• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

সরকার ১২০০ টাকা মণ দরে কৃষকের ধান কিনবে: কৃষিমন্ত্রী

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২৩  

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এ বছর ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে পর্যাপ্ত ধান কেনা হবে। এবার ফলন ভালো হয়েছে। কৃষক যত দিতে পারবে সরকার ততই ধান কিনবে। ২৫ এপ্রিল থেকে সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু করবে।

বুধবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডেকার হাওরে বোরো ধান কর্তন উৎসব ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিস এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 


চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে সারা দেশে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ও সময়মতো ধান ঘরে তুলতে পারলে বোরোতে রেকর্ড উৎপাদন হবে। 

হাওরে বোরো ধান কাটা চলছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে শুধু সুনামগঞ্জেই এক হাজার কম্বাইন হারভেস্টারে ধান কাটা চলছে। আশা করি, ৩০ তারিখের মধ্যেই হাওরের ধান কাটা হয়ে যাবে, এবার ধান কাটায় কোন সমস্যা হবে না।

হাওরে ধানকে ঝুঁকিমুক্ত, শঙ্কামুক্ত করতে সরকারের নানান পদক্ষেপ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কারণে  হাওরের ধান ঘরে তোলা নিয়ে প্রতিবছর আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়। আমরা এমনভাবে কাজ করছি, ইনশাআল্লাহ আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে হাওরের ধান হবে ঝুঁকিমুক্ত ও শঙ্কামুক্ত। পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা ৭০% ভর্তুকিতে হাওরে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে যাচ্ছি। এর সুফল আমরা পাচ্ছি। গত কয়েক বছর ধরে দ্রুততার সাথে ধান কাটা যাচ্ছে। ফলে হাওরের ধান নিয়ে শঙ্কা অনেকটা কমে এসেছে।

মন্ত্রী বলেন,  এছাড়া আমরা স্বল্পজীবনকালীন ও ঠাণ্ডাসহিষ্ণু আগাম জাতের ধান চাষে গুরুত্ব দিচ্ছি। যাতে ১৫ দিন আগেই ধান পাকে। ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা অনেকগুলো জাত উদ্ভাবন করেছেন। এ জাতগুলো দ্রুত সম্প্রসারণ করতে পারলে হাওরের ধান ঘরে তোলা নিয়ে কোন শঙ্কা থাকবে না। পানি আসার আগেই ঘরে ধান তোলা যাবে। 

ব্রি ২৮ ও ব্রি ২৯ জাতের ধান চাষ না করার জন্য কৃষকদের আহ্বান জানান মন্ত্রী। বলেন, ব্রি ২৮ জাতটি পুরনো হয়ে গেছে, সহজেই ব্লাস্টসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, উৎপাদনশীলতাও কমে গেছে। ব্রি ২৯ একটু দেরিতে পাকে। এসব জাতের পরিবর্তে উচ্চ উৎপাদনশীল নতুন জাত যেমন ব্রি- ৮১, ব্রি- ৮৯, ব্রি- ৯২ চাষ করতে হবে। এদের ফলন প্রতি শতকে এক মণেরও বেশি।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে এবছর ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে, আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ কোটি ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল। 
গত ২০২১-২২ অর্থবছরে বোরো ধান আবাদ হয়েছিল ৪৮ লাখ ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে, উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ২ কোটি ২ লাখ টন চাল। 

এদিকে হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত হাওরের  ৩৫% ধান কাটা হয়েছে। হাওরে এবছর বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে। আর এই ৭টি জেলায় মোট বোরো আবাদ হয়েছে (হাওর ও উচুঁ জমি মিলে) ৯ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪০ লাখ টন চাল। 

এ বছর বোরোর আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ১৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল। সারা দেশের প্রায় ২৭ লাখ কৃষক এ প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়েছেন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল