• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

কাবিনবিহীন বিয়ে: স্বামীর থেকে যায় আরো বিয়ের সুযোগ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৩  

মানুষের জীবনে ‘বিয়ে’ হচ্ছে ধর্ম ও সমাজ অনুমোদিত একটি চুক্তি। বিভিন্ন ধর্মে ও সম্প্রদায়ে বিয়ের বিভিন্ন রীতি-প্রথা-আনুষ্ঠানিকতা প্রচলিত। বিয়ে মানবধর্মীয় রীতি হলেও আধুনিক সভ্যতায় এটি একটি আইনি প্রথাও বটে। বিয়ে বহির্ভূত যৌনসংগম অবৈধ বলে স্বীকৃত। আইনে যা ব্যভিচার হিসেবে অভিহিত একটি পাপ ও অপরাধ।
এবার আসল কথায় আসা যাক। বিয়ে মানুষের জীবনের সবচেয়ে সুখকর অনুভূতি ও প্রজন্ম বিস্তারের একমাত্র উপায়। তবে কখনো কখনো তা অভিশাপরূপে দেখা দেয়। এ কারণেই বিয়ে রেজিস্ট্রেশন বা কাবিন থাকাটা জরুরি।

চলুন, আজ জেনে নেই কাবিনবিহীন বিয়ের কুফলগুলো। 

মোহরানা, খোরপোষ ও দাম্পত্য অধিকার দিতে বর কখনো যদি অস্বীকার করেন, তবে বিষয়টি গড়ায় আদালতে। বিয়ে প্রমাণ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় নারীকে। 

১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান অনুযায়ী প্রতিটি মুসলিম বিয়ে রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক। বিয়ে রেজিস্ট্রি না করলে স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকার, মৃতের সন্তানদের উত্তরাধিকার, খোরপোষ ও মোহরানার অধিকার থেকে নারী বঞ্চিত হতে হবে। 

এছাড়া বিয়ের যদি রেজিস্ট্রি না থাকে, তবে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে বা স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে বিয়ে করার উদ্যোগ নিলে স্ত্রী আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন না। 

১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইনে (সংশোধিত ৮ মার্চ, ২০০৫) বলা হয়েছে, যদি কোনো দম্পতি বিবাহ রেজিস্ট্রি না করে, তবে তিনি এ আইনের অধীনে অপরাধ করেছেন বলে বিবেচিত হবে। এই অপরাধের জন্য আইন কর্তৃক নির্ধারিত শাস্তি হচ্ছে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা আর্থিক জরিমানা। 

বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে সরকারের নির্ধারিত ফরমে লিখিত বর ও কনের বিয়ে-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি সম্বন্ধে আইনগত দলিল যা কাজী অফিসে সংরক্ষিত থাকে। সরকার কাজীদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করার জন্য অনুমতি বা লাইসেন্স দিয়ে থাকে। আইনানুযায়ী বিয়ের আসরেই বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হয়। বিয়ের আসরে সম্ভব না হলে বিয়ে অনুষ্ঠানের দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হয়। কাজীকে বাড়িতে ডেকে এনে অথবা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা যায়। এ ছাড়াও কাবিননামার সব কলাম পূরণ করার পর বর-কনে, উকিল, সাক্ষী ও অন্যান্য ব্যক্তিকে স্বাক্ষর দিতে হয়।

ইসলাম ধর্মে বিয়ে নিবন্ধন আইন থাকলেও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে বিয়ে নিবন্ধন আইন ছিল না। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিয়ে নিবন্ধনের বিধান ঐচ্ছিক রেখে হিন্দু বিয়ে নিবন্ধন আইন তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বিদেশ ভ্রমণ, অভিবাসন, চাকরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিয়ে সম্পর্কিত দালিলিক প্রমাণ এখন অপরিহার্য বিষয়। 

তাই, বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে একজন নারী তার দাম্পত্য জীবনের অনেক জটিলতা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন। অসহায়ত্ব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন। এ কারণেই জরুরি বিয়ে রেজিস্ট্রেশন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল