• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

হরিণা ফেরিঘাটে টনে টনে ইলিশ বিক্রি

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দক্ষিণাঞ্চলের আমদানি করা ইলিশ বিক্রি হলেও স্থানীয় আড়তগুলোতে বিক্রি হয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশ। এসব ইলিশ জেলেরা সরাসরি নদী উপকূলীয় ছোট আড়তগুলোতে এনে বিক্রি করেন। এর মধ্যে সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাটে ইলিশের ভর মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই টন (৫০ মণ) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব ইলিশের খুচরা ক্রেতাই বেশি।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হরিণা ফেরিঘাটের মৎস্য আড়তে গিয়ে দেখা গেছে বেশিরভাগই খুচরা ক্রেতা। এছাড়া অল্প কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা জেলেদের কাছ থেকে ইলিশ কিনে শহরের বাজারগুলোতে এবং পরিচিতি আত্মীয় স্বজনের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান।

ঘাটে ইলিশ বিক্রি করতে আসা সদরের লক্ষ্মীপুর ইউপির দোকানঘর এলাকার জেলে লোকমান ও বারেক খান জানান, তারা সকালে ছোট নৌকা নিয়ে মেঘনায় ইলিশ আহরণে নেমেছেন। দুপুর পর্যন্ত যে কয়টি ইলিশ পেয়েছেন বিক্রি করেছেন ১৫০০ টাকা। খরচ গিয়ে তাদের দুজনের থাকবে ১১ শ টাকা।

একই ইউনিয়নের বহরিয়া এলাকার জেলে আমিনুল ইসলাম ও আবদুল জলিল জানান, তারাও সকাল থেকে পাওয়া ইলিশ বিক্রি করেছেন ১৩০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে তেমন ইলিশ পাওয়া যায়নি। তবে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে কিছু ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। যারা বড় নৌকা নিয়ে ইলিশ ধরতে সাগর এলাকায় যান তারা পরিমাণে বেশি পান। ওই সব নৌকায় জেলে থাকে ১০-১৫ জন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার নয়া হাট থেকে এই আড়তে ইলিশ কিনতে আসা তসলিম হোসেন বলেন, এখানে আসলে জেলেদের ধরে আনা তাজা ইলিশ কেনা যায়। দাম বেশি হলেও ভেজাল নেই। এক কেজি ওজনের ইলিশ আজকে কিনেছি ১৭০০ টাকা করে। ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হয় ৫৫০-৭০০ টাকা। সাইজ অনুযায়ী প্রতি হালি ইলিশের দাম উঠে।

হরিণা আড়তের প্রবীণ মৎস্য ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সৈয়াল জানান, ইলিশ মৌসুমে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার দুই পাড়ে কমপক্ষে ২০০ ছোট বড় আড়তে ইলিশ বিক্রি হয়। এখন ইলিশ কম-বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে নদীতে পানি কমে যাচ্ছে। এরপর আগামী মাসের শুরুর দিকে শুরু হবে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান। তখন জেলের অবসর হয়ে পড়বে। যদি ভাগ্য ভালো হয় আরো ২০-২৫ দিন জেলেরা ইলিশ ধরতে পারবে।

অপর আড়তদার মোক্তার হোসেন বলেন, এই আড়তে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই টন ইলিশ বিক্রি হয়। অর্থাৎ ৩৭-৫০ মণ। গড়ে ১ হাজার টাকা কেজি মূল্য হলে ৫০ মণের আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ২০ লাখ টাকা। ক্রেতাদের মধ্যে খুচরা ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। এখানে জেলেরা ইলিশ নিয়ে আসলে হাঁকডাক দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায়। ইলিশ জমিয়ে রাখার কোনো সুযোগ থাকে না। যে কারণে আমাদেরকে ইলিশ বরফ দিয়ে রাখতে হয় না। তাজা ইলিশ কেনার জন্য জেলা সদর, শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা থেকে অনেক ক্রেতা আসে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের আড়তে আজকে ১ কেজি ১০০-২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬৫০ থেকে ১৭০০ টাকা। আর ৭০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ প্রতিকেজি ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হয় ৫৫০-৭০০ টাকা।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তারা এখন কম-বেশি ইলিশ পাচ্ছে। যাদের ইলিশ ধরার জালের ফাঁদ বড় তারা বড় সাইজের ইলিশ পায়। আর যারা কারেন্টজাল অথবা অন্য জাল দিয়ে মাছ ধরে তারা ছোট ইলিশ পায়। তবে অনেকে জেলে ইলিশ পেলেও বলতে চায় না পেয়েছি। চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাগরের ইলিশ আসলে স্থানীয় আড়তগুলোর ইলিশ সব পদ্মা-মেঘনার। এসব ইলিশের স্বাদ বেশি হওয়ায় চাহিদাও বেশি।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল