• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩০ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

করোনা মোকাবিলায় আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আভাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০২১  

করোনাভাইরাস থেকে মানুষের জীবন রক্ষায় আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটি বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে দেখা দিয়েছে এবং তার সরকারও সেই ধাক্কাটা দেখতে পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে বাঁচানোর জন্য আমরা প্রাথমিক কিছু ব্যবস্থা নিলেও ভবিষ্যতে হয়তো আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আমরা সেটা নেব।

বৃহস্পতিবার সকালে বিসিএস কর্মকর্তাদের ছয়মাস ব্যাপী ৭১তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) সাভারে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় গুরুত্বারোপ করে প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারাও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। অন্যরাও যেন সুরক্ষিত থাকে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। আজকে যারা দায়িত্ব নিয়ে কর্মস্থলে যাবেন সেখানেও যেন সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেদিকে আপনারা দৃষ্টি দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আজ এই সভার মাধ্যমে আমি দেশবাসী সবাইকে বলবো প্রত্যেকে যেন স্বাস্থ্যসুরক্ষাবিধি মেনে চলে সেই ব্যবস্থা নেবেন। মানুষের জীবন-জীবিকা চলতে হবে। মানুষকে আমরা কষ্ট দিতে পারি না। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা একান্তভাবে অপরিহার্য। সেজন্য সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন।

তিনি বলেন, যেমন মাস্ক পরাটা একান্তভাবে দরকার, অফিস-আদালত বা কাজ থেকে ঘরে ফিরে সকলে একটু গরম পানির ভাপ নেবেন। কারণ, এই ভাইরাস সাইনাসে গিয়ে বাসা বাঁধে। সেটা যেন না পারে সেজন্য একটু গরম পানির ভাপ নিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ৭১তম বুনিয়াদি কোর্সে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অধিকারকারীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করেন। প্রতিষ্ঠানের রেক্টর মো. রকিব হোসেন ফলাফল উপস্থাপন করেন এবং শপথ বাক্য পাঠ করান। এবারের কোর্সে ৩০৭ জন কর্মকর্তার সকলেই কৃতকার্য হয়েছেন। এরমধ্যে ২২৮ জন পুরুষ এবং ৭৯ জন নারী কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা চলবো। কাজেই যারা সিভিল সার্ভিসে কাজ করেন তাদের এটা মনে রাখতে হবে- দেশের মানুষের জন্যই আপনাদের কাজ করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান মুক্তির সংগ্রামে দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। কাজেই ধনী-গরিব, ধর্ম বর্ণ দলমত নির্বিশেষে কোনো ভেদাভেদ না করে মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখে তাদের সার্বিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করে সবাইকে সমান অধিকার দিয়ে কাজ করতে হবে। সেই মানসিকতা নিয়েই আপনারা জনগণের সেবা করবেন সেটাই আমি চাই। কেননা, কেউ ইচ্ছা করে দরিদ্র হয় না, কেউ দরিদ্র বা প্রতিবন্ধী হলেই আমরা তাদেরকে অপবাদ দিতে পারি না, তাদেরকে সাহায্য করা দরকার, যেন তারা সমাজে দাঁড়াতে পারে এবং মাথা উঁচু করে চলতে পারে, সেভাবেই আমরা কাজ করতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে জাতির পিতার বক্তব্য উদ্ধৃত করেন- জাতির পিতা বলেন- ‘আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে দেয় এ গরিব কৃষক! আপনার মাইনে দেয় ওই গরিব শ্রমিক। আপনার সংসার চলে ওই টাকায়। আমি গাড়ি চড়ি ওই টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ইজ্জত করে কথা বলুন। ওরাই মালিক।’

বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশের মালিক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই মালিক যে কেউ হতে পারে। একজন মেহেনতী মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার জনগণ এবং আমাদের সংবিধানের ৭ম অনুচ্ছেদের এ কথাই বলা হয়েছে- প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেকথা মনে করেই আপনারা জনগণকে সেবা দেবেন- এটাই আমি চাই।

তিনি বলেন, লোক-প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত বিভিন্ন জ্ঞান এবং জনদরদী মনোভাব উন্নয়নে ৬ মাস মেয়াদি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালনে আপনাদের সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করবো, কর্মজীবনের বৃহত্তর পরিসরে ফিরে গিয়ে আপনারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান এবং দক্ষতার যথার্থ প্রয়োগ করবেন। জনসেবা ও দেশপ্রেমী মনোভাব, সর্বোপরি, মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনাকে লালন ও সমুন্নত রাখতে আপনারা উদ্যোগী হবেন। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়েই দেশকে গড়ে তুলবেন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল