• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে উদ্দীপ্ত ছাত্রলীগ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। মুজিব আদর্শে বলীয়ান আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড খ্যাত ছাত্রলীগ যেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ধূমকেতু কিংবা ‘ওরা ঝর্ণার মতো চঞ্চল’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বহুল প্রতীক্ষিত স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে আজ শুক্রবার। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকাল ৩টায় এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। ছাত্রলীগের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ এই ছাত্রসমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীর মধ্যে সরাসরি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আগ্রহ, উদ্দীপনা ও কর্মচাঞ্চল্য চোখে পড়ার মতো। এই সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন সারাদেশ থেকে আসা ৫ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলছে, এই সমাবেশ থেকেই শিক্ষার্থীরা শপথ নেবে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজয় নিশ্চিত করতে। এ ছাড়াও ছাত্রসমাবেশ থেকে দেশের শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে নিজেদের চূড়ান্ত অনাস্থা জানাবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নপূরণে অতীতের মতো ভ্যানগার্ড হিসেবে রাজপথে থাকবে ছাত্রলীগ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সমাবেশস্থলে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ সময় সংগঠনটি জানায়, এ সমাবেশের মধ্য দিয়ে ছাত্রসমাজ উচ্চারণ করবে, ‘ওয়ানস অ্যাগেইন শেখ হাসিনা।’ সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, একজন শেখ হাসিনাকে নিয়ে দেশের সব

পর্যায়ের লাখো শিক্ষার্থীর হৃদয়ে যে প্রচণ্ড উচ্ছ¡াস রয়েছে, তার বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য এই সমাবেশকে বেছে নেয়া হয়েছে। এটি আর শুধু ছাত্রলীগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এই ছাত্রসমাবেশ দেশের ৫ কোটি শিক্ষার্থীর একটি প্রতীকী সমাবেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি দরদের জায়গা থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর পাশাপাশি অসংখ্য সাধারণ শিক্ষার্থীও সমাবেশে অংশ নেবেন।
এদিকে ছাত্রসমাবেশ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে স্বাগত জানিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ক্যাম্পাসে স্বাগত মিছিল করে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোয় নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রসমাবেশের দাওয়াত পৌঁছে দিতে রুমে রুমে গিয়ে লিফলেট বিতরণ করেন।
জানতে চাইলে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের উপসমাজসেবা সম্পাদক আইয়ুব মোড়ল ভোরের কাগজকে বলেন, ছাত্রলীগের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশ নিয়ে সারা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের মাঝে একটি উৎসবমূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীর মাঝে এটি নিয়ে উৎসবের আমেজ রয়েছে। ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটা জায়গাতেই নেতাকর্মী সমাবেশকে কেন্দ্র করে আলোচনায় মেতে উঠছেন। সমাবেশে নেত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় লাখ লাখ নেতাকর্মী মুখিয়ে আছেন। সমাবেশকে ঘিরে প্রতিটি হলে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ছাত্রলীগের প্রাণকেন্দ্র খ্যাত মধুর ক্যান্টিনে কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই শুরু হয়েছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। এই নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ব্যাপক উল্লসিত।
অপশক্তির বিরুদ্ধে সমাবেশ থেকে প্রতিবাদ : গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, আজকে দেশের বৈধ সরকারকে হটাতে ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদ, সা¤প্রদায়িক অপশক্তির যে চক্রান্ত চলছে ছাত্রলীগের সমাবেশ থেকে তার প্রতিবাদ করা হবে। নৌকার অভিযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে তরুণ প্রজন্ম। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। এই সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এই সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী বর্তমান প্রেক্ষাপটে তরুণদের দিকনির্দেশনা দেবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ।
কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান : ছাত্রসমাবেশকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ আশপাশের এলাকায় নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য মোতায়ন করা হয়েছে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবারের (আজ) ছাত্রসমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোনোরকম অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধে আমরা সার্বক্ষণিক টহলে আছি।
এদিকে ছাত্রসমাবেশে সারাদেশ থেকে রাজধানীতে ৫ সহস্রাধিক গাড়ি আসার কথা জানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। যানজটের পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ছাত্রসমাবেশে শৃঙ্খলা রক্ষায় ১০টি সাংগঠনিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে সর্বাবস্থায় শৃঙ্খলা বজায় রাখা, সমাবেশে প্রবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা অনুসরণ করা, নির্ধারিত সময়ে গেট খুললে দ্রুততম সময়ে প্রবেশ করা, সমাবেশস্থল এবং আশপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে সতর্ক থাকা, জনদুর্ভোগ পরিহার করাসহ অযথা যানজট সৃষ্টি না করা। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটালে জড়িত ব্যক্তি বা ইউনিটের প্রতি তাৎক্ষণিক, চূড়ান্ত ও স্থায়ী সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও কড়া হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল