• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

‘অশান্তি সৃষ্টি করে দ্বীনের প্রচার হয় না’

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮  

‘অশান্তি সৃষ্টি করে দ্বীনের প্রচার হয় না’

‘অশান্তি সৃষ্টি করে দ্বীনের প্রচার হয় না’

আশংকা ছিল, প্রত্যাশা ছিলো না এমন কিছু ঘটুক। তবুও দেখতে হলো অনাকাঙ্খিত এই দৃশ্য। দ্বীনের ফেরিওয়ালা সারাদিন চিন্তায় থাকে। আল্লার হুকুম, রসুলের বাণী কীভাবে সে পৌঁছে দিবে মানুষের দ্বারে দ্বারে। উম্মতের ঘরে ঘরে। আর যারা শুধু ক্ষমতা চায় তারা তো চেষ্টায় থাকে- কিভাবে অশান্তি সৃষ্টি করা যায়। কিভাবে ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া বাঁধিয়ে মোড়লীপনা করা যায়। এই টঙ্গীর ময়দান, বিশ্ব ইজতেমা আমাদের শত বছরের ঐতিহ্য। বাংলাদেশের গৌরব। এখানেই আজ কবর রচিত হলো ‘একরামুল মুসলিমীন’ আর ‘সহিহ নিয়তে’র। ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য জলাঞ্জলি দিতে হলো বৃহত শান্তিময় দাওয়াতী মিশনের পরিচয়।  আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘ফেতনা হত্যার চেয়েও জঘন্য। হত্যার চেয়েও মারাত্মক।’ (সূরা আল বাকারার ২১৭) হাদিস শরিফে এসেছে- হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মানুষের হৃদয়ে চাটাইয়ের পাতা (বা ছিলকার) মত একটির পর একটি করে ক্রমান্বয়ে ফিতনা প্রাদুর্ভূত হবে। সুতরাং যে হৃদয়ে সে ফিতনা সঞ্চারিত হবে সে হৃদয়ে একটি কালো দাগ পড়ে যাবে এবং যে হৃদয় তার নিন্দা ও প্রতিবাদ করবে সে হৃদয়ে একটি সাদা দাগ অঙ্কিত হবে। পরিশেষে (সকল মানুষের) হৃদয়গুলি দুই শ্রেণীর হৃদয়ে পরিণত হবে। প্রথম শ্রেণীর হৃদয় হবে মসৃণ পাথরের ন্যায় সাদা; এমন হৃদয় আকাশ-পৃথিবী অবশিষ্ট থাকা অবধি-কাল পর্যন্ত কোন ফিতনা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আর দ্বিতীয় শ্রেণীর হৃদয় হবে উবুড় করা কলসীর মত ছাই রঙের; এমন হৃদয় তার সঞ্চারিত ধারণা ছাড়া কোন ভালোকে ভালো বলে জানবে না এবং মন্দকে মন্দ মনে করবে না (তার প্রতিবাদও করবে না)। বিশ্ব ইজতেমার দখল নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ। আহত ২ শতাধিক। নিহত ১। টঙ্গী হাসতাপাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এর আগে তারা এতো রক্তাক্ত রোগী একসাথে কখনো পায়নি। এই বক্তব্য থেকেই ঘটনার পরিস্থিতি অনুমান করা যায়। লড়াইয়ের ভয়াবহতা আন্দাজ করা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই লড়াইটা হলো কার সাথে? কার স্বার্থে? কিসের আশায়? একজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা হলো। তিনি জানালেন, গত বুধবার থেকেই ইজতেমার মাঠ দখল করে রেখেছিল কওমি মাদরাসা সংশ্লিষ্ট তাবলিগপক্ষ। তারা ময়দানের সকল গেইট বন্ধ করে রেখেছিলেন। শুক্রবার বহিরাগত কাউকে জুমার নামাজ পড়তেও মাঠে ঠুকতে দেননি তারা। মাদরাসার শত শত ছাত্রকেও দেখা গেছে এই কোন্দলে। আজকে যখন অপর পক্ষের তাবলিগিরা মাঠে ঢুকতে চেয়েছে তখনই শুরু হয় হাতাহাতি। এরপর তীব্র মারামারি। পুরো ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিল প্রশাসনের লোকজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর তাদের সাথে বৈঠকও করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তাবলিগের উলামা পক্ষের প্রতিনিধি মাও. ফজলুল করীম কাসেমী। তিনি ঢাকার মিরপুর-১০ আল ইহসান মাদরাসার শিক্ষক। এই প্রতিবেদকের কাছে তার বক্তব্য ছিলো, ‘যারা আজকে এই সংঘর্ষ করেছে, আলেমদেরকে আহত করেছে তারা আসলে দেশের শত্রু। ইসলামের শত্রু। তারা বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখল নিতে চেয়েছিল। তারা অস্ত্র নিয়ে এসে হামলা করে বহু সাথী ভাইকে রক্তাক্ত করেছে। হাত-পা ভেঙেছে। এরা আসলে বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব ইজতেমাকে উঠিয়ে দিতে চায়। বিদেশি অপশক্তির হয়ে কাজ করছে সা’দপন্থীরা। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই।’ 
আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল