• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

বঙ্গবন্ধুর নাতি তন্ময়কে চায় আ.লীগ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০১৮  

বঙ্গবন্ধুর নাতি তন্ময়কে চায় আ.লীগ

বঙ্গবন্ধুর নাতি তন্ময়কে চায় আ.লীগ

সদর ও কচুয়া উপজেলা মিলিয়ে গঠিত বাগেরহাট-২ আসনে ক্ষমতাসীন দলে বিরোধের দলের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র শেখ সারহান নাসের তন্ময়কে প্রার্থী হিসেবে চাইছেন দলের নেতারা।

আসনটিতে বর্তমান সাংসদ মীর শওকাত আলী বাদশার সঙ্গে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দূরত্বের খবর এসেছে গণমাধ্যমে। এই অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভাইয়ের ছেলে শেখ হেলালের সন্তান তন্ময়কে সামনে নিয়ে এসেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। সম্প্রতি সভা সমাবেশে এই দাবিটি তোলা হচ্ছে।

তন্ময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিনের ছেলে। হেলাল বলেছেন, দল যাকে ভালো মনে করবে, তাকেই মনোনয়ন দিক। আওয়ামী লীগ একাট্টা হয়ে তার পক্ষেই কাজ করবে।

তবে সংসদ সদস্য বাদশা কোনো ধরনের দ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেছেন। এও বলেছেন, যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক, তিনি তার পক্ষেই কাজ করবেন।

সিলেট-১ আসনের মতো এই আসনটিতেও বরাবর বিজয়ী দল সরকার গঠন করেছে। এই কারণে আসনটি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে প্রধান দুই দলের মধ্যেই ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। আর দলের ভেতরের কোন্দলের কারণে যেন আসনটি হারাতে না হয়, সে জন্য একাট্টা নেতাকর্মীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকু বলেন, ‘আমরা জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু পরিবারের উত্তরসূরি শেখ সারহান নাসের তন্ময়কে স্বাগত জানিয়েছি। তবে জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তার সাথেই আমরা কাজ করব, নৌকাকে বিজয়ী করব।’

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার নাহিয়ান আল সুলতান ওশান বলেন, ‘জেলার শীর্ষ নেতাদের উপর রাগে ক্ষোভে দলের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী এখন রাজনীতিবিমুখ। এদের রাজনীতিতে উজ্জীবিত করতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন তন্ময়। তাকে প্রার্থী করা হলে দলের মধ্যে থাকা বিরোধ নিরসন হবে এবং নৌকা বিজয়ী হবে বলে।’

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সরদার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘যারা দলীয় কর্মকা- থেকে দূরে ছিলেন, তন্ময় রাজনীতিতে আসায় তারা আবার সক্রিয় হয়েছেন।’
বর্তমান সংসদ সদস্য মীর শওকাত আলী বাদশার বড় ভাই মীর সাখাওয়াত আলী দারু এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালে অসুস্থতার কারণে তাকে মনোনয়ন না দিয়ে ছোট ভাই বাদশাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু দল ক্ষমতায় যাওয়ার পর তিনি একেবারে পাল্টে গেলেন। সময় যতই গড়িয়েছে দলের নেতাকর্মীদের সাথে তার দূরত্বও বেড়েছে। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের তিনি মূল্যায়ন না করে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। কর্মীবিমুখ এই নেতাকে আবার মনোনয়ন দিলে নৌকার ভরাডুবি হবে।

শেখ সারহান নাসের তন্ময় বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রত্যেক ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইতে হবে। তিনি এখানে যাকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী করবেন তার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা কেউ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না।’
‘২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আমি মাঠে আছি। সেই সময়ে আমি এই জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মাঠে মাঠে ঘুরে নৌকার জন্য ভোট চেয়েছি। আমি এখানে কিছু চাইতে আসিনি। আমি চাই আপনাদের সমর্থন।’

যদিও দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্বের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য বাদশা। বলেন, ‘গত ১০ বছর আমি এই এলাকার সংসদ সদস্য। নির্বাচনী এলাকায় রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজসহ নানা উন্নয়ন কাজ করেছি। বড় দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকবে। দলের কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা আমার মনোনয়ন আটকাতে কাজ করছেন। আসন্ন নির্বাচনে দলের মনোনয়ন বোর্ড আমাকে আবার মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করব, আর না দিলে দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমি তার পক্ষে কাজ করব।’

তন্ময়ের বাবা শেখ হেলাল উদ্দিন অবশ্য ছেলের প্রার্থিতার জন্য মরিয়া নন। তিনি বিষয়টি দলের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, ‘গত ১০ বছরে দলের সংসদ সদস্যরা কে কী করেছেন তা দলের শীর্ষ নেতারা খোঁজ নিয়েছেন। তারা ঠিক করবেন কাকে আগামী নির্বাচনে এখানে মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে আমি একটা কথা বলব; তা হলো এই আসনে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের মনে রাখতে হবে ব্যক্তি নয়, নৌকা প্রতীকই প্রার্থী।’

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল