• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

দিগপাইতে কম্বল বিতরণদল গড়তে অনেক কাঠখড় পোড়াইছি-ফারুক চৌধুরী

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩  

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী সদর আসনে এমপি প্রার্থিতা নিয়ে কারো কারো বিরুদ্ধে বিশৃংখলা সৃষ্টির অভিযোগ তুলে বলেছেন, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী হাফিজুর রহমান স্বপনকে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী তার ওপর উচ্ছৃংখল ভাব প্রকাশ করেছেন। আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল। কারো ব্যক্তিগত দল নয়। এই জায়গায় বহু প্রার্থী আসবে। যার যার প্রচার সে করবে। মনোনয়ন নেত্রী যাকে দিবেন। তখন আমরা সকলেই এক হয়ে তার পক্ষে কাজ করবো। দলের মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী সেই ভাইদের অনুরোধ করতে চাই। সংগঠনে বিশৃংখল কর্মকা- থেকে বিরত থাকুন। ব্যক্তিগত ইন্ধনে। ব্যক্তিগত সার্থে। সংগঠনে বিশৃংখলা সৃষ্টি করবেন না। যদি বিশৃংখলা সৃষ্টি করেন। আপনাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। দল গড়তে আমরা অনেক কাঠখড় পোড়াইছি। কাউকে নষ্ট করতে দিবো না।
গতকাল বুধবার সকালে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নে নিজস্ব অর্থায়নে স্থানীয় শীতার্ত ৪০০ জন দরিদ্র ও অসহায় নারী-পুরুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী এ সব কথা বলেন। একই দিন তিনি সদরের কেন্দুয়া, মেষ্টা ও রানাগাছা ইউনিয়নেও আরো এক হাজার ২০০টি কম্বল বিরতণ করেন।
তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন আমাদের নেত্রী বৃঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সারা বাংলাদেশে স্বাবলম্বী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হতদরিদ্র মানুষদের শীতবস্ত্র দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক আপনাদের মাঝে যেটুক সামর্থ রয়েছে সেইটুক সামর্থ কিছু শীতবস্ত্র নিয়ে আপনাদের মাঝে বিতরণ করতে নিয়ে এসেছি। আপনারা জানেন ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আপনাদের সাথে রাজনীতিকভাবে দু:সময় থেকে শুরু করে সরকারি দলে ১৪ বছর আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আজকে সরকারি দলের সুসময়। দু:সময়ে ১৯ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। বিরোধীদল মোকাবেলায় জেল, জুলুম, হুলিয়া মাথায় নিয়ে সবসময় আওয়ামী রাজনীতিকে উজ্জীবিত রাখার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনাদের সাথে কাজ করেছি। আজকে ৪৭ বছর পরে আমি ব্যক্তিগতভাবে ইচ্ছা পোষণ করছি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই সদর আসনে নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাই।
তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি মনোনয়ন দেন আপনারা সবাই আমার সাথে থাকবেন। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যাতে মনোনয়ন দেন তার জন্য আপনাদের কাছে দোয়া চাইতে এসেছি। আপনারা যদি সকলেই আমার জন্য দোয়া করেন আমি বিশ^াস করি আল্লাহর তরফ থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে রহমত নাজিল হবে। রহমত নাজিল হয়ে তার মনটা কোমল হয়ে হয়তো দিয়েও দিতে পারেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জামালপুর সদর আসনটি আমাদের অত্যন্ত দরকার। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বা যাকেই নৌকা প্রতীক দেন। আমরা সকলেই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবো। সদর আসন কোনো অবস্থাতেই নৌকার বাইরে যেতে দেওয়া হবে না। আপনারা অতীতে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। আগামীতেও নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। আজকে কোন কারণে যদি নৌকা হেরে যায়। আর একটি আসনের কারণে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে না পারলে জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী যদি হতে না পারেন এই দেশটির আবারো সর্বনাশ হয়ে যাবে। চৌদ্দ বছর আগে বাংলাদেশের যে চিত্র ছিল। এ দেশের সাধারণ মানুষ একবেলা খেতে পারতো না। রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎ কিছুই ছিল না। খালি হাহাকার ছিল। আর আওয়ামী লীগ যদি কোন কারণে ২০২৪ সালের নির্বাচনে হেরে যায়। তাহলে শুধু হাহাকার নয়। হত্যা, গুম, নারী ধর্ষণ এগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির চরিত্র আপনারা সবাই জানেন। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হবেন ওয়ারেছ আলী মামুন। তিনি তার বন্ধু আনোয়ার খুনের মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন। অর্থ দিয়ে সেই খুন ধামাচাপা দিয়েছেন তিনি। খুনের মধ্যে দিয়েই এই বিএনপির জন্ম। বিভিন্ন জেলায় এরকম খুনিরাই নেতৃত্বে এসেছে। তাই বিএনপি থেকে সাবধান থাকতে হবে। আলবদর, রাজাকার থেকে সাবধান থাকতে হবে। এই দিগপাইতের মাটি বঙ্গবন্ধুর ঘাঁটি। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। নৌকার ঘাঁটি। এই ঐতিহ্য বজায় রাখতে হবে।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আওয়ামী লীগ ও এর সকল অঙ্গ সংগঠনের ভাইবোনেরা আপনারা আওয়ামী লীগের কর্মী। আপনারা কারো ব্যক্তিগত কারো কর্মী নন। বাহিনী নন। আপনারা আওয়ামী লীগের বাহিনী। ফারুক চৌধুরীর বাহিনী নন, রেজনু মোজাফফরের বাহিনীও নন। আপনারা আওয়ামী লীগের লোক। আওয়ামী লীগের কথা বলেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবে। তার পক্ষেই কাজ করবেন।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচনে সদর আসনে প্রার্থী তো অনেকেই আছে। রেজাউল করিম রেজনু, মারুফা আক্তার পপি, বিজন কুমার চন্দ আছেন। আমি আছি। মোজাফফর সাব আছেন। সবাইকে তো আর দিবেন না নেত্রী। একজনকেই দিবেন। এখনি যে ধাক্কাধাক্তি শুরু করছেন। ধাক্কাইয়া পাড় পাবেন না। ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে আওয়ামী লীগের ক্ষতি হবে। শেখ হাসিনার ক্ষতি হবে। আগামী নির্বাচনের ক্ষতি হবে। বুঝে করেন। আর না বুঝে করেন। আগামী দিনগুলোতে দলের মধ্যে বিশৃংখল কর্মকান্ডের সাথে আর যুক্ত হবেন না। আমরা সকলেই শেখ মুজিবকে ভালোবাসি। আমরা একসাথে সংগঠনের কাজ করবো। যার যার প্রচার সে সে করবে। পাবলিক শুনবে। বিচার বিবেচনার দায়িত্ব জনগণের। আর মনোনয়ন দিবেন শেখ হাসিনা।
আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে দিগপাইত ইউনিয়নের শীতার্ত ৪০০ দরিদ্র ও অসহায় মানুষের হাতে একটি করে কম্বল তুলে দেন। একই দিনে তিনি সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নে ৪০০, মেষ্টা ইউনিয়নে ৪০০ এবং রানাগাছা ইউনিয়নেও ৪০০টি কম্বল বিতরণ করেন। এসব স্থানে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। এসব স্থানে কম্বল বিতরণ কার্যক্রমে তাকে সহযোগিতা করেন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল