• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

সরকারের ব্যপক উন্নয়নে বদলে গেছে জামালপুর

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২২  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভিশন-২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে এলজিইডির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের মাধ্যমে নাগরিক সুবিধা প্রদানে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে এলজিইডি জামালপুর।
একইসঙ্গে কর্ম পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে জামালপুর এলজিইডি অফিস প্রাঙ্গণের সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে।

জামালপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত পাকা সড়ক প্রায় ৪০ কিলোমিটার, নির্মিত ইউনিয়ন পাকা সড়ক প্রায় ৫৫ কি.মি, গ্রামীণ পাকা সড়ক প্রায় ৯০ কি.মি, নির্মিত ব্রিজ ও কালভার্ট প্রায় ৮৫০ মিটার, উপজেলা কমপ্লেক্সে ৩টি, বৃক্ষরোপণ প্রায় ৭৫০০টি, রক্ষণাবেক্ষণকৃত পাকা সড়ক প্রায় ২২৫ কি.মি, মোবাইল মেইটেনেন্স দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণকৃত পাকা সড়ক প্রায় ১৪০ কি.মি, রক্ষণাবেক্ষণকৃত ব্রিজ ও কালভার্ট প্রায় ৫৫ কি.মি, খননকৃত সেচ খাল প্রায় ১৫ কি.মি, নির্মিত ও সংস্কারকৃত বাঁধ প্রায় ১৬ কি.মি, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ১৪টি, গ্রামীণ হাটবাজার ৬টি, সাইক্লোন সেন্টার ১টি, সৃষ্ট কর্মসংস্থান প্রায় ১০ লাখের ও বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এরমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর দিয়ে নান্দিনা জিসি হতে লসমনপুর  আরএইচডি রোড ভায়া লক্ষ্মীরচর ইউপি সড়কে ৬০৬ মিটার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে। এ ব্রিজের কাজ সম্পাদিত হলে ওই এলাকার জনগণ খুব সহজেই শেরপুর জেলায় যাতায়াত এবং উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন করতে পারবে।

এদিকে নান্দিনা-লক্ষ্মীরচর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরের খবরে চরবাসীর মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। চরের লোকজন জানান, সেতুটির জন্য আমরা দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দাবি জানিয়ে আসছি। অবশেষে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও দেশরত্ন শেখ হাসিনা নান্দিনা- লক্ষ্মীরচর সেতুর জন্য ১০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। সম্পূর্ণ কংক্রিট গার্ডার সেতু হবে এটি। সেতুর উভয় পাশে থাকবে এ্যাপ্রোচ রোড। লক্ষ্মীরচর সেতুর প্রান্ত থেকে বারুয়ামারী বাজার পর্যন্ত প্রশস্ত নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে। সেতুর দক্ষিণ প্রান্ত নান্দিনা অংশে সেতুটির মুখ গো-হাটায় নামিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে একটি গোলচত্বর তৈরি করা হবে।

জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন বলেন, নান্দিনা-লক্ষ্মীরচর সেতু নির্মিত হলে চরবাসীর বহু যুগের ভোগান্তির অবসান হবে। তারা অতি সহজেই সেতুর উভয় দিকে চালাচল করতে পারবে। চরে উৎপাদিত কৃষিপণ্য দ্রুত ও সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে সক্ষম হবে। পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে।

৩নং লক্ষ্মীরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী তারা ও সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, নান্দিনা- লক্ষ্মীরচর সেতুর জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা বির্নিমাণে এগিয়ে যাচ্ছেন। উন্নয়নের এ গতি  অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াত পারবে।

জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বেলাল জানান, নান্দিনা-লক্ষ্মীরচর সেতুর জন্য প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়াটা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এজন্য আমরা সরকার প্রধান শেখ হাসিনার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।
এছাড়া শহরের কেন্দ্রে দয়াময়ী মোড়ে চলমান শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লীর পূর্ত কাজ এরমধ্যে শেষ হয়েছে। বর্তমানে সেখানে দোকান বরাদ্দের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। একইসঙ্গে ৪৫ মিটার ব্যাসের দেশের বৃহত্তম ফেইরিস হুইল, থ্রিডি সিনেপ্লেক্স, নাইন-ডি সিনেপ্লেক্স, ওয়াটার ফাউন্টেনের কাজ দ্রুত গতিতে চলমান রয়েছে। জামালপুরের সংস্কৃতিমনা জনগণ তাদের হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতির মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে পারবে। একইসঙ্গে জামালপুরসহ আশেপাশের জেলার জনগণ অবকাশ যাপনের জন্য একটি নান্দনিক পরিবেশে পাবে।

ইসলামপুর উপজেলায় ইসলামপুর হেড কোয়ার্টার থেকে গুঠাইল জিসি প্রায় ৮ হাজার ৭৬০ মিটার রাস্তার কাজটি সফলভাবে গত অর্থবছরে সম্পন্ন হয়েছে। এতে গুঠাইলবাসীর দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হয়েছে। একইসঙ্গে যমুনা নদীর তীরবর্তী হওয়ার কারণে বর্তমানে এটি যমুনার গুঠাইল ঘাটে যাতায়াতের প্রধান রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

মেলান্দহ উপজেলার মহিরামকুল আরএইচডি থেকে হাজীপুর জিসি ভায়া ঝাউগড়া বাজারের ১১ হাজার ৭৫০ মিটার রাস্তা মেরামতের কাজটিও এরমধ্যে শেষ হয়েছে। ওই রাস্তাটি মেরামতের ফলে খুব সহজেই মেলান্দহ উপজেলার সঙ্গে মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ি ও জামালপুর সদর উপজেলার যাতায়াতের পথ সুগম হয়েছে। এছাড়াও ওইসব এলাকার জনগণ খাদ্য, বস্ত্র থেকে শুরু করে খুব সহজেই জামালপুর শহরে গিয়ে শিক্ষা, চিকিৎসা সেবাসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিতে পারছেন। ফলে বদলে গেছে ওসব এলাকার সার্বিক চিত্র।

আরো জানা যায়, গত এক বছরে জামালপুর এলজিইডি মাধ্যমে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়ক, সেতু, কালভার্ট, খাল খনন হওয়ায় সড়ক যোগাযোগে উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রেও অগ্রগতি হচ্ছে বলে এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং জামালপুর এলজিইডির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।

জামালপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, ক্রমবর্ধমান নগরে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন, পূর্ত কাজের গুণগত মানোন্নয়ন, সব কাজে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এলজিইডি, জামালপুরের সব কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নিরন্তর কাজ করে চলেছেন।

দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকৌশল সংস্থা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সব কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করছেন জামালপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান সাদেক। তিনি সরকারের সব প্রকার উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। এছাড়াও জামালপুর পল্লী ও শহর এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে, দারিদ্র বিমোচনে, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারের রোল মডেলের দৃষ্টান্ত স্থাপনের সঙ্গে এলজিইডির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার দাবি জানান।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল