• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা ও মতাদর্শ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শনের পাঠ নেবেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার্থীরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে যুক্ত করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা ও মতাদর্শ। জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 

নানা ওঠাপড়ার মধ্য দিয়ে গেছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন। সেই বর্ণাঢ্য সফর বাঙালি জাতির ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়। বদলাতে থাকা আন্দোলনের গতিপথ, মতাদর্শগত সংগ্রাম তাতে অন্য মাত্রা জুড়েছে। এবার তারই পাঠ নেবেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।  


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আগে ১৯৫৬ সালে। এই বিভাগে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে পাঠ্য চালু রয়েছে। এবার তাতে বিশেষভাবে যুক্ত হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন অর্থাৎ মুজিবুর রহমানের মতবাদ।  

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইমনকল্যাণ লাহিড়ী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুকে শুধু বাংলার গণ্ডিতে আটকে রাখলে হবে না৷ এশিয়া ও বিশ্ব রাজনীতিতে তার ভূমিকা  সম্পর্কে নতুন সিলেবাসে পড়বে ছাত্রছাত্রীরা।’’  

বৃহস্পতিবার এই বিভাগে উন্মোচন করা হয় মৈত্রী ফলকের। ভারতের ৭৫ ও বাংলাদেশের ৫০ বছরের স্বাধীনতা উপলক্ষ্যে ফলক উন্মোচন করেন কলকাতায় বাংলাদেশের উপ হাই-কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস। উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র প্রমুখ।

শিক্ষাক্ষেত্রে দুই দেশের আদানপ্রদান আরো প্রসারিত করতে উপ হাইকমিশন উদ্যোগী বলে জানান ইলিয়াস৷ তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর চেয়ার স্থাপনের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিনিময় ব্যাপকভাবে শুরু করার চেষ্টা চলছে।’’

পূর্বে যাদবপুরের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন ওমপ্রকাশ। তিনি বলেন, ‘‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে৷ মৈত্রী সম্পর্কের মতো কর্মসূচি উভয় দেশের ঐক্যের ভিতকে শক্তিশালী করবে।’’

মুসলিম লীগের উদারপন্থী অংশ হিসেবে পরিচিত ছিলেন হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী। ভারত বিভাজনের অনেক আগে কলকাতায় এসে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তরুণ মুজিব। এই শহরের মৌলানা আজাদ কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। থাকতেন কলেজের ছাত্রাবাসে। বেকার হোস্টেলের যে ঘরে তিনি থাকতেন সেটি এখন স্মৃতিকক্ষ হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে।  

মুজিবুর রহমান দুই দেশের মধ্যে যোগসূত্র হয়েই রয়েছেন। যার চূড়ান্ত পরিণতি ছিল পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে ভারতের সমর্থন।তরুণ রাজনৈতিক কর্মী থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে ওঠার নেপথ্যে যে মতাদর্শগত সংগ্রাম, তার অধ্যয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নিবিড়ভাবে জানতে পারবেন বঙ্গবন্ধুকে। 

জানা গেছে, পাঠ্যসূচিতে কী কী থাকবে তা চূড়ান্ত হবে সিলেবাস নির্ধারক কমিটির আলোচনায়। তারপর বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের পাঠদান শুরু হবে।  

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে ৪৬তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও মুক্তিযুদ্ধ। কলকাতা থেকেও এ বিষয়ে বই প্রকাশিত হয়েছে। এবার তার রাজনৈতিক জীবন ঘিরে গভীর অধ্যয়নের সুযোগ তৈরি হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

শুধু পশ্চিমবঙ্গেই এই কৌতূহল সীমাবদ্ধ নয়। ভারত ও তার বাইরেও একই ধরনের চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ উপ হাই-কমিশনের প্রেস সচিব রঞ্জন সেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে কথা চলছে৷ আশা করছি খুব শীঘ্রই শুরু করা যাবে৷ ইতোমধ্যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।  আরো কয়েকটি দেশে বাংলাদেশ সরকার বঙ্গবন্ধু চেয়ার স্থাপনের জন্য কাজ করছে। ’’

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত গবেষণা নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকেই প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে যে এই প্রতিষ্ঠানে যদি বাংলাদেশ স্টাডি সেন্টার করা যায়। আমরা মনে করছি এটা ভালো প্রস্তাব৷ মন্ত্রণালয়ের কাছে উপস্থাপনা করা যেতে পারে। ’’ 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল