• মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১

  • || ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

পাট বিক্রি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩  

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের একমাত্র অর্থকরী ফসল পাট। এখানকার কৃষকদের সারা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব এই পাট ঘিরে করতে হয়।
চলতি মৌসুমে সেখানকার কৃষকরা প্রতি মণ পাট আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এতে লোকসান না হলেও লাভ ছিল খুবই কম। একটু বেশি দাম পাওয়ার আশায় নিজ বাড়িতে পাট রেখে দিয়েছিলেন অনেক কৃষক। তবে এখন দাম আরও কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। 

কৃষকরা বলেন, পাটের দাম আগে কিছুটা বেশি ছিলো। এখন পাটের দাম কমে গেছে। এজন্য বিক্রিও করতে পারছি না।

পাটকলগুলোতে বেশি দামে বিক্রির আশায় মৌসুমের শুরুতে পাট কিনে গুদামজাত করেছিলেন বগুড়া ও জয়পুরহাটের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এ বছর বেসরকারি পাটকলগুলোর পাট কেনার আগ্রহ নেই। দুই একটি প্রতিষ্ঠান কিনলেও তেমন একটা দাম পাচ্ছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। 

পাট ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতি মণ পাট ৩ হাজার টাকায় কিনলেও এখন দাম পাওয়া যাচ্ছে না। পাটকলগুলোতে পাটের দাম পাওয়া যাচ্ছে না তাহলে আমরা কীভাবে পাট বিক্রি করবো?

বগুড়া সদর উপজেলার হরিগাড়ী এলাকায় হাসান জুট মিল। স্থাপনের পর দুই বছর উৎপাদিত সুতা এবং পাটের বস্তা দেশেই বিক্রি করেছে। এরপর মিলের উৎপাদিত পণ্য ভারতে রপ্তানি শুরু হয়। প্রতিদিন ৭০ টন পাটজাত পণ্য উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও অর্ডার স্বল্পতার কারণে তা ২৫-৩০ টনে নেমে এসেছে।

হাসান জুট মিলের উৎপাদন ব্যবস্থাপক মতিউর রহমান বলেন, গত বছর ৮০ হাজার মেট্রিক টন পাট ক্রয় করেছিলাম। বাইরের চাহিদা কম থাকায় এবার ৪০ হাজার মেট্রিক টন পাট ক্রয় করেছি।

আরেকটি শাহ সুলতান জুট মিল। এই মিলে শুধুমাত্র পাটের সুতা এবং বস্তা তৈরি হয়। বিদেশি অর্ডার না থাকায় দেশীয় চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় পাটজাত পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। কাঁচা পাটের তুলনায় পাটজাত পণ্যের দাম কম হওয়ায় পাটকলটি এখন লোকসানের মুখে। ৬ টনের জায়গায় উৎপাদন ৩ টনে এসে দাঁড়িয়েছে।

শাহ সুলতান জুট মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন বাজারে প্রতি মণ পাটের দাম ২৬০০ টাকা। এই দামে পাট কেনার পরও আমাার লোকসান হচ্ছে।

২০১০ সালে সরকার পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে প্যাকেজিং আইন করে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাটের চাহিদা কমেছে। 

বগুড়া ও জয়পুরহাট পাট অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক মন্দা কেটে গেলে পাটের চাহিদা আবার বাড়বে। এছাড়া পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিও বাড়বে। 

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে বগুড়া ও জয়পুরহাটে এবার ৪০ হাজার মেট্রিক টন পাট উৎপাদন হয়েছে। আর জেলা দু’টিতে সীমিত আকারে ১৬টি পাটকল চালু রয়েছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল