• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

টেক্সটাইল খাত থেকে সরছে চীন॥ সুযোগ নিতে চায় বাংলাদেশ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩  

পরিবেশগত কারণে টেক্সটাইল থেকে সরে যাচ্ছে চীন। ফলে বাংলাদেশের জন্য ভালো একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ চীন থেকে গত কয়েক বছরে অনেক ক্রয়াদেশ পাওয়া গেছে। আগামী আট বছরে এর পরিমাণ আরও বাড়বে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে পোশাক শিল্প খাত থেকে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে পোশাক উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিজিএমইএ। সরকারের নীতি সহায়তার সঙ্গে গ্যাস, বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিক থাকলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব।
রবিবার চট্টগ্রামের বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথাগুলো বলেন সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান। বক্তব্যে তিনি পোশাক শিল্পে অর্জন, বর্তমান অবস্থা, বিভিন্ন সমস্যা এবং সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরেন। করোনা পরিস্থিতি এবং এর পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থান ও অগ্রগতির বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বর্তমানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ডেনিমের ক্ষেত্রে চীনকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এখন প্রথম স্থানে। সরকারের নীতিগত সহযোগিতায় ইউরোপের বাজারে আমরা অতি শীঘ্রই একনম্বর স্থান দখল করতে সমর্থ হব।
পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমেই শক্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএসজিবিসি প্রত্যায়িত সর্বাধিকসংখ্যক সবুজ কারখানার আবাসস্থল বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ ও স্বচ্ছ পরিবেশবান্ধব পোশাক প্রস্তুতকারক হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। আমাদের এখন ১৮৩টি লিড গ্রিন কারখানা রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে ৬০টি প্লাটিনাম রেটেড এবং ১০৯টি গোল্ড রেটেড। ২০২২ সালে আমাদের ৩০টি কারখানা গ্রিন হয়েছে। কোনো একক বছরে এটাই সর্বোচ্চসংখ্যক গ্রিন কারখানার সংখ্যা। তবে আমরা এখানে থেমে যেতে চাই না, গ্রিন কারখানার সংখ্যা আরও বাড়াতে চাই।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিজিএমইএর এই নেতা জানান, ২০২২ সালে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প রেকর্ড ৪৫ দশমিক ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে এবং ২০২১ সালের তুলনায় পোশাক রপ্তানি ২৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়া এবং অপেক্ষাকৃত উচ্চমূল্যের পোশাক রপ্তানি। বক্তব্যে তিনি করোনা পরিস্থিতি এবং বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থার কারণে জ্বালানি সংকটসহ নানাবিধ সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কারখানাগুলো উৎপাদন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। সংকটময় এ মুহূর্তে উৎসে কর কমানো হলে তা শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হবে।
পোশাক ব্যবহারে মানুষের পছন্দ পাল্টে যাওয়ার বিষয়ে বিজিএমইএ নেতারা জানান, টেকসই হওয়ার কারণে ক্রেতারা এখন নন-কটন পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। টেক্সটাইল খাতের মধ্যে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি খাত হচ্ছে ম্যান-মেড ফাইবারভিত্তিক ইয়ার্ন ও ফেব্রিকস, যেমনÑ পলিস্টার, ভিনকজ, স্প্যানডেক্স ও মেলাঞ্জ। বিশ্ব বাজারে কটন বস্ত্রের শেয়ার এবং পোশাকের ব্যবহার মাত্র ২৬ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশের রপ্তানি পোশাকের ৭৫ ভাগই এখনোও কটনে আবদ্ধ। আন্তর্জাতিক বাজারে অবস্থানের উন্নতি এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য এদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রকল্পের উল্লেখ করে সন্তোষ প্রকাশ করে বিজিএমইএ। নেতারা বলেন, বে-টার্মিনাল প্রকল্প, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পসহ বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বড় জাহাজগুলো ভিড়তে পারবে। এতে কম খরচে বেশি পণ্য পরিবহণ সম্ভব হবে। গভীর সমুদ্রবন্দর হলে সরাসরি জাহাজের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল