• রোববার ১২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

  • || ০৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২ মার্চ ২০২২  

ভৌগোলিকভাবে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অবস্থান ভূরাজনীতিতে এ দেশকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। বাংলাদেশের সামনে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা কাজে লাগানো এখন গুরুত্বপূর্ণ। আজ সোমবার ঢাকায় ‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের ভূরাজনীতি এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলের পুনঃসংযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ওই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে বাংলাদেশের অবস্থান ভূরাজনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক সুযোগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থানগত সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো উচিত। ’

তিনি বলেন, জাপান চট্টগ্রামের দক্ষিণে মাতারবাড়িতে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে। এই বন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল জাপানের ‘বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্টের (বিগ-বি)’ জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের ‘লজিস্টিকস’, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ও ‘ওয়াটারফ্রন্ট ইন্ডাস্ট্রির’ কেন্দ্র হবে নতুন ওই বন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল।  

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে এই অঞ্চলে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক, এটি চায় না জাপান। সে জন্য তিনি এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইনের মধ্যে কানেক্টিভিটির প্রস্তাব দিয়েছেন।  

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক’ এই অঞ্চলের প্রত্যেক দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য শৃঙ্খলাভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। বর্তমানে ইউক্রেন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সুশৃঙ্খল আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ আগের চেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।  

সেমিনারের উদ্বোধন পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফারুক খান। তিনি আশা করেন, জাপানের মতো দেশগুলো এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধান এবং বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে তিনি জাপানের সক্রিয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান কাজী ইমতিয়াজ হোসেন পরিবেশগত সংকট, সন্ত্রাস ও আন্তঃদেশীয় অপরাধসহ গতানুগতিক নয় এমন নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ জানান। বিআইআইএসএস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ হবে।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রাশেদ উজ জামান ওয়ার্কিং সেশন সঞ্চালনা করেন। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো শত্রু নেই।  

জাপান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র ফেলো অধ্যাপক কিকুচি সুতোমু বলেন, শৃঙ্খলাভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার জন্য জাপান অবাধ ও স্বাধীন ইন্দোপ্যাসিফিক কৌশল বাস্তবায়ন করছে। ইন্দো-প্যাসিফিকের কৌশলগত বাণিজ্য পথে বাংলাদেশের অবস্থান। জাপানের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, বাংলাদেশ ভৌগলিকভাবে আশীর্বাদপুষ্ট রাষ্ট্র হতে যাচ্ছে। এটি ক্রমেই মধ্যম শক্তি হয়ে উঠছে।  

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাকাহারা আকিও বলেন, জাপানের ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই)’ প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সংগতিপূর্ণ।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল