• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের বলি চকবাজারের কিশোর সিজান

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০১৯  

সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের বলি চকবাজারের কিশোর সিজান

সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের বলি চকবাজারের কিশোর সিজান

রাজধানীর চকবাজারের সিজান ওরফে বক্সার খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মূলত সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে খুন করা হয় সিজানকে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দু’জনকে আটকের পর পিবিআই এ তথ্য জানায়।

জানা গেছে, বংশাল ও চকবাজার এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি সিনিয়র-জুনিয়র গ্রুপে ছিল দ্বন্দ্ব। যার একটি ইমন সমর্থিত এবং অন্যটি সিজান ওরফে বক্সার সমর্থিত। প্রভাব বিস্তারের জেরে দুই গ্রুপের বিরোধ চলছিল দীর্ঘদিন। দেড় মাস আগে এলাকায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সিজানের সঙ্গে ইমনের কথাকাটাকাটি হয়।

এরই জেরে সিজান গ্রুপ ইমন গ্রুপের একজনকে ছুরিকাঘাত করে আহত করে। এরপরই ইমন ও মুন্নাসহ সিজান ওরফে বক্সারকে খুন করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৭ মার্চ রাত সোয়া ১১টায় মোবাইল ফোনে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ইমন-মুন্নাসহ সহযোগীরা পরস্পর ঢামেকের পেছনে সিজানকে চাকু দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সিজান।

ওই ঘটনায় সিজানের বাবা মুকুল মিয়া (৪৮) অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে চকবাজার মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন (১০ মার্চ মামলা নং-১৬)।

চকবাজার থানা পুলিশের পাশাপাশি হত্যা রহস্য উদঘাটনে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) একটি বিশেষ টিমও অভিযানে নামে। গুপ্তচর ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে পিবিআই, ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) এসআই আল-আমিন শেখ ঘটনায় জড়িত মূল আসামি ইমনকে (১৯) কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন লাইট হাউজ প্রধান সড়ক থেকে এবং মুন্না মিয়াকে (১৮) মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বংশাল বাংলাদুয়ার এলাকা থেকে আটক করে।

গ্রেফতার ইমনের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার চাকু ও সিজানের ব্যবহৃত মোবাইলফোন জব্দ করে। জিজ্ঞাসাবাদে ক্লু-লেস সিজান হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তারা।

পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, নিহত সিজান ওরফে বক্সার (১৫) একজন গ্রিল ওয়ার্কশপ কর্মচারী হিসেবে নাজিরা বাজার এলাকায় কাজ করতো।

গত ৭ মার্চ রাত পৌনে ১১টায় সিজান বাসায় আসে। রাত ১১টা ২০ মিনিটে মোবাইলফোনে একটা ফোন কল আসে। তখন কথা বলতে বলতে সিজান বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। সোয়া ১২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি সিজানের পরিবারকে জানায়, সিজান ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি।

পরে সিজানের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে যান। চিকিৎসারত অবস্থায় সিজান পরদিন রাতে মারা যান। পরে পরিবার জানতে পারেন, ১৪ নম্বর বকশিবাজার সড়কে অজ্ঞাতরা সিজানকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে একজন রিক্সাচালক আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সিজানকে হাসপাতালে নেয়।

আটকরা জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইকে জানায়, বংশাল ও চকবাজার থানাধীন সুরিটোলা, চাঁনখারপুল ও মালিটোলা এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি সিনিয়র-জুনিয়র গ্রুপ রয়েছে। যার একটির নেতৃত্ব দিতো ইমন, আরেকটি সিজান ওরফে বক্সার। প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে অনেকদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল দুই গ্রুপে। ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দেড় মাস আগেও কথা কাটাকাটি ও ছুরিকাঘাতে ইমন গ্রুপের একজন আহত হলে ইমন-মুন্না সিজান ওরফে বক্সারকে খুনের পরিকল্পনা করে। আটক ইমন ও মুন্নার বিরুদ্ধে আরও কোনো মামলা রয়েছে কিনা-তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য সহযোগী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল