জানছে তেমনি অর্জন করছে জ্ঞান। এছাড়া লাইব্রেরি পরিচালনা কমিটি লাইব্রেবির ব্যানারে বিভিন্ন দিবস পালন, সচেতনতামূলক সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।
 
তিনি জানান, আরও দানশীলদের আর্থিক সহযোগিতা পেলে বই সংখ্যা বাড়ানোসহ একটি ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তোলা হবে। যেখান থেকে এলাকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হবে।

স্থানীয়রা জানান, বাজারের পাশেই লাইব্রেরি হওয়াতে সুবিধা হয়েছে। আমরা সাংসারিক কাজ কর্ম শেষে অবসর সময়ে লাইব্রেরিতে পছন্দমত বই পড়ি।যে গুলো জানা ছিলনা তা জানতে পারছি।

শিক্ষার্থী আকিব, সিহাব, আশিক, শুভ বলেন, লাইব্রেরি হওয়াতে বিদ্যালয়ের পাঠ্য পুস্তকের বাইরে অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়েছে।

বোয়ালী পাবলিক লাইব্রেরির দায়ীত্বে থাকা রিজভী শাকিল   বলেন, সকলের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে এবং শিক্ষার্থীদের মনে বই পাঠের মাধ্যমে এক জ্ঞানের নতুন জগত সৃষ্টি করতে বোয়ালী মুক্তিযোদ্ধা  পাবলিক লাইব্রেরি নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

বোয়ালী ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক শফিকুল ইসলাম শাফি বলেন, গ্রামে কোন গণগ্রন্থাগার না থাকায় মানুষ বইয়ের মাধ্যমে জ্ঞান চর্চার সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছিল। কিন্তু এখন এ লাইব্রেরি সে অসুবিধা দূর করেছে। এখানে শিশুতোষ, ইতিহাস, প্রবন্ধ, গল্প, ভ্রমন কাহিনী, নাটক, কবিতাসহ নামিদামি লেখকের বইয়ের অনুবাদসহ দেশের লেখকদের বিভিন্ন বই রয়েছে। যা পড়ে শিক্ষার্থীসহ সকল মানুষ নিজেকে আলোকিত করতে পারছেন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল