• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

কোরবানির পর টানা কর্মসূচিতে যাচ্ছে আ.লীগ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২৩  

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজপথ। মার্কিন নতুন ভিসানীতির পর রাজনীতির মাঠ দখলের চেষ্টা করছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও বসে নেই। পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা।  এতদিন পাল্টা কর্মসূচি পালন করে আসলেও আসন্ন কোরবানির ঈদের পর টানা কর্মসূচিতে যাচ্ছে দলটি। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকেও সক্রিয় করে কর্মসূচিতে নামানো হচ্ছে।

এমন তথ্য জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই জন প্রেসিডিয়াম সদস্য, একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তিন জন সাংগঠনিক সম্পাদক। তারা বলছেন, মার্কিন ভিসানীতিসহ পশ্চিমা কূটনৈতিক চাপের সুফল ঘরে তুলতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ সংকটসহ নানা ইস্যুতে টানা কর্মসূচি দিচ্ছে বিরোধী দলগুলো। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার ও গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তারা।


আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, সরকারি দলের নেতাকর্মীদের মানোবল দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে বিএনপিসহ বিরোধীরা। এর অংশ হিসেবে তারা মাঠ দখলে কর্মসূচি দিচ্ছে। তারা ক্ষমতায় আসার বার্তাসহ আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছে। বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে এবং নিজেদের নেতাকর্মীদের মানসিকভাবে শক্তিশালী রাখতে বর্তমানে পাল্টা কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী লীগ। তাতে বিরোধীদের রাজনৈতিক দুর্বলতা তুলে ধরা, শেখ হাসিনার সরকারের আবারও ক্ষমতায় আসারও মতো পাল্টা  বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে।


তারা আরও বলেছেন, কোরবানি ঈদের পর বিরোধীরা যে ধরনের কর্মসূচিতে যাবে, তার পাল্টা-কর্মসূচি দেবে আওয়ামী লীগ। এর সঙ্গে আরও  কিছু কর্মসূচি দেওয়া হবে। রাজধানীর বাইরে বিভাগীয় শহর থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে এসব কর্মসূচি। বক্তব্যে আক্রমণাত্মক হলেও বিরোধীদের সঙ্গে কোনও ধরনের সংঘাতে জড়াবে না আওয়ামী লীগ। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কর্মসূচি বদলাতেও পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি চীন সফর করে এসেছে। জুলাই মাসে ভারত সফরে যাবে আরেকটি প্রতিনিধি দল। এরপর সেপ্টেম্বরে দিল্লি সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দুই সফর হওয়ার আগ পর্যন্ত রাজপথে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের কৌশলে থাকবে আওয়ামী লীগ। পরবর্তী কর্ম-কৌশল ঠিক করা হবে দিল্লির সঙ্গে বোঝাপড়ার ওপর নির্ভর করে।


গত ২৪ মে এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে সেপ্টেম্বরে ভারত সফরে যাবেন। এরমধ্যে আমাদের পার্টি টু পার্টি (বিজেপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে) আলোচনা হবে। সেজন্য ভারতের বিজেপি থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।  আশা করছি, জুলাই মাসে যাবো।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচন নাকের ডগায় চলে আসায় তৃণমূল পর্যন্ত কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে মাঠ নিজেদের দখলে রাখা, ভোটারদের নির্বাচনমুখী করা, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরা এবং বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে বিরোধীদের কোনও ফাঁদে পা দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে যাতে না হয়, সে ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নীতি অনুসরণ করা হবে।

তাদের ভাষ্য, সম্ভাব্য এসব কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে এবং সাধারণ মানুষকে নির্বাচনমুখী করতে চেষ্টা থাকবে। তবে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে— বিদ্যমান ব্যবস্থায় আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য  হবে এবং তাতে আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। একইসঙ্গে বিএনপিসহ বিরোধীদের নির্বাচনে আনার চেষ্টাও অব্যাহত থাকবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের আগে নানা ধরনের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে। বিরোধীদের এসব অপতৎপরতা মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ সতর্ক রয়েছে। এ জন্য নিয়মিত সাংগঠনিক কর্মসূচির পাশাপাশি সময়োপযোগী নতুন আরও কর্মসূচি আসতে পারে।’

দলটির আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে সাংগঠনিক কর্মসূচি বাড়ানোটাই স্বাভাবিক। জনগণের কাছে আমরা বার্তা দিতে চাই, আওয়ামী লীগের বিকল্প নাই। ঈদের পর তৃণমূল থেকে মহানগর পর্যন্ত কর্মসূচি বিস্তৃত করা হবে।’

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল