• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

গ্যাস আমদানি বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলছে

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৩  

বর্তমানে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৪০০ কোটি ঘনফুট। সরবরাহ গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুট। ২০৩০ সালে চাহিদা বেড়ে হতে পারে ৫৬০ কোটি ঘনফুট। স্থলভাগে ৪৬টি কূপ উন্নয়নের মাধ্যমে দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এখান থেকে আগামী দুই বছরে মিলতে পারে সর্বোচ্চ ৬০ কোটি ঘনফুট। বাড়তি চাহিদা মেটাতে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এজন্য নতুন তিনটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ এবং আমদানির উৎস বৃদ্ধির বিষয়ে কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার পেট্রোবাংলায় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সরকারি কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, স্থলভাগে নতুন করে কোনো গ্যাসক্ষেত্র পাওয়া গেলে পাইপলাইন স্থাপনসহ তা সরবরাহ করতে অন্তত তিন বছর লাগবে। সমুদ্রে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হলে তা সরবরাহে ৮ থেকে ১০ বছর লাগতে পারে। এজন্যই এলএনজি আমদানি বাড়ানো দরকার।


বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে আনার পর তা রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহ করতে হয়। এর জন্য দেশে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল আছে মহেশখালীতে। একটি পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি ও আরেকটি দেশীয় সামিট গ্রুপ। এ দুই টার্মিনাল দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ সরবরাহ সক্ষমতা ১০০ কোটি ঘনফুট। গড়ে দেওয়া হয় ৭০-৮০ কোটি ঘনফুট। ২০১৮ সাল থেকে দেশে এলএনজি আমদানি শুরু হয়। কাতার ও ওমানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি দুটি চুক্তি আছে পেট্রোবাংলার। বছরে ৫৬টি এলএনজি কার্গো সরবরাহ করে তারা। চুক্তি অনুসারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে আনুপাতিক হারে এ দাম নির্ধারিত হয়। এতে করে খোলাবাজার (স্পট মার্কেট) এলএনজির দাম চড়া হলেও তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায়। পাশাপাশি চুক্তিবদ্ধ ২১টি কোম্পানির মাধ্যমে চাহিদা অনুসারে স্পট মার্কেট থেকে নিয়মিত এলএনজি কেনে সরকার। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের জুলাইয়ের খোলাবাজার থেকে আমদানি বন্ধ করা হয়। টানা সাত মাস বন্ধ থাকার পর গত ফেব্রুয়ারি থেকে আমদানি শুরু হয়েছে। জুন পর্যন্ত ১২টি কার্গো আমদানি করা হবে। এখন স্পট মার্কেটে তুলনামূলক দাম কম। কয়েক মাস আগেও প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম স্পট মার্কেটে ছিল ৪০-৫০ ডলার । পেট্রোবাংলা সর্বশেষ যে দুটি কার্গো কিনেছে তাতে দাম পড়েছে ১৩-১৪ ডলার। 

সভায় জানানো হয়, নতুন করে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কথা হচ্ছে। পায়রায় এক্সিলারেট এনার্জি এবং মহেশখালীতে সামিট গ্রুপ এই টার্মিনাল নির্মাণ করতে পারে। এক্সিলারেটের সঙ্গে আগামী দু-এক মাসের মধ্যেই চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। সামিটের সঙ্গে কিছু শর্ত নিয়ে আলোচনা চলছে। এই টার্মিনালগুলোর সক্ষমতা হবে দিনে ৫০ থেকে ১০০ কোটি ঘনফুট। পায়রায় পাইপলাইন না থাকায় গ্যাস পেতে তিন বছর লাগতে পারে। এর বাইরে মাতারবাড়ীতে একটি ল্যান্ডবেজড টার্মিনাল নির্মাণের বিষয়ে আলোচানা এগোচ্ছে। কয়েকটি কোম্পানির সংক্ষিপ্ত তালিকা  করা আছে। জমির বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তাদের অনাপত্তি পেলেই চূড়ান্ত চুক্তির দিকে এগোবে পেট্রোবাংলা। এটি প্রথমে ১০০ কোটি ঘনফুট সক্ষমতার করা হবে, পরে আরও ১০০ কোটি ঘনফুট সক্ষমতা যুক্ত হবে।

টার্মিনাল নির্মাণের পাশাপাশি এলএনজি কেনার নতুন উৎস নিয়েও কাজ করছে পেট্রোবাংলা। কাতার ও ওমানের সঙ্গে নতুন করে আরও এলএনজি আমদানির বিষয়ে চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রথমে শর্তাবলি নিয়ে অনুস্বাক্ষর হতে পারে। এর পর কী পরিমাণ এলএনজি আসবে, কত দাম হবে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। 

দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। স্থলভাগে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খনন ও সংস্কারের (ওয়ার্কওভার) পরিকল্পনা নেয় পেট্রোবাংলা। এটি এখন ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি কূপের খনন ও ওয়ার্কওভার শেষ হয়েছে। চারটির কার্যক্রম চলমান। এ ছাড়া ১৬টি কূপের উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ২৮টি করতে পারবে দেশীয় কোম্পানি বাপেক্স। বাকি কূপগুলোর কাজ বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে করানো হবে। বেসরকারি খাতে গ্যাস আমদানি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। পাহাড়ে গ্যাস অনুসন্ধানে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন মডেল চুক্তি (পিএসসি) অনুমোদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মাল্টিক্লায়েন্ট সার্ভের রিপোর্ট বছর শেষে হাতে আসবে। এর পর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র ডাকা হবে। এখন দেশীয় উৎস থেকে আসছে ২২৫ থেকে ২৩০ কোটি ঘনফুট। 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল