• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

যেকারণে রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে বেছে নিল আওয়ামী লীগ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে। রাষ্ট্রপতির মনোনয়নে কদিন ধরে দলের যেসব নেতাদের নাম আলোচনায় ছিল, সেসব জল্পনা-কল্পনাকে উড়িয়ে দিয়ে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই তার নাম কিভাবে এলো এবং তাকেই কেনো আওয়ামী লীগ বেছে নিয়েছে সে বিষয়ে জানতে উৎসুক সাধারণ মানুষ। 


সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার এবং জেলা ও দায়রা জজ। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, অতীত কর্মজীবনে নিষ্ঠা-সততা-দক্ষতার কারণে আপসহীন এই মুক্তিযোদ্ধাকে আওয়ামী লীগ বেছে নিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের দেওয়া সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের আলোকে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেরা ব্যক্তিকেই বেছে নিয়েছেন বলে মনে করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। 


জানা যায়, সাহাবুদ্দিন ছাত্রজীবনে ১৯৬৬ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর তিনি তিনবছর কারাবরণ করেন। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় পরিষদে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের মৃত্যুতে খালি থাকা প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে তাকে মনোনীত করা হয়।


১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল তিনি ভারতে যান এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে পাবনা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করেন।


জেল থেকে বের করে তিনি লেখাপড়া শেষ করে যোগ্যতার স্বাক্ষর থেকে বিসিএস জুডিসিয়াল সার্ভিসে যুক্ত হন। কর্মজীবনে তিনি সততা, দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠা ও সম্মান নিয়ে। 


তিনি ব্যক্তিগতভাবে আইনজীবী ও সাবেক জজ হওয়ায় আইনগত বিষয়ে দক্ষতার সাক্ষর রাখবেন বলেও মনে করছেন শীর্ষ নেতারা। দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি অনুগত্য, দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস এবং ব্যক্তিগত দক্ষতা ও অতীতের কর্মময় জীবনের কারণেই তাকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। 

সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সবার মতামত নিয়ে তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন।

সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা জেলার সদর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শরফুদ্দিন আনছারী ও মাতা খায়রুন্নেসা।

১৯৮০ সালে তিনি আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারে তিনি মুন্সেফ (সহকারী জজ) পদে যোগ দেন। কর্মের ধারাবাহিকতায় তিনি যথাক্রমে যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা ও দায়রা জজ পদে দায়িত্ব পালন করে ২০০৬ সালে অবসরে যান।

বিচারিক কাজের পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের ডেস্ক অফিসার হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের ১৪ মার্চ তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০১৬ সালে অবসরে যান।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক পুত্র সন্তানের জনক। তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়ে ২০০৯ সালে যুগ্মসচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল