• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ওয়াশিংটনকে তথ্য জানাতে আপত্তি নেই বাংলাদেশের

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১  

নিরাপত্তা বাহিনীর উন্নয়নে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র যেসব অনুদান দিয়েছে তা কোন কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে তার তথ্য ওয়াশিংটনকে দিতে আপত্তি নেই ঢাকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সোমবার তার দফতরে এই প্রতিবেদককে এ কথা বলেন। 

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য বৈদেশিক সহায়তা আইনের সঙ্গে লিহেই আইনের দুটি ধারা যুক্ত করেছে। ফলে এখন থেকে যেসব দেশ নিরাপত্তা উন্নয়ন খাতে যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান পেতে চায়, সেসব দেশকে লিহেই আইনের ধারা অনুযায়ী চুক্তি করতে হবে। এই চুক্তি হলে অনুদান পাওয়া দেশগুলোকে অনুদানের অর্থ কখন, কোথায়, কোন বাহিনীর পেছনে খরচ করা হচ্ছে তা নিয়মিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে জানাতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় আভাস পাওয়া গেছে, এতে বাংলাদেশের আপত্তি নেই। আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিষয়টির চূড়ান্ত ফয়সালা হওয়ার কথা রয়েছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন গত ১০ ডিসেম্বর দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত এলিটফোর্স র‌্যাবের বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তার আগে ১ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন জানায়, এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্র যত ধরনের অনুদান দিয়েছে, তা কোন কোন খাতে ব্যয় হয়েছে তার হিসাব দিতে হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে অনুদান পাওয়ার জন্য লিহেই আইন মেনে চলতে হবে- এই মর্মে চুক্তি করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কাটাতে বাংলাদেশ কী করছে- এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এটা দুঃখজনক। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উত্তীর্ণ হওয়ার পরীক্ষায় পাস করেছি। যত ধরনের পরীক্ষা ছিল, সবগুলোতেই আমরা পাস করেছি। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমরা দারিদ্র্য বিমোচন, শিশু মৃত্যুহার কমানোসহ প্রতিটি খাতে জয়লাভ করেছি। কিন্তু হঠাৎ দুর্ঘটনা ঘটল। সেটা হচ্ছে আমাদের দেশের ভালো সংস্থা, যাদের আমাদের দেশের লোকজন পছন্দ করে, যারা মানুষের গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে, তারা হচ্ছে র‌্যাব। হলি আর্টিজান হামলার পর র‌্যাবের কারণে আর কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেনি, মানবপাচার প্রতিরোধেও র‌্যাবের উজ্জ্বল ভূমিকা আছে, সেই র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি পদক্ষেপ হচ্ছে, দুনিয়া থেকে মাদক (ড্রাগ) নির্মূল করবে, আমাদের দেশে র‌্যাব সে কাজ করছে। মানবাধিকার নিশ্চিত করে যে র‌্যাব, তাকেই যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।’ 

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শুনেছি, আমাদের দেশের কিছু এনজিও যারা বিদেশি পয়সায় চলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে র‌্যাব নিয়ে অভিযোগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কীভাবে এটা বিশ^াস করল সেটা আমার কাছে তাজ্জব মনে হয়। সো আই ডোন্ট নো, আমেরিকান সরকার নিশ্চয়ই তাদের সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তারা স্বচ্ছতার ভিত্তিতে যদি খারাপ প্রতিষ্ঠানকে এ রকম নিষেধাজ্ঞা দিত তা হলে ভালো ছিল। আমেরিকা আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমার বিশ^াস তারা এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।’

নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাংলাদেশ কী পদক্ষেপ নিচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, আমেরিকাকে এ বিষয়ে জানাব। র‌্যাবের ভালো কাজগুলো সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে জানাব। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারেরই একটি প্রতিবেদনে র‌্যাবের ভালো কাজ সম্পর্কে প্রশংসা করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনে তারাই বলেছে, র‌্যাব ভালো কাজ করছে। আমাদের জানানো দরকার জানাব; কিন্তু তারা তো নিজেরাই স্বীকার করতেছে।’

নিরাপত্তা খাতে এখন থেকে অনুদান পাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের লিহেই আইনের ধারা অনুযায়ী অনুদানের ব্যয়ের সব তথ্য ওয়াশিংটনকে জানাতে হবে। বাংলাদেশ কী এ আইন মেনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভবিষ্যতে অনুদান নেবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের রুটিনকাজ। আমেরিকান সরকার বিদেশে যে অর্থ পাঠায় তাদের করদাতারা ওই অর্থ খরচের হিসাব জানতে চায়। আমাদের দেশের করদাতাদেরও জানা উচিত, তাদের করের অর্থ কোন কোন খাতে খরচ করা হয়। ওদের দেশের কংগ্রেসম্যান একটি আইন পাস করেছে, আমেরিকানরা যেখানে টাকা দেবে, বিশেষ করে অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে, সেগুলো এমন প্রতিষ্ঠানকে দেবে যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত নয়। সেটাই তারা চেয়েছে, এটা পুরনো বিষয়, নতুন কিছু নয়। এখন মিডিয়া এটা বড় করে দেখাচ্ছে। আমরা বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকে সরকারিভাবে জানাব। আর যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও তাদের হিসাব আছে, কোথায় কত খরচ হচ্ছে, তা তাদের ওয়েবসাইটেও দেওয়া আছে। এখন তারা আমাদের কাছ থেকে জানতে চায়, দেখতে চায়, টালি করে যে আমরা যেটা বলছি সেটা ঠিক আছে কি না।’

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল