• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ডিলার নিয়োগের নামে প্রতারণা: ৪ প্রতারক রিমান্ডে

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

প্রতারণার ফাঁদ পেতে অভিনব কৌশলে নাবিলা ফুড প্রোডাক্টস নামে একটি কোম্পানির ডিলারশিপ ও চাকরির প্রলোভন দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের ৪ সদস্যের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 
আসামিরা হলেন- মো. কবির হোসেন ওরফে জোবায়ের ওরফে আক্তার হোসেন ওরফে আশরাফুল ওরফে রাসেল, মো. মামুন হোসেন ওরফে বেলাল ওরফে কামরুল, আবু হাসান ওরফে জামিল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল রাব্বী ওরফে রেদওয়ান।

রোববার আসামিদের আদালতে হাজির করে ঘটনার তদন্তের স্বার্থে তাদের সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. কলিম উদ্দিন সরদার।

অপরদিকে আসামিদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবিরের আদালত আসামিদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শনিবার আসামিদের গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। তাদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। 

গ্রেফতার পর তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কর্মী ও ডিলারশিপ নিয়োগের জন্য ভিকটিমদের নাম ও ছবি সম্বলিত আবেদনপত্র, কর্মী নিয়োগের ছবিসহ জীবনবৃত্তান্ত, আসামীদের বিভিন্ন পরিচয় সম্বলিত ভিজিটিং কার্ড, কোম্পানির ভুয়া পণ্যের মূল্য তালিকা, ৪টি মোবাইল, পত্রিকার বিজ্ঞাপনের কপি, কোম্পানির পণ্যের নমুনা, একটি ল্যাপটপ, সিল-প্যাড ও প্যাকেট সিলিং মেশিন উদ্ধার করা হয়।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের মার্চ মাসের ১৮ তারিখে মামলার বাদী ফেসবুকে একটি পেইজে ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় ‘নাবিলা ফুড প্রডাক্টস লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানির ডিলার এবং কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখতে পেয়ে বিজ্ঞাপনে উল্লেখিত মোবাইল নাম্বারে ফোন করে এ ঘটনার মামলার আসামিদের সঙ্গে কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে কথা বলেন।

আসামিরা মামলার বাদীকে তাদের অফিসে এনে তেল, চিনি, আটা, ময়দা, ডাল, চা, চিনিগুড়া চাল, হলুদ ও মরিচসহ ৩০টির বেশি ভুয়া পণ্য দেখিয়ে বাদীর বিশ্বাস অর্জন করে।

পরবর্তীতে মামলার বাদী ডিলারশিপের চুক্তি অনুযায়ী, আসামিদের কথামতো নোয়াখালী অঞ্চলে ডিলারশিপ নেয়ার জন্য সরল বিশ্বাসে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা জমা দেন। একইভাবে দুলাল আহম্মেদ লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা অঞ্চলে ডিলারশিপের জন্য ১০ লাখ পাঁচ হাজার টাকা, মহিনি চন্দ্র রায় ঠাকুরগাও অঞ্চলের ডিলারশিপের জন্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, আব্দুল আওয়াল রংপুর, সাভার ও পাবনা অঞ্চলের ডিলারশিপের জন্য ৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা প্রদান করেন।

টাকা পাঠানোর পরদিন থেকেই আসামিরা বাদী ও অন্যান্য ভিকটিমের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে ভুক্তভোগীরা আসামিদের খোঁজে নাবিলা ফুড প্রডাক্টসের অফিসে গেলে দেখতে পান, সেখানে নাবিলা ফুড প্রডাক্টসের আর কোনো অফিস নেই। পরবর্তীতে বাদী খোঁজ খবর নিয়ে বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপর আসামিরা কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে একই কৌশল ব্যবহার করে ডিলারশিপ ও কর্মী নিয়োগের নামে প্রতারণার মাধ্যমে আবারো অর্থ আত্মসাৎ শুরু করে।

এ সম্পর্কে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণার কাজ করে থাকে। প্রতারক চক্রের প্রতিটি সদস্য তাদের পরিচয়ের জন্য ভুয়া নাম ও ভুয়া আইডি কার্ড ব্যবহার করে আসছিল। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং দৈনিক পত্রিকায় তাদের কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেয়, যা দেখতে সত্যিকারের মনে হলেও আসলে এগুলো ভুয়া।

বিজ্ঞাপনে উল্লেখিত নাম্বারে লোকজন ডিলারশিপ ও কর্মী নিয়োগের জন্য তাদের অফিসে গেলে তেল, চিনি, আটা, ময়লা, ডাল, চিনিগুড়া চাল, হলুদ ও মরিচসহ ৩০টির অধিক ভুয়া পণ্য সমৃদ্ধ সু-সজ্জিত অফিস দেখিয়ে বিশ্বাস অর্জন করে। পরবর্তীতে আসামিরা ভুক্তভোগীদের ডিলার নিয়োগের নিয়োগপত্র প্রদান করে ও পণ্যের জামানত হিসেবে মোটা অংকের টাকা নেয়। এভাবে বেশ কয়েকজন ভিকটিমের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পণ্য না দিয়ে সুযোগ মতো তারা তাদের অস্থায়ী অফিস ত্যাগ করে চলে যায় ও যোগাযোগের নম্বরও পরিবর্তন করে ফেলে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল