• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল
সর্বশেষ:
হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যে নির্দেশনাগুলো দিলো স্বাস্থ্য অধিদফতর বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব গঠন: প্রধানমন্ত্রী এক্সারসাইজ টাইগার লাইটনিং (টিএল)-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরে সই হবে ৫ চুক্তি ও সমঝোতা বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের তাগিদ আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছি: শেখ হাসিনা যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব বাঁচত দ্বিতীয় ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন যারা বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান: সালমান এফ রহমান ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম : শেখ হাসিনা

সারাদেশে কৃষিপণ্য পরিবহনে বিশেষ ট্রেন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২০  

সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে কৃষিপণ্য পরিবহনে বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এজন্য ১২৫টি ফ্রিজিং ও ননফ্রিজিং বিশেষ লাগেজ ভ্যান কেনার টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে।

ট্রেনগুলো এসে মিলিত হবে রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে। এতে পরিবহন ব্যয় কমার পাশাপাশি সড়কের উপরও চাপ কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

 

কৃষিপণ্য পরিবহনে বিশেষ ট্রেন চালুর ক্ষেত্রে চারটি প্রধান কৃষিপণ্য উৎপাদক অঞ্চলকে বিবেচনায় রেখে করা হয়েছে পরিকল্পনা। এছাড়া প্রতিটি যাত্রীবাহী ট্রেনেও কৃষিপণ্য পরিবহনে থাকবে বিশেষ বগি।

 

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে আসা কৃষিপণ্যের ৩৫ শতাংশই আসে যশোর থেকে। ৩০ শতাংশ আসে ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে। সাভার ও মুন্সিগঞ্জ অঞ্চল থেকে আসে ৩০ শতাংশ। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী থেকেও কৃষিপণ্য বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল আসে। এর বাইরে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান থেকেও কৃষিপণ্য আসে ঢাকায়। তাই পরবর্তীতে চট্টগ্রাম থেকেও কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য বিশেষ ট্রেন সংযুক্ত হবে রাজধানীর সঙ্গে।

 

পরিকল্পনা অনুযায়ী খুলনা থেকে যশোর হয়ে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর দিয়ে ঢাকায় আসবে একটি ট্রেন। তবে পদ্মা সেতু ও এর রেল সংযোগটি স্থাপিত হলে একটি ট্রেন মাওয়া হয়ে সরাসরি আসবে ঢাকায়। এছাড়া নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও ময়মনসিংহের দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসবে কৃষিপণ্যবাহী আরো দু’টি ট্রেন।

 

ট্রেনগুলোতে শাকসবজি পরিবহনের জন্য সাধারণ ভ্যান থাকলেও দুধ, মাছ, মাংস পরিবহনের জন্য থাকবে ফ্রিজিং ভ্যান। এরইমধ্যে বিশেষায়িত এরকম ১২৫টি লাগেজ ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। লাগেজ ভ্যানগুলোর মধ্যে ৫০ টি ব্রডগেজ ও ৭৫টি মিটার গেজ।

 

রেলওয়ের ‘রোলিং স্টক অপারশেনস ইমপ্রুভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় লাগেজ ভ্যানগুলো কেনা হচ্ছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। 

 

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন নানা ধরনের কৃষিপণ্য রাজধানীতে আসে। সড়ক পথে এসব কাঁচামাল পরিবহনের ব্যয় বেশি হওয়ায় তার প্রভাব পড়ে খুচরা পর্যায়ে। আবার সড়কের উপরও চাপ বাড়ছে। সেইসঙ্গে সড়ক পথে পণ্য পরিবহনের সময় যানজটের কারণে অনেক পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। এতে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় রেলওয়ে দীর্ঘদিন থেকে চেষ্টা  করে যাচ্ছিল কৃষিপণ্য পরিবহনে রেলের ব্যবহার শুরু করতে। কারণ রেলে কৃষিপণ্য পরিবহন ব্যয় সড়ক পথের তুলনায় কম। এছাড়া কম সময়ে পণ্য পৌঁছে যাবে রাজধানীতে।  

 

জানা যায়, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে পণ্য পরিবহনের অন্যতম বাহন ছিল রেল। সেসময় পাট, তেলবীজ, ডাল, মসলা, চিনি, আখ, লবণসহ বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য পরিবহন করা হতো রেলে। 

 

তবে কালের পরিক্রমায় বিভিন্ন কারণে রেলওয়েতে পণ্য পরিবহনে অনাগ্রহী হয়ে উঠেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে রেলের পশিমাঞ্চল থেকে শাকসবজি কিংবা মাছ রেলে পরিবহনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ওইসব রুটে চলাচলকারী ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের তৈরি ট্রেনের কোচগুলো পানি পড়লে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সেগুলোতে কাঁচামাল পরিবহন করা হয় না। আবার রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী ট্রেনগুলোতে লাগেজ ভ্যানযুক্ত করার বিষয়ে কারিগরি প্রতিবন্ধকতাও আছে। 

 

রাজশাহী ছাড়াও দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ঢাকায় কৃষিপণ্য পরিবহনেও রয়েছে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা। ঢাকায় ট্রেন এসে থামে কমলাপুরে। সেখান থেকে কাওরানবাজার পর্যন্ত পণ্য আনতে পুনরায় যুক্ত হয় পরিবহন খরচ। সেই সঙ্গে পণ্য লোড-আনলোডে সময় ক্ষেপনসহ নানা কারণে কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সরাসরি তেজগাঁও পর্যন্ত কৃষিপণ্যবাহী ট্রেন আসলে এসব প্রতিবন্ধকতা সহজেই দূর হবে। ট্রেনে পণ্য পরিবহনেও উৎসাহিত হবেন ব্যবসায়ীরা। 

 

এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে রেল কর্তৃপক্ষ কৃষিপণ্য পরিবহনে লাগেজ ভ্যান যুক্ত করাসহ ওইসব ট্রেন তেজগাঁও পর্যন্ত সংযুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। 

 

রেলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মিয়া জাহান বলেন, কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য বিশেষায়িত ১২৫টি ওয়াগন ক্রয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন ওয়ার্ক অর্ডার দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে। এজন্য দেড় বছর সময় লাগবে। ১২৫টি ওয়াগনের মধ্যে ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ। এসব ওয়াগনের মধ্যে ৫০টি থাকবে ফ্রিজিং ভ্যান। সবকিছু সম্পন্ন হলে আগামী বছরের শেষ দিকে কিংবা ২০২২ সালের প্রথম দিকে চালু হবে বিশেষায়িত এসব ট্রেন। তবে কৃষিপণ্য পরিবহনে কতগুলো ট্রেন চলাচল করবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেননি তিনি। 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল