• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

১২ শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মূল গ্রিডে যাবে, কর্মব্যস্ত ১০ হাজার মানুষ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০২২  

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মূল গ্রিডে সংযুক্ত হবে ২০২৪ সাল থেকে। তন্মধ্যে একই বছরের জানুয়ারিতে একটি ইউনিটের ৬০০ মেগাওয়াট এবং অপর এক ইউনিটের ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ও বিতরণ শুরু হবে জুলাই মাসে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে দিবা-রাত্রি প্রায় ১০ হাজার ৫০০ লোক নির্মাণকাজে জড়িত রয়েছেন। এই কেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের বিনিয়োগ রয়েছে ছয় হাজার ৪০৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। বাকিটার অর্থায়ন করছে জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) কক্সবাজারের একদল সাংবাদিক ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা পরিদর্শন করতে যান। এ সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কেন্দ্রের সব স্থাপনা ও অবকাঠামো সাংবাদিকদের ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছেন। কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের কাছে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অগ্রগতি ও কেন্দ্রের সার্বিক তথ্য তুলে ধরেন। তাঁরা জানান, সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এই নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)।  

বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি-আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘মাতারবাড়ী ২x৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট’ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের তিন-চতুর্থাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, পরিবেশগতভাবে কোনো ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা ছাড়াই মাতারবাড়ীতে উৎপাদিত এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।  

মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক এ বিষয়ে বলেন, মাতারবাড়ী আলট্রা পাওয়ার প্রকল্পটির ইতিবাচক দিক হচ্ছে, এ প্রকল্পের কারণেই একটি গভীর সমুদ্রবন্দরও সেখানে করা হচ্ছে। যেটিকে মাল্টিপল ব্যবহারের মধ্য দিয়ে গভীর সমুদ্রবন্দর বাণিজ্যিকভাবে রূপান্তর করা হচ্ছে। ভূ-প্রকৃতির পরিবেশে এই বন্দর নির্মিত হচ্ছে-এটাই আমাদের বড় অর্জন।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, এই কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য এক হাজার ৪১৪ একর ও গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য ২০০ একর জমিপ্রত্যাশী সংস্থার জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেবে।  

কেন্দ্রটির তড়িৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান সরকার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানান, বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। আমরা আশা করছি, কেন্দ্রটি আগামী ২০২৪ সালে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাবে। তিনি জানান, এ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজও ইতিমধ্যে শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের কাজও ইতিমধ্যে ৮৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের যান্ত্রিক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দুটি ইউনিটে প্রতিদিন ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা দরকার পড়বে। পরিবেশগতভাবে এতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। তিনি জানান, পরিবেশের দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে কেন্দ্রের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাগরে কোনো ধরনের বর্জ্য যেতে দেওয়া হবে না।

কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য আফ্রিকার মুজাম্বিক, অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে সাগরপথে কয়লা আনা হবে। কয়লার জন্য পরিবেশসম্মত উপায়ে কোল্ডইয়ার্ড স্থাপন করা হয়েছে। বড় ভেসেল থেকে কয়লা নামিয়ে এই কোল্ডইয়ার্ডে রাখা হবে। এ কারণে ঝড়-বৃষ্টিতেও কয়লা ছড়িয়ে পরিবেশগতভাবে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে না।  

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল