• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

মা-বাবার বিচ্ছেদ: শিশুকে রাখছেন না নানিও, দায়িত্ব নিলেন মেয়র

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩  

মনোবিদ-সমাজবিজ্ঞানীরা প্রায়ই বলে থাকেন, স্বামী-স্ত্রীর কলহ বা বিচ্ছেদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হয় তাদের সন্তানেরা। বিশেষ করে সন্তান যদি হয় শিশু। এমনই এক পরিণতির শিকার জামালপুরের শিশু সুমির। বিচ্ছেদের পর আলাদা সংসার করছেন তার মা-বাবা। সুমির থাকছিল তার নানির কাছে। কিন্তু এখন নানিও রাখছেন না শিশুটিকে। শেষ পর্যন্ত তার দায়িত্ব নিয়েছেন জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানুয়ার হোসেন ছানু। জামালপুর শহরের পশ্চিম ফুলবাড়িয়া এলাকায় নানার বাড়ি থেকে গত ১১ জানুয়ারি ‘হারিয়ে যায়’ সুমির। পরে তাকে খুঁজে পান শহরের ভ্যানগাড়ি চালক জুয়েল মিয়া। তিনি শিশু সুমিরকে ৯ দিন তার কাছে রেখে ঠিকানা খোঁজ করেন। এরপর মঙ্গলবার সকালে নানি ফরিদা বেওয়ার কাছে সুমিরকে ফিরিয়ে দিতে যান। কিন্তু ‘অভাবের সংসারে’ নাতিকে নিতে অস্বীকার করেন ফরিদা।
এ বিষয়ে ভ্যানগাড়ি চালক জুয়েল মিয়া দৈনিক বাংলাকে বলেন, অনেক খোঁজাখুজির পর নানা-নানির সন্ধান পেয়ে তাদের কাছে দিতে গেলেও তারা নিতে অস্বীকার করেন। জুয়েল মিয়ার ভাষ্য, তার কাছে শিশুটির নানি ফরিদা বেওয়া বলেন, সুমিরের বাবা আক্কাস অটোবাইক চালক। মায়ের নাম সুফিয়া। তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয় বেশ কয়েক বছর আগে। আক্কাস আলাদা সংসার পাতেন এবং কোনোদিন সন্তানের খোঁজ নেননি। সুফিয়াকেও আরেক জায়গায় বিয়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে আমি সুমিরকে লালন-পালন করে আসছিলাম।
শিশুটিকে ঘরে ফেরত না নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অভাবের সংসারে নিজের খাওনই জোগাড় করতে পারি না, নাতিকে পালবো ক্যামনে?
আক্কাসের ঠিকানা বা পরিচয় জানতে চাইলেও ফরিদা বেওয়ার কাছে নেই বলে জানান।
পরে ভ্যানচালক জুয়েল মিয়া শিশুটিকে নিয়ে পৌর মেয়র ছানুয়ার হোসেন ছানুর কাছে যান। শিশু সুমিরের এই পরিণতি শুনে মর্মাহত হন মেয়র। ছানু নিজেই শিশুটির দায়িত্ব নেন।
এ বিষয়ে মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, শিশুটির দায়িত্ব নিয়ে মেয়র ছানুয়ার হোসেন ছানু মানবতার উজ্জ্বল নজির গড়েছেন। মেয়রের মতো এভাবে দায়িত্বশীল লোকজন যদি কুড়িয়ে পাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া পথশিশুদের পাশে দাঁড়ান, সেটা সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানুয়ার হোসেন ছানু দৈনিক বাংলাকে বলেন, আমি সুমিরের জীবন কাহিনি শুনে দায়িত্ব নেয়ার সিদ্ধান্ত নেই। তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো। একদিন বড় হয়ে শিশু সুমিরই অবহেলিত শিশুদের পাশে দাঁড়াবে, সামাজিক ও মানবিক কাজ করে সমাজে আলো ছড়াবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল