• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ভূঞাপুর গণহত্যা দিবস: শহীদ পরিবার হিসেবে স্বীকৃতির দাবি স্বজনদের

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮  

আজ ভূঞাপুর গণহত্যা দিবস। ৭১-এর ১৭ নভেম্বর উপজেলার ছাব্বিশা গ্রামে পাকহানাদাররা নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে একই পরিবারের ৭জনসহ কেঁড়ে নেয় ৩৩ জনের তাঁজাপ্রাণ। জ্বালিয়ে দেয়া হয় প্রায় সাড়ে ৩শ ঘর-বাড়ি। স্বাধীনতার ৪৭ বছর অতিবাহিত হলেও শহীদদের কবরগুলো এখনো পড়ে আছে অযতœ আর অবহেলায়। 

সেসময় একই পরিবারে বাবা-মা-ভাই-বোন-ভাগ্নী-চাচাসহ ৭জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিনের সেই ভয়াল স্মৃতি এবং স্বজন হারানোর বেদনায় আজও কেঁদে বেড়ায় শহীদ ওমর আলীর ছেলে ছানোয়ার। তাঁর চোখের সামনে পাকহানাদাররা গুলি ও বায়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে একই পরিবারের ৭ জনকে। রক্তমাখা লাশের আড়ালে লুকিয়ে থেকে বেঁচে গিয়েছিল ছানোয়ার ও তাঁর ছোট ভাই বেলাল। সেই সময়ের ছোট্ট ছানোয়ার বর্তমানে রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। 

ছানোয়ার জানান, আমাদেরকে শহীদ পরিবার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া তো দুরের কথা আমাদের ছেলে মেয়ের স্কুলের বেতনের টাকাও কম নেয় না। 

ছাব্বিশা গ্রামের আরেক শহীদ পরিবারের সন্তান নূরুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের বাবা মাকে বেঁধে রেখে আমার চোখের সামনে ৩ ভাই ও ১ কাজের লোককে প্রথমে গুলি করে। পরে বায়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে পাকহানাদাররা। তার বিনিময়ে শহীদ পরিবার হিসেবে মর্যাদাটুকু পাইনি আমরা। শহীদদের কবরগুলো জরাজীর্ণ ছিল। তাদের নিজের টাকায় তা কোন রকমে চিহ্ন করে রেখেছেন। সরকারি ভাবে ছাব্বিশা গ্রামে শহীদদের কবরগুলো সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শুধু মাত্র ছাব্বিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি নাম ফলক তৈরী করা হলেও সেটিও সংস্কারের অভাবে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। 

ভূঞাপুর তথা টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। 

শহীদ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পাকহানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ পরিবাররা রাষ্ট্রীয় কোন সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। বিভিন্ন স্থানে সেসময়ে শহীদদের কবর দেয়া স্থানগুলো চিহ্নিতকরণ ও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। 

উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কামান্ডার এম.এ মজিদ মিঞা জানান, গণহত্যায় নিহত শহীদের স্মরণে কোন কর্মসূচী নেয়া হয়না। তবে স্থানীয়ভাবে কোন কর্মসূচী বা অনুষ্ঠান আয়োজন করলে সেখানে যাওয়া হয়। সরকারি বা বেসকারিভাবে দিবসটি পালনে নেয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদের করবে পুষ্পস্তর্বক অর্জন করা হয়েছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল