• বুধবার ০১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলের শারীরিক প্রতিবন্ধী রাজা এখন সফল ব্যবসায়ী

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বর ২০২২  

অদম্য ইচ্ছাশক্তি,কঠোর মনোবল,ও কর্মস্পৃহা শারিরীক প্রতিবন্ধী কাজী জুবায়ের ওরফে রাজা এখন সফল ব্যবসায়ী । অল্প বয়সে শিশুকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজা। দীর্ঘ চিকিৎসার পর রাজা সুস্থ হলেও তার পা দুটি অচল হয়ে যায়।

এরপর নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে পড়াশোনা শেষ করে বাবার হোমিও ওষুধের ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে জীবনের লড়াই শুরু করেন। এক পর্যায়ে হোমিও ডিপ্লোমা শেষ করে টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্র নিরালা মোড়ে নিজেই হোমিও ব্যবসা শুরু করেন। পাশাপাশি ফ্লেক্সিলোডসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর ব্যবসা শুরু করে এখন তিনি সফম ব্যবসায়ী।

কাজী জুবায়ের রাজা টাঙ্গাইল পৌরসভার দিঘুলিয়া এলাকার মৃত কাজী আব্দুল মতিনের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তিনিও এখন তিন মেয়ের বাবা। তারা সকলেই লেখা পড়া করছে। সব মিলিয়ে সুখের সংসার কাজী জুবায়ের রাজা।

কাজী জুবায়ের জানান, চার বছর বয়সে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের পক্ষ থেকে সাধ্যমক চিকিৎসা করা হলেও তার পা দুটি আর সচল হয়নি। মা বাবা, স্বজন ও সহপাঠীদের সহযোগিতায় ১৯৯২ সালের বাড়ির পার্শ্ববর্তী শহীদ মিজানুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯৫ সালে এইচএসসি পাশের পর স্নাতক শেষ করেন।

পাশাপাশি ১৯৯৮ সালে জামালপুর হোমিও কলেজ থেকে ডিপ্লোমা শেষ করে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে তার বাবার সাথে হোমিও ব্যবসা শুরু করেন। তার বাবা মারা যাওয়ার পর ২০০১ সালে তিনি নিজেই পিওর হোমিও ফার্মেসি নামে নিজের ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকেন। ২০১০ সালে পিওর টেলিকম নামে ফ্লেক্সিলোডসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর ব্যবসা শুরু করেন। সেখানেও তার সফলতা আসে।

কাজী জুবায়ের বলেন, পড়াশোনা ভালো করলেও দুটো পা সচল না থাকায় আমি সরকারি কোন চাকরি করতে পারিনি। ফলে জীবনের প্রতিটি ধাপে খুব কষ্ট করে চলতে হয়েছে। তারপরও আল্লাহ পাকের কাছে শুকরিয়া। ব্যবসা করে যা আয় হয়, তা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে সংসার চালাতে পারছি।

তিনি আক্ষেপ করো আরো বলেন শত চেষ্টা করে আমি যখন বেশ ভালো আছি ঠিক তখনই আমার প্রতি ইর্ষানিত হয়ে কিছু অসাধু ব্যাক্তি আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ওঠে পরে লেগেছে, তবে আমি বিশ্বাস করি আমার সততা নিষ্ঠা ও সৎকর্মে আমি সকল বিপদ কাটিয়ে উঠতে পারব ইনশাআল্লাহ, তবে আমার এই দীর্ঘ পথ চলার একমাত্র সঙ্গী আমার স্ত্রী, আমার স্ত্রী যদি দায়িত্ব শীল ভূমিকা পালন করে আমাকে প্রেরণা না যোগাতেন তবে এতদুর পর্যন্ত আসা আমার জন্য আরো কষ্টকর হতো।

তিনি আরো বলেন, আমার মতো আরো অনেক মানুষ আছেন, যারা বিভিন্ন কারনে প্রতিবন্ধকতার শিকার। তিনি বলেন শারীরিক মানসিক প্রতিবন্ধকতাতার শিকার ব্যক্তিদের সমাজের বোঝা মনে না করে তাদের সহযোগিতা করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা গেলে তারাও দেশ ও জাতির জন্য অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। আমার মতো শারীরিক প্রতিবন্ধী অনেকেই ভিক্ষাবৃত্তি করে বা অন্য কোন উপায়ে বেঁচে আছেন।

এটা আমার পছন্দ নয়, এবং সমাজের চোখে নিন্দনীয় । আমি মনে করি, তাদের সহযোগিতা করে কর্মক্ষম করে গড়ে তুলে ব্যবসা বা অন্য কোনো কর্মের ব্যবস্থা করা সমাজ তথা রাস্ট্রের দায়িত্ব।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল