• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ক্যাশলেস অর্থনীতিতে বাংলাদেশ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২৩  

বাসায় বসে কয়েক ক্লিকে যদি কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যায়, কিংবা কোনো চায়ের দোকানে বসে চা খেতে খেতে টাকা জমা দেওয়া যায়। আবার কোনো চেক না লিখে, লাইনে না দাঁড়িয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উঠানো যায় তা হলে তো ঝামেলাই নেই। আর গ্রাহকদের ঝামেলামুক্ত লেনদেন করার জন্য আসছে ডিজিটাল ব্যাংক। 

হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন উঠবে কীভাবে এই কাজগুলো সম্পন্ন হবে। হ্যাঁ, সব কাজ হবে ইন্টারনেটে। ইন্টারনেটেই এই ডিজিটাল ব্যাংকের অ্যাপ থাকবে। আরও থাকবে ওয়েব সাইট। এই অ্যাপের মাধ্যমেই সব কাজ করা যাবে। 

এই ডিজিটাল ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খুলতে কোনো কাগজপত্র নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা লাগবে না। অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে শুধু ব্যাংকের নিজস্ব ওয়েব সাইটে কিংবা অ্যাপে ক্লিক করলেই তারা বলে দেবে কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন। তবে অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যাংকের অ্যাপে নিজের নাম, ঠিকানাসহ অন্যান্য কাগজপত্র আপলোড করলেই অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে যাবে। 

আবার কেউ যদি এই ডিজিটাল ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চায় তাকে একইভাবে নির্দিষ্ট কাগজপত্র আপলোড করতে হবে। এখানে ঋণ নেওয়ার জন্য কোনো ধরনের তদবির বা অন্যভাবে টাকা খরচ করতে হবে না। তবে এই ব্যাংক থেকে ঋণ পাবেন তারাই যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বড় বড় ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের ঋণ দেওয়া হবে না। এমনকি কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য ঋণ দেওয়া হবে না। 

যিনি ঋণের জন্য আবেদন করবেন তার কাগজপত্র আপলোড হয়ে গেলে সেই তথ্য অনেকটা যাচাই-বাছাই করা হবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, তিনি কোনো ধরনের ঋণ খেলাপি কি না তা প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি থেকে যাচাই করা হবে। এর জন্য একটি বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। যে পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করা হবে। 

এই ব্যাংকের কার্যক্রম কোনো কাগজ-কলমে হবে না। তবে এই ব্যাংকের যে প্রধান কার্যালয় থাকবে সেখানে প্রয়োজন অনুযায়ী কাগজ কলমের প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ কাজ সম্পন্ন হবে প্রযুক্তির ভিত্তিতে। 

এই ডিজিটাল ব্যাংকের কোনো কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো গ্রাহকের কোনো ধরনের অভিযোগ থাকলে তা সশরীরে অভিযোগ দেওয়া যাবে। এর পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ দেওয়া যাবে। আর এসব অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। 

দৈনন্দিন লেনদেনের জন্য অ্যাপের মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। আর অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স গ্রহণের ক্ষেত্রে এই ডিজিটাল ব্যাংক বিশেষভাবে অন্য ব্যাংকের মতো কাজ করবে। তবে কোনো কাগজপত্র নিয়ে কাউকে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। টাকা তোলার জন্য আপাতত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ ব্যবহার করতে পারবেন গ্রাহক। এমনকি বিকাশ, নগদ ও উপায় ব্যবহার করতে পারবেন। 

জানা গেছে, গত ২১ জুন থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য মোট ৫২টি আবেদন পেয়েছে। এর মধ্যে দলবদ্ধভাবে ও এককভাবে মোট ৯টি আবেদনের সম্মতিপত্র দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

ডিজিটাল ব্যাংক পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি গাইড লাইন বেঁধে দেয়। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গত ২২ অক্টোবর অনুমোদন দেয়। তবে গাইডলাইন অনুযায়ী আবেদনকারীকে বেশ কিছু শর্ত দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, প্রযুক্তিগতভাবে অভিজ্ঞতা। শুধু তাই নয়, আবেদনকারী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্মকর্তার নিয়োগপত্র সংযুক্ত করতে হয়েছে। যাদের ভিত্তিতে এই ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালিত হবে। আর শর্তের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, আবেদনকারীর ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা ঋণখেলাপি হতে পারবেন না। 
প্রতিটি স্পন্সরের জন্য নির্ধারিত মূলধন ৫০ লাখ টাকা। আর ব্যাংকের মূলধন রাখা হয়েছে ১২৫ কোটি টাকা। যদি অনুমোদনপ্রাপ্ত কোনো ব্যাংক যদি মনে করে তাদের মূলধন আরও জোগান দিতে হবে। তা হলে সেই মূলধন জোগানের জন্য কোনো ব্যক্তিগত ঋণ নেওয়া যাবে না। আর ঋণের টাকা তাদের আয়কর ফাইলে দেখাতে হবে। 

মোটকথা ডিজিটাল ব্যাংকগুলো প্রযুক্তিগতভাবে পরিচালিত হবে। কোনো শাখা বা উপশাখা ছাড়াই এই ব্যাংক পরিচালিত হবে। এই ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য হবে গ্রামের মানুষের কাছে এই ব্যাংকের সেবা পৌঁছে দেওয়া। আর তা হবে কোনো কাগজ ছাড়াই-যা বাংলাদেশের অর্থনীতি হবে ক্যাশলেস।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল