• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

মাতৃভাষার প্রচারে নেতৃত্বের জন্য বাংলাদেশকে জাতিসঙ্ঘের ধন্যবাদ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

বহুভাষিকতা ও মাতৃভাষার প্রচারে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
বাংলাদেশের নেতৃত্বে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে গত সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ২০১৭ থেকে জাতিসঙ্ঘে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এবারে জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সাথে যৌথ অংশীদারিত্বে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে এলসালভাদর, নাইজেরিয়া, পর্তুগাল ও শ্লোভাকিয়া মিশন। এতে সহ-অংশীদারিত্ব করেছে জাতিসঙ্ঘ সচিবালয় ও ইউনেস্কো। এ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বাণী দেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ও নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র।
নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বক্তারা যাতে নিজ নিজ মাতৃভাষায় বক্তব্য রাখতে পারেন সেজন্য এই প্রথমবারের মতো জাতিসঙ্ঘের ছয়টি অফিসিয়াল ভাষায় গোটা অনুষ্ঠানটি অনুবাদের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেনের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিম সঙ্গীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি..’ একাধিক ভাষায় উপস্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মরক্কো, এলসালভেদর, শ্লোভাকিয়া ও পর্তুগালের সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও ছিল মনোমুগ্ধকর। এ ছাড়া জাতিসঙ্ঘ সচিবালয় এবং জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদ সভাপতির কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নিজ নিজ ভাষায় রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তা অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়। জাতিসঙ্ঘের ওয়েব টিভিতে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বায়ান্নর ভাষাশহীদ এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে কোভিডের ভয়াবহ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে এ বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বহুভাষায় জ্ঞানার্জন : সঙ্কট এবং সম্ভাবনা’ বেছে নেয়ার জন্য তিনি ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান ।
স্প্যানিশ ভাষাভাষী ফ্রেন্ডস গ্রুপের সভাপতি হিসেবে জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত কোস্টারিকার স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ভাষাবিষয়ক এনজিও কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সাধারণ পরিষদের সভাপতিসহ অন্য বক্তারা জাতিসঙ্ঘে বহুভাষিকতা ও মাতৃভাষার প্রচারে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। তারা মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার অগ্রগতিতে প্রযুক্তির সম্ভাবনাময় ভূমিকা এবং প্রযুক্তিগত বিভাজন দূর করার কথা তুলে ধরেন। নিজ নিজ মাতৃভাষায় কথা বলতে গিয়ে বক্তারা বিলুপ্তির পথে থাকা ভাষার সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এর আগে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়। নিউ ইয়র্ক সফররত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। মন্ত্রীর নেতৃত্বে সিনিয়র সচিব, জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও মন্ত্রীর সফরসঙ্গীরা মিশনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
তাজুল ইসলাম ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, মাতৃভাষার গুরুত্ব, মাতৃভাষার মাধ্যমে জ্ঞানার্জনসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ও অদম্য অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরেন। তিনি মিশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা এবং জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রাখতে আরো নিবেদিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং মহান একুশের ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল