• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৩  

টাঙ্গাইল পৌর শহরের আশেকপুর ৫নং জোবায়দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগমের বিরুদ্ধে পরীক্ষার ফি’র নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বিদ্যালয়ের প্রায় দুই’শ কোমলমতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে শ্রেনী ভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করেছেন এমন তথ্য দিয়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।

টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা পরিচালনা ব্যায় নির্বাহের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি বিদ্যালয় আলাদা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে কোনক্রমেই পরীক্ষার ফি’র টাকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা যাবে না।

অথচ সরকারী প্রজ্ঞাপণের তোয়াক্কা না করে জোবায়দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুই’শ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষা ফি বাবদ প্রায় ২০ হাজার টাকা আদায় করেছে। সরেজমিনে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, টাঙ্গাইল পৌরসভার আশেকপুর এলাকায় ৫০ শতাংশ জায়গার উপর ১৯৬৪ সালে স্থাপিত এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় দুই’শ। শিক্ষকের সংখ্যা মোট ৮ জন। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন শ্রেনীর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের পরীক্ষা শেষে বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৭৫ টাকা হারে পরীক্ষা ফি আদায় করা হয়েছে। এছাড়া তৃতীয় শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে এক’শ টাকা হারে পরীক্ষার ফি আদায় করা হয়েছে।

তারা আরও জানায়, শুরুতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনীর জন্য এক’শ টাকা ও তৃতীয় শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত দুই’শ টাকা পরীক্ষা ফি নির্ধারণ করা হয়। পরে অভিভাবকদের প্রতিবাদের মুখে পরীক্ষার ফি কমানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন অভিভাবক বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা থেকে শুরু করে বেতন-পরীক্ষা ফি সরকার বহন করে। এমনকি শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতেই বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হয়। এছাড়া মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা উৎসাহ প্রদানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।

তারা আরও বলেন, অথচ জোবায়দা খানম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগমের একক সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের সন্তানের কল্যাণ চিন্তা করে নিয়মবর্হিভুত ভাবে দাবি করা টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।

অভিযোগ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম বলেন, তিনি কোন পরীক্ষা ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করেননি। তার বিদ্যালয়ের কিছু ঈর্ষান্বিত সহকর্মী তাকে বিপদে ফেলার জন্য এসব অভিযোগ করেছে।

ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আরিফুল ইসলাম জানান, তিনি ব্যবসা সূত্রে ঢাকায় থাকেন। যদি পরীক্ষা বাবদ অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগের সত্যতা মেলে তাহলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, কোন অবস্থাতেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি আদায় করা যাবে না। যদি কোন প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার ফি নিয়ে থাকেন তবে তিনি আইনগতভাবে অপরাধ করেছেন।

তিনি আরও জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। যদি তদন্তে দোষী প্রমাণিত হয় তবে দ্রুত বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল