• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

মায়াদ্বীপ: শিক্ষার্থী মায়েদের চিন্তামুক্তির কারণ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০২৩  

কতো হেমন্ত এল, কতো বসন্ত গেল। কিন্তু মায়ের চোখে শুধুই বর্ষা। মা যেখানেই থাকুক, সে চায় তার সাত রাজার ধন-বুকের মানিক যেন ভালো থাকে। মা যত দূরে থাকুক না কেন, তার দুইটি চোখ সব সময় সন্তানেরই থাকে। 
একজন বিবাহিত মেয়ে শিক্ষার্থীর জীবনেও এমন সময় আসে। শিক্ষাজীবনের নিয়ম হিসেবেই ‘মা’ পরীক্ষার হলে থাকে ঠিকই। কিন্তু, তার মন পড়ে থাকে তার সন্তানের কাছে। পরীক্ষার ঐ চার ঘণ্টা যেন মায়ের কাছে চার যুগ মনে হয়।

পরীক্ষার হলরুমে পরীক্ষার্থীর চোখ হঠাৎ যেন মায়ের চোখ হয়ে উঠে। পরীক্ষার খাতায় মন বসে না, ছলছল চোখ যেন দৃষ্টি মেলতে চায় না। মায়ের চোখ পরীক্ষার খাতায় আটকে থাকলেও মন যে অন্যত্র। 

তবে মায়াদ্বীপের মায়া জড়ানো ঘরের কারণে পরীক্ষার্থী মা নিশ্চিন্ত হয়। নিশ্চই সেখানে তার সন্তানটি নিরাপদে আছে। সরকারি তিতুমীর কলেজে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অভিভাবকসহ সন্তানের নিরাপত্তার জন্যই এই মায়াদ্বীপ। 

‘মায়াদ্বীপ’ সরকারি তিতুমীর কলেজের একটি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র।  মায়াদ্বীপের নামকরণ করেছেন কলেজটির প্রাক্তন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোসা. তালাত সুলতানা। কারণ এ নামে যে জড়িয়ে আছে মায়া, লেপটে আছে মমতা, আছে নিরাপত্তা। তবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আশরাফ হোসেন সরকারি তিতুমীর কলেজে দেশের প্রথম শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।

বগুড়া থেকে মোছা. রাজিয়া খাতুন এসেছেন মেয়ের পরীক্ষার সময়ের সঙ্গী হতে। তার মেয়ে পড়েন সরকারি বাঙলা কলেজে। পরীক্ষার দেওয়ার বদৌলতে এসেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজে। সঙ্গে তিন বছরের নাতি। রৌদ্রময় দিনে তিনি এসেছেন মায়াদ্বীপে দুদণ্ড সময় বিশ্রাম নিতে।

তিনি বলেন, আমি আমার মেয়ের সঙ্গে এসেছি। আমার মেয়ের একটি বাচ্চা আছে। পরীক্ষা চলাকালে নাতি আমার কাছেই আছে। তার মায়ের অবর্তমানে আমিই এখন তার দেখাশোনা করছি। এত গরমে মানুষের কোলাহলে বাচ্চা নিয়ে কোথাও বিশ্রামের উপায় নেই। তাই এসেছি মায়াদ্বীপে। এই শিশুকেন্দ্রটি অনেকটা নিজের বাড়ির মতোই। পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ হওয়ায় এখানে খুব সহজেই মা এবং তাদের বাচ্চারা বিশ্রাম নিতে পারে। কোলের বাচ্চাদের দুগ্ধ পান করাতে পারে।

সরকারি তিতুমীর কলেজে পরীক্ষা দিতে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা চলাকালে বাচ্চা নিয়ে দুশ্চিন্তা হয়। সঙ্গে কাউকে নিয়ে আসি, সাহায্য করার জন্য। তবে কলেজে তাদের বিশ্রামের জন্য একটি কেন্দ্র আছে। এখানে তারা বিশ্রাম নিতে পারে। এটা ভেবে মনে একটু শান্তি লাগে, চিন্তামুক্ত থাকতে পারি।

কেন্দ্রটির দায়িত্বে রয়েছেন কলেজের অফিস সহকারী রোকসানা আক্তার। তিনি বলেন, কলেজ ও পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রটি খোলা থাকে। এখানে শিক্ষার্থী মায়েদের সন্তান ও অভিভাবক বিশ্রাম নিতে পারে। আবার কলেজের অন্যান্য সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সন্তান ও অভিভাবকদের জন্য কেন্দ্রটি খোলা থাকে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল