• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ফুড ডেলিভারিম্যান থেকে ফাস্ট বোলিং ডেলিভারি গাই মিকেরেন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২৩  

গত বছরের নভেম্বরে, নেদারল্যান্ডস টি২০ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে রীতিমতো চমকে দিয়েছিল। গত ১৭ অক্টোবর আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের পঞ্চদশ ম্যাচের রেজাল্টও বেশ অপ্রত্যাশিত ছিল। কেননা ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ‘আন্ডারডগ’ নেদারল্যান্ডসের কাছে ৩৮ রানে হেরে যায় আসরের অন্যতম ফেভারিট দক্ষিণ আফ্রিকা। এই দুটি ম্যাচেই ডাচ্ দলের গর্বিত সদস্য ছিলেন পল ফন মিকেরেন।

১৭ অক্টোবরের ম্যাচে বোলার হিসেবে ৪০ রানে দুটি উইকেট শিকার করে দলের জয়ের অবদান রাখেন ডান হাতি ফাস্ট মিডিয়াম বোলার মিকেরেন। কিন্তু মাত্র তিন বছর আগেও তিনি ভাবতে পারেননি যে ২০২৩ বিশ্বকাপে ডাচ্ দলের হয়ে খেলবেন। কেননা ওই সময় তিনি ‘উবার ইটস’ প্রতিষ্ঠানের হয়ে বিভিন্ন বাড়িতে খাবার সরবরাহ করেই জীবিকা নির্বাহ করছিলেন! 

ইংলিশ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সমারসেট, ডারহাম এবং গ্লুচেস্টারশায়ারের হযে খেলা ৩০ বছর বয়সী মিকেরেন বলেন, ‘আমি এখন একজন পেশাদার ক্রিকেটার সাত বছর ধরে। তবে কোভিড যখন ২০২০ সালে বিশ্বের ক্রীড়াঙ্গনকে স্থবির করে দিয়েছিল তখন বেশ বিপাকেই পড়ে গিয়েছিলেন মিকেরেন। সংসার চালানোর জন্য তখন বাধ্য হয়ে তিনি বেছে নেন ভিন্ন পেশা। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। ঋণের বোঝা ক্রমেই বাড়ছিল। প্রচুর বিল আসছিল। সবকিছু পরিশোধের জন্য আমাকে ভিন্ন পেশা বেছে নিয়ে অর্থ উপার্জন করতে হয়েছে।’ মিকেরেন আরও যোগ করেন, ‘আমি উবার ইটসের চাকরি নিয়েছিলাম। কারণ আমি তখন আমার নিজের কাজের সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম এবং যখন ক্রিকেট খেলা আবারও শুরুর হবে, তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’

মিকেরেন আরও বলেন, ‘আমার এই জীবন কাহিনীটি বেশ আলোচিত হয়েছিল। এবং বারবার এটা ফিরে আসছে এখনো। এটি আমার কাছে ঠিক আছে, তবে এটি শোনার মতো তেমন রোমান্টিক নয়। আমি ফাস্ট বোলিং ডেলিভারি গাই হিসেবেই ভালো আছি।’

আফগানিস্তান ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হতবাক করার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ডাচদের জয় ছিল এই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় বড় বিপর্যয়। কিন্তু তার আগেই মিকেরেন জোর দিয়ে বলেছিলেন যে জয় আসছে, ‘জয়টা ভালো ছিল, কিন্তু আমাদের জন্য এটা কোন আশ্চর্যের বিষয় ছিল না। কারণ এর জন্য আমরা কঠোর অনুশীলন করেছি এবং ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। এটি তারই ফল। আমরা অবশ্যই জয় উদ্যাপন করেছি এবং খুশি ছিলাম। কিন্তু পরের দিনটি ছিল ভ্রমণময়। এবং শনিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলার জন্য মনোনিবেশ এবং প্রস্তুতি শুরু করি।’

বাড়ি থেকে মঙ্গলবারের বিখ্যাত জয়ের পরে ফোন কল এবং বার্তা এসেছিল, কিন্তু মিকেরেন বলেছিলেন, ‘তারা এটাও জানে যে আমরা এখানে কিসের জন্য এসেছি এবং আমরা এতে বিচলিত হই না।’

ডাচরা ১৯৬৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সহযোগী সদস্য। তারা এবার বাছাইপর্ব খেলে এই বিশ্বকাপে জাযগা করে নিয়েছে, যেখানে তারা দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে। তখন সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছিল ছোট দল নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে এক সময়ের পরাশক্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন শেষ।

কিন্তু মিকেরেন, যিনি হারলেমে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং যেখানে তার বাবা কোনিনক্লিজকে এইচএফসির হয়ে ফুটবল খেলেছিলেন, মনে করেন না তাদের দল ‘ছোট দল’। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘এটি আমাদের আঘাত করে না এবং এসব আমরা অনুভবও করি না। আমরা মোটেও ছোট দল নই।’

৫০ ওভারের বিশ্বকাপে টেস্ট খেলুড়ে কোন দেশের বিপক্ষে (দক্ষিণ আফ্রিকা) এটিই ডাচদের প্রথম জয়। মিকেরেন আরও বলেন, ‘আমরা জানি আমরা কোথায় আছি এবং আমরা কোথা থেকে এসেছি। অবশ্যই আরও বেশি খেলা হলে ভালো হবে। আমি আশাকরি সব দেশ যারা গত বছরগুলোতে এসেছে তারা বুঝতে পেরেছে আমাদের মতো দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে সমৃদ্ধ করছে।’

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল