• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

কাজা নামাজের বিধিবিধান

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২৩  

কেউ যথাসময়ে নামাজ পড়তে ঘুমিয়ে অথবা ভুলে গেলে এবং তার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে, পরে যখনই তার চেতন হবে অথবা মনে পড়বে তখনই ঐ (ফরয) নামাজ কাজা পড়া জরুরি।
প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি কোন নামাজ পড়তে ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পড়ে, তাহলে তার কাফফারা হল স্মরণ হওয়া মাত্র তা পড়ে নেয়া।” অন্য এক বর্ণনায় বলেন, “এ ছাড়া তার আর কোন কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) নেই।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৬০৩ নং)

তিন আরো বলেন, “নিদ্রা অবস্থায় কোন শৈথিল্য নেই। শৈথিল্য তো জাগ্রত অবস্থায় হয়। সুতরাং যখন তোমাদের মধ্যে কেউ কোন নামাজ পড়তে ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পড়ে, তখন তার উচিৎ, স্মরণ হওয়া মাত্র তা পড়ে নেয়া। কেন না, আল্লাহ তাআলা বলেন, “আর আমাকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে তুমি নামাজ কায়েম কর।” (কুরআন মাজীদ ২০/১৪, মুসলিম, মিশকাত ৬০৪নং)

অতএব কাজা নামাজ পড়ার জন্য কোন সময়-অসময় নেই। দিবা-রাত্রের যে কোন সময়ে চেতন হলে বা মনে পড়লেই উঠে সর্বাগ্রে নামাজ পড়ে নেয়া জরুরি। অন্যথা পরবর্তী সময়ের অপেক্ষা বৈধ নয়।

বিনা ওজরে ইচ্ছাকৃত নামাজ ছেড়ে দিলে বা সুযোগ ও সময় থাকা সত্ত্বেও না পড়ে অন্য ওয়াক্ত এসে গেলে পাপ তো হবেই; পরন্তু সে নামাজের আর কাযা নেই। পড়লেও তা গ্রহণযোগ্য নয়। বিনা ওজরে যথাসময়ে নামাজ না পড়ে অন্য সময়ে কাজা পড়ায় কোন লাভ নেই। বরং যে ব্যক্তি এমন করে ফেলেছে তার উচিৎ, বিশুদ্ধচিত্তে তওবা করা এবং তারপর যথাসময়ে নামাজ পড়ায় যত্নবান হওয়ার সাথে সাথে নফল নামায বেশী বেশী করে পড়া। (মুহাল্লা, ফিকহুস সুন্নাহ্‌ ১/২৪১-২৪৩, ফিকহুস সুন্নাহ্‌ উর্দু ৭৮পৃ:, ১নং টীকা, মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ৫/৩০৬, ১৫/৭৭, ১৬/১০৫, ২০/১৭৪, মিশকাত ৬০৩নংহাদীসের আলবানীর টীকা দ্র:)

কেউ অজ্ঞান থাকলে জ্ঞান ফিরার পূর্বের নামাজ কাজা পড়তে হবে না। কারণ, সে জ্ঞানহীন পাগলের পর্যায়ভুক্ত। আর পাগলের পাপ-পুণ্য কিছু নেই। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ৩২৮৭ নং, মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ২৬/১২৮, ফিকহুস সুন্নাহ্‌ ১/২৪১, আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ২/১২৬) ইবনে উমার (রাঃ) অজ্ঞান অবস্থায় কোন নামাজ ত্যাগ করলে তা আর কাজা পড়তেন না। (আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, ফিকহুস সুন্নাহ্‌ ১/২৪১)

অবশ্য নামায পড়তে পারত এমন সময়ের পর অজ্ঞান হলে জ্ঞান ফিরার পর সেই সময়ের নামাজ কাজা পড়া জরুরি। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ২/১২৬-১২৭)

পক্ষান্তরে কোন ব্যক্তি যদি কোন কারণে কোন বস্তু ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় বেহুশ হয়, তাহলে তার জন্য কাজা পড়া জরুরি। (ঐ ২/১৮)

কাজা নামাজ পড়ার জন্য আযান ও ইকামত বিধেয়। কয়েক ওয়াক্তের নামায কাজা পড়তে হলে, প্রথমবার আযান ও তারপর প্রত্যেক নামাজের জন্য পূর্বে ইকামত বলা কর্তব্য।

এক সফরে আল্লাহর রসূল (ﷺ) সহ্‌ সাহাবাগণ ঘুমিয়ে পড়লে ফজরের নামাজ ছুটে যায়। তাঁদের চেতন হয় সূর্য ওঠার পর। অতঃপর একটু সরে গিয়ে তাঁরা ওযূ করেন। বিলাল (রাঃ) আযান দেন। (মুসলিম, সহীহ ৬৮১, আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান) অতঃপর সুন্নত কাযা পড়ে ইকামত দিয়ে ফজরের ফরয কাজা পড়েন। (বুখারী ৩৪৪, মুসলিম, সহীহ ৬৮০ নং, নাইলুল আউতার, শাওকানী ২/২৭)

খন্দকের যুদ্ধের সময় মহানবী (ﷺ) ও সাহাবাগণের চার ওয়াক্তের নামাজ ছুটে গেলে গভীর রাত্রিতে তিনি বিলাল (রাঃ) কে আযান দিতে আদেশ করেন। (শাফেয়ী, ইবনে খুযাইমাহ্‌, সহীহ, ইবনে হিব্বান, সহীহ) অতঃপর প্রত্যেক নামাজের পূর্বে ইকামত দিতে বলেন। এইভাবে প্রথমে যোহ্‌র, অতঃপর আসর, মাগরেব ও এশার নামায পরপর কাজা পড়েন। (নাসাঈ, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ, বায়হাকী প্রমুখ, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ১/২৫৭)

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল