• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

স্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি–রঙিন নাকি ফ্যাকাসে?- আব্দুল্লাহ আল মাসুম

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২১  

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের কতজন মাওলানা ছিলেন জানেন?

তারা ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিম, শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও –  অন্যতম মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী,  মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ, মওলানা শামসুল হক, মওলানা এয়াকুব শরীফ প্রমুখ।

 

অথচ আওয়ামী লীগকে বারবারই ‘ধর্ম’ দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

স্বাধীন বাংলাদেশে ইসলামের যে কয়েকটি বড় বিষয়াবলী আছে – সবগুলোই আওয়ামী লীগের অবদান।

তাহলে কেন আওয়ামী লীগ কে ধর্ম দিয়ে মোকাবিলা করে বিরোধী পক্ষ?

 

২১ বছর তো বলে বেরিয়েছে – আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে – মসজিদে উলুধ্বনি বাজবে! আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ টার্ম সহ চতুর্থ টার্ম ক্ষমতায়। তৌহিদা জনতার কাছে প্রশ্ন – দেশের কয়টা মসজিদে উলুধ্বনি শুনেছেন? তাদের আপনি বয়কট করেছেন?  তাদের আপনি ঘৃণা করেন?

 

আবার এসেছে হেফাজত মার্কা – ইসলামি সেবক!

সরকার অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে এবং ভোটের রাজনীতি মাথায় রেখে, জনগণের ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট কে সম্মান করে, বিরাট জনগোষ্ঠীর একটা ধর্মীয় পড়াশোনার লেভেল কে সাধারণ শিক্ষার সর্বোচ্চ সমমানের মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও – সেই লেবাসধারী মওলানা দের – শুকরিয়া বা ধন্যবাদ পায় নি।

এন্টি আওয়ামী শক্তির – এ টিম বিএনপি , বি টিম জামায়াত শিবির , সি টিম – হেফাজত, ডি টিম – নুরু গং

– এসব এখন স্পষ্ট।

ওয়াজের নামে রাজনৈতিক বক্তব্য, সেসব বক্তব্য ইউটিউবে ডলার দিয়ে বুস্টিং করে প্রচার, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য কে চ্যালেঞ্জ, মহানবী সঃ এর মুখ নড়ানোর অভিনয়,  অবৈজ্ঞানিক নানান বক্তব্য, নারী কেলেংকারী, শিশুদের রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার, জ্বালাও পোড়াও ইত্যাদি  —- সব কিছুর মধ্যেই  সরকার উৎখাতের এক বিরাট আয়োজন – সব এসুত্রেই  গাঁথা – জনগণের কাছে আজ এসব স্পষ্ট।

তাহলে বারবারই কেন পবিত্র ইসলাম ধর্মকেই আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে রাজনৈতিক ভাবে কেন ব্যবহার করা হয়? ওরা আসলে কারা?

 

১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রায় শতভাগ আসনে বিজয়ী হয়েছিল যা আমাদের স্বাধীনতার মুল ভিত্তি,আমরা সবাই তা জানি। কিন্তু ঐ নির্বাচনে প্রায় ৪৫-৪৮% ভোট পরেছিল নৌকার বিপক্ষে। ঐ অংশ হতেই – রাজাকারের জন্ম, ঐ অংশ হতেই বিএনপির জন্ম ( যদিও প্রতিষ্ঠাতা একজন সেক্টর কমান্ডার) । ঐ অংশই চামড়া বদলিয়ে – হেফাজত হচ্ছে, নুরু হচ্ছে –

আসলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক আদর্শ এতটাই মজবুত বা বৈজ্ঞানিক বা মানবিক যে, সেই আদর্শ মোকাবিলা করতে ধর্ম ছাড়া আর কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না বা পায় না। এর সাথে কিছু সাধারণ মানুষ – সংযুক্ত হয়ে তাদের রসদ জোগান দিচ্ছে সবসময়।

 

হতাশা বা দুর্ভাগ্য যাই হোক – তা হলো : মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া তৎকালীন বাকী সব রাজনৈতিক দলগুলোও, স্বাতন্ত্র্য রাজনৈতিক ধারায় থাকে নি, কেনা-বেচা হয়েছে।

 

একটি ছবি একটা যথাযথ উদহারন আমাদের জেনারেশনের জন্য।  এই লোক সৌদি আরবের বাংলাদেশ এম্বাসিতে চাকুরী করে – কি পরিমান ভয়াবহ,  ধৃষ্টতা,  ঔদ্ধত্য দেখানোর সাহস পেয়েছে ফেসবুকে – নিশ্চয়ই সকলেই তা ইতোমধ্যে দেখেছেন।

 

এই পশুতুল্য শক্তিই – ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্ট ঘটিয়েছে  এবং স্পষ্ট ঘটানোর নির্দেশও দিয়েছে।

কত্তবড় কলিজা হলে সে এটা পারে? অথচ চেহারায় কি নুরানি ছাপ?

তাহলে কি আওয়ামী লীগের কোন ভুল নাই? আওয়ামী লীগের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবে না? আওয়ামী লীগের কোন সমালোচনা হবে না?

উত্তর – অবশ্যই হবে। সেই শক্তিটাও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হোক। সেই শক্তিটা হোক – মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শত্রুপক্ষের কূটকৌশলে জন্ম না নেওয়া – শক্তি। যে শক্তি রাজনীতি কে ধর্ম দিয়ে মোকাবিলা করবে না, যে শক্তি হত্যা খুণের মাধ্যমে ক্ষমতা চাইবে না ইত্যাদি।

 

তবে এটা সত্য – ২১ বছরে জন্ম নেওয়া একটা রাজনৈতিক দর্শন কে ভুল প্রমাণ করতে, জনগণের কাছে স্পষ্ট করতে ক’বছর লাগবে তা সময় বলে দিবে। কালের স্বাক্ষী – সেই অপশক্তি কে পরাভূত করার আসল কারখানা শিল্প, সাহিত্য, পেশাজীবি, বুদ্ধিজীবী মহল। এই শক্তিই আওয়ামী লীগ কে অসময়ে নতুন প্রজন্মের কাছে টিকিয়ে রেখেছিল। যথাসম্ভব – বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ – সেই সৃজনশীল বাতিঘর কে ভুলে গেছে! সেদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যত্নশীল হোক, দুর্নীতিবাজদের দ্রুত আইনের আওতায় আনুক, আত্মকলহ দুর করুক, ত্যাগী কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করুক – এসবই সচেতন দেশবাসীর প্রত্যাশা।

 

লেখক :

ড. আব্দুল্লাহ আল মাসুম, 

সহযোগী অধ্যাপক,  পিজি হাসপাতাল,

কবি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক

সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক

স্বাচিপ কেন্দ্রীয় পরিষদ  

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল