• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

“সামরিক জাদুঘর তরুণদের সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করবে”

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২২  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (বিএমএম) দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিতে তরুণ প্রজন্মের পাশাপাশি শিশুদেরও অনুপ্রাণিত করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর থেকে তরুণ প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনী- সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে যোগদানে এবং দেশপ্রেমে তরুণরা উদ্বুদ্ধ হবে।

বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্য কীর্তি বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজয় সরণির বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রান্তে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাদুঘরটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য একটি মাইলফলক হবে। যার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম ও শিশুরা মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান সম্পর্কে জানতে পারবে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি- এটা হবে সারা পৃথিবীর মধ্যে একটি শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি নির্ভর সামরিক জাদুঘর। সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর জন্য পৃথক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকায় এখানে আগত তরুণ থেকে বয়োবৃদ্ধরা যেমন এ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পারবেন তেমনি তরুণ প্রজন্ম সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানে আরো আগ্রহী হবে। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আরো উদ্বুদ্ধ হবে। কাজেই জাদুঘরটি শুধু প্রদর্শনীর জন্যই নয়, এটা তরুণ প্রজন্মকে যেমন আকর্ষণ করবে তেমনি তাদেরকে দেশপ্রেমেও উদ্বুদ্ধ করবে।

যে কারণে ক্ষুদ্র পরিসরে থাকা আমাদের সামরিক জাদুঘরকে বৃহৎ পরিসরে এবং আরো আকর্ষণীয় করে বঙ্গবন্ধু নভো থিয়েটারের পাশে বিজয় সরণিতে তৈরির উদ্যোগ তার সরকার গ্রহণ করে। পাশাপাশি সেখানে সরকারি উপহারগুলো প্রদর্শনীর জন্য একটি তোষাখানা জাদুঘরও নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। যার নির্মাণের দায়িত্ব পায় সামরিক বাহিনী। পাশাপাশি সামরিক জাদুঘরটা যেন পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি সামরিক জাদুঘর হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সেটাই তার আকাঙ্ক্ষা ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের যে ইতিহাস রয়েছে, যেমন- আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস। সশস্ত্র বাহিনী আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক, কাজেই সে সম্পর্কে যেন আমাদের দেশের মানুষ জানতে পারে, জ্ঞানার্জন করতে পারে, তাদের কর্মকাণ্ড উপলব্ধি করতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি।

জাদুঘর থেকে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রমুখ।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরটি বঙ্গবন্ধু নভো থিয়েটারের পশ্চিম পাশে ১০ একর জমিতে নির্মিত হয়েছে। যেখানে স্বাধীনতার আগে ও পরে সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উপস্থাপন করা হয়েছে। জাদুঘরটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর জন্য নির্ধারিত গ্যালারিসহ ছয়টি পৃথক অংশ রয়েছে। প্রতিটি বাহিনীর গ্যালারিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার।

এখানে আর্ট গ্যালারিসহ মাল্টিপারপাস এক্সিবিশন গ্যালারি, ব্রিফিং রুম, স্যুভেনির শপ, ফাস্ট এইড কর্নার, মুক্তমঞ্চ, থ্রিডি সিনেমা হল, মাল্টিপারপাস হল, সেমিনার হল, লাইব্রেরি, আর্কাইভ, ভাস্কর্য, ম্যুরাল, ক্যাফেটেরিয়া, আলোকোজ্জ্বল ঝর্ণা ও বিস্তীর্ণ উন্মুক্ত প্রান্তর সবকিছু মিলে একটি চমৎকার দৃষ্টি নন্দন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

বাংলাদেশি সামরিক বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে জনগণকে শিক্ষিত করার জন্য বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর ১৯৮৭ সালে মিরপুর সেনানিবাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে ঢাকার বিজয় সরণি রোডের পাশে বঙ্গবন্ধু প্ল্যানেটোরিয়ামের পশ্চিম পাশে বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয়।

জাদুঘরটি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর গৌরবময় অতীত, চ্যালেঞ্জ, অর্জন এবং মূল অগ্রগতি সম্পর্কে দেশের জনগণকে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে প্রামাণিক তথ্য প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রদর্শিত তথ্য গবেষণা উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল